Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক সংস্কার না হওয়ায় বাড়ছে দুর্ভোগ

| প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 মো. আশরাফুল আলম, বাকৃবি থেকে : ভাঙা-ইট আর খসে যাওয়া পিচের অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকা পুরো সড়কটিই খানাখন্দে ভরা। কিছু জায়গা ভালো থাকলেও ভাঙার কারণে সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না যানবাহন। কোথাও চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। ভাঙা-চোড়া ও কর্দমাক্ত সড়কে চলতে প্রতিনিয়ত অন্তহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারী। সারাবছর ভোগান্তি সইলেও সামান্য বৃষ্টিতে তাদের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। বৃষ্টি হলেই জমে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। মাত্র ৫ মিনিটের এ রাস্তা পার হতে পথচারীদের নাভিশ্বাস ওঠে। প্রায় দেড় কিলোমিটারের এই রাস্তাটি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) জব্বারের মোড় থেকে শেষ মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত যা পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীর যাতায়াতেই ব্যবহৃত হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময়ই ২ ভাগে ভাগ হয়ে যায় প্রধান সড়কটি। এ সড়কটি ব্যবহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকাবাসীসহ আশরাফুল হক হল, শহীদ নাজমুল আহসান হল, শহীদ শামসুল হক হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, ফজলুল হক হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীবৃন্দ, কৃষি জাদুঘর, মৎস্য জাদুঘর, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
ঢুকতেই ডানপাশে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যাওয়ার দুপাশের রাস্তার অবস্থাও শোচনীয়। ওদিকে জব্বারের মোড় থেকে পশ্চিমে কৃষি জাদুঘর, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে যাওয়ার রাস্তার অবস্থাও ভয়াবহ। এ সড়কগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী, এলাকার মানুষজনের পদচারণা। কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় এ সড়ক সংস্কারে কর্তৃপক্ষের কোনোই মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় পথচারী রহমত মিয়ার সঙ্গে। তিনি এ সড়কটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। তিনি জানান, রাস্তার বেহাল দশার কারণে শহর থেকে যানবাহন আসতে চায় না। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে চাইলেও আসে না বলে অভিযোগ করেন। সড়কের পাশের দোকানি সেলিম বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে সড়কের বেহাল অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে রাস্তার ভাঙ্গাচোড়া পানির নিচে থাকে, ফলে যানবাহন চালক কিংবা পথচারীরা সেগুলো দেখতে পান না। সে সময়ই অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটে অহরহ। বর্ষাকাল আসার আগেই এ সড়কটি সংস্কার করা উচিত। সড়কের এমন দুর্দশা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এ রাস্তা ব্যবহার করে প্রতিদিন আবাসিক হলে যাই। বর্ষাকাল না থাকলেও এ রাস্তায় পানি জমে থাকে। চলাচলের সময় যানবহনের চাকার ছিটকে আসা ময়লা পানিতে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।
সড়ক ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সড়কটির বেহাল দশার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার অভ্যন্তরে বেড়ে গেছে যানবাহনের চলাচল। বেশিরভাগ যানবাহন এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার মধ্যদিয়ে চলাচল করছে। ফলে একদিকে যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে তেমনি বাড়ছে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ। সারাদিন চলে যাহবাহনের হর্ণ, শব্দ ও চলাফেরা যা স্বাভাবিক পরিবেশকে ব্যাহত করছে বলে জানায় ভ‚ক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে মটর চালিত যানবাহন চলাচল করছে। অতীতেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যার পরে যানবাহনের লাইট না জ্বালানো, ওভারটেকিং, দ্রæতগতির কারণেই মূলত দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। ভাঙা সড়কটি মেরামত করে অবিলম্বে আবাসিক এলাকার ভেতরের রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্তঃনির্মাণ ও সংরক্ষণ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন বেশ কিছু রাস্তার বেহাল দশার কথা জেনেছি, রাস্তা নিয়ে অহরহ অভিযোগ আসছে আমাদের কাছে। কিন্তু রাস্তা ঠিক করার জন্য আর্থিক বরাদ্দ না থাকার কারণে এগুলো ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ