বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গোদাগাড়ী (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহী গোদাগাড়ীর বেনীপুরে জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন সান ডেভিল’ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ।
আজ শুক্রবার দুপুরে পৌনে একটার দিকে তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে এ ঘোষণা দেন। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে নিহত পাঁচ জঙ্গির লাশ আস্তানার পাশের কেটে নেওয়া ধানের জমি থেকে তুলে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ২৯ ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে লাশগুলো পড়ে ছিল। এ কারণে এই লাশগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছিল। লাশ নিয়ে যাওয়ার আগেই আস্তানার পাশের একটি ধানে খেতে অভিযানের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ। তার ব্রিফ শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার সকালের ওই অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হয়- বাড়ির মালিক সাজ্জাদ হোসেন (৫০), তার স্ত্রী বেলী বেগম (৪৫), তাদের ছেলে আল-আমিন (২০), মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭) ও আশরাফুল ইসলাম (২৩)। আশরাফুল ইসলাম ছাড়া বাকি সবাই একই পরিবারের সদস্য। আশরাফুলের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের চর চাকলা গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হক। পুলিশ জানিয়েছে, আশরাফুল ইসলাম একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার বলে জানা গেছে। সে একজন বড় ধরনের জঙ্গি বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের ব্রিফকালে অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ জানান, বাড়ি থেকে ১১টি বোমা, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। বোমাগুলো মাটির নিচে পুঁতে বিস্ফোরিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বাড়ি থেকে পুলিশের পোশাকের কাপড়, সুইসাইডাল ভেস্টের বেল্ট, গানপাউডার, বোমার সুইচ ও কিছু জিহাদি বইসহ নানা ধরনের আলামত জব্দ করা হয়েছে।
নিশারুল আরিফ আরও বলেন, আশরাফুল বড় মাপের জঙ্গি। আর বাড়ির মালিক সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী মাঝারি মাপের। সাজ্জাদের ছেলে আল-আমিন ওরফে হামজা ও মেয়ে কারিমার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা কতদূর তা জানতে অনুসন্ধান চলছে। সাজ্জাদের আরেক ছেলে সোয়েবকেও সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে ধরা হচ্ছে। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
বাড়ি থেকে আত্মসমর্পণ করা সাজ্জাদের মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে জানিয়ে নিশারুল আরিফ বলেন, প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছে, বাড়ির পাশের ফাঁকা মাঠে জঙ্গিদের নানা প্রশিক্ষণ চলতো। তাই নিহত একই পরিবারের চারজনের কারোরই লাশ নিতে চান না তার স্বজনরা। এ জন্য এরই মধ্যে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হবে। তবে জঙ্গি আশরাফুলের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে লাশ ও আলামত সংগ্রহ করার পর আস্তানাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারাও ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে। বাড়িটির আশপাশে এখনও সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে প্রত্যাহার করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। সুমাইয়ার স্বামী জহরুল ইসলামকে প্রায় ৬ মাস আগেই জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার বাড়ির ভেতরে অভিযান চালানো হয়নি। অপেক্ষা করা হচ্ছিল ডিএমপির বোমা বিশেষজ্ঞ দলের জন্য। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা আসতে দেরি করায় ওই রাতে অভিযান স্থগিত করা হয়। এ অভিযানে পুলিশ ছাড়া অন্য কোনো বাহিনী যোগ দেয়নি।
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় ‘অপারেশন সান ডেভিল’। এ অপারেশনের মধ্যে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথমবারের মতো একতলা টিনের ওই বাড়িটিতে ঢোকে। অভিযান চলে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।