Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবি

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : তামাক পণ্যে শুল্ক কাঠামো অত্যন্ত জটিল। মূল্যের শতাংশের হারে আদায় করা হয়, যা জটিলতা তৈরি করে এবং কর ফাঁকির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এজন্য তামাক পণ্যে আগামী বাজেটে প্যাকেট বা কৌটা প্রতি সুনির্দিষ্ট কর আরোপরে দাবি জানিয়েছে তামাক বিরোধী কয়েকটি সংগঠন।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রজ্ঞা ও এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) যৌথ উদ্যোগে তামাক বিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. রুমানা হক। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় প্রফেসর বিগ্রেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান, ভাইজাল স্ট্র্যাটেজিসের বাংলাদেশ কান্ট্রি এডভাইজার শফিকুল ইসলাম, সিটিএফকের গ্রান্টস ম্যানেজার ডা. মাহফুজুল হক ভূঁঞা বক্তব্য রাখেন। লিখিত বক্তব্যে ড. রুমানা হক বলেন, কার্যকরভাবে কর আরোপের মাধ্যমে তামাকের দাম বাড়ালে তামাক ব্যবহার সন্তোষজনক হারে হ্রাস পাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, করারোপের ফলে তামাকের প্রকৃত মূল্য ১০ শতাংশ বাড়লে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে তামাকের ব্যবহার ৫ শতাংশ হ্রাস পায়। আগামী বাজেটে ১০ শলাকার প্যাকেট সিগারেটের ক্ষেত্রে স্পেসিফিক করারোপের প্রস্তাব করে তিনি বলেন, নি¤œস্তরের সিগারেটে ২৫.৯৫ টাকা, উচ্চস্তরের সিগারেটে ৪৯.৬০ টাকা ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটে ৮২ টাকা করারোপ করা যেতে পারে। নি¤œস্তরের সিগারেটের বর্তমান খুচরা মূল্য ২৩ টাকার স্থলে কমপক্ষে ৪০ টাকা, উচ্চস্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য ৭০ টাকা ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য কমপক্ষে ১২০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। এর ফলে প্রতিবছর সিগারেট থেকে সরকার ৫২০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে।
২৫ শলাকা বিড়ির ক্ষেত্রে ফিল্টারযুক্ত ও ফিল্টারবিহীন এ বিভাজন বাতিল করে প্রতি ২৫ শলাকা বিড়ির উপর ১০.১৩ টাকা সুনির্দিষ্ট করারোপ করে বিড়ির খুচরা মূল্য ১০.৬১ টাকার স্থলে ২২.৩০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। এর ফলে বিড়ি থেকে সরকার প্রতিবছর ১ হাজার ৩০ কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে।
ধোঁয়াবিহীন তামাকের (গুল, জর্দা) ক্ষেত্রে প্রতি ২০ গ্রাম ওজনের ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যে ১৬ টাকা স্পেফিসিক করারোপ করে এসআরও এর মাধ্যমে এর খুচরা মূল্য কমপক্ষে ৩২ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি ২০ গ্রাম ধোঁয়াবিহীন তামাকের কৌটা বা প্যাকেট থেকে সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে। একই সাথে সকল তামাক পণ্যের খুচরা মূল্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রাখারও প্রস্তাব করেন তিনি।
বিগ্রেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, হৃদরোগসহ সকল রোগের মূল কারণ তামাক। ৪০ বছরের নিচে যেসব রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত তা ধূমপানের কারণে। সুস্থ জাতি পেতে হলে তামাকের ব্যবহার কমাতে হবে। তামাকজনিত ক্ষতি বিবেচনায় তামাকে কর বাড়ানো উচিত।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, তামাক পণ্যে মূলস্তর প্রথা তুলে দেওয়া উচিৎ। মূল্যস্তর প্রথায় কোম্পানিগুলো রাজস্ব ফাঁকি দেয়। তামাকে কর বাড়াতে হবে ব্যক্তির আয়ের চেয়ে বেশি হারে। বাজেটে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে বিকল্প চাষে পুঁজি, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ রাখা ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। ১ শতাংশ স্বাস্থ্য সারচার্জ তহবিলে ৬০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে। কিন্তুবিধিমালা না থাকায় এ টাকা খরচ করা যাচ্ছে না। দ্রæত বিধিমালা করা হলে এ টাকা কাজে লাগবে। মো. আমিনুর রহমান বলেন, রাজস্ব হারানো ও রাজস্ব ফাঁকির ভয়ে এনবিআর তামাকের কর কাঠামোয় পরিবর্তন করে না। ধোঁয়াবিহীন তামাক সনাক্ত ও কর আদায়ে এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক দূর্বলতা রয়েছে। এনবিআরের টোব্যাকো সেলকে কার্যকর করতে হবে। একই সাথে নতুন ভ্যাট আইনের ৫৮ ধারা অনুযায়ী, স্পেসিফিক করারোপ করলে রাজস্ব ক্ষতি হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ