Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্কে তীরবর্তী মানুষের কাটে নির্ঘুম রাত

সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙন অব্যাহত

| প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত গতিতে চলছে। কত দিন চলবে কবে রোধ হবে তা বলা যাবে না। ভাঙগছে, ভাঙবে, ভাঙগ চলবেই। এক কথায় বলা যায় যমুনা নদীর ভাঙগন যেন চিরাচারিত প্রথায় পরিণত হযেছে। ফলে ভাঙগন কবলিত মানুষের দুঃখের শেষ নেই, ভোগান্তির শেষ নেই। ভাঙ্গন এলাকায় সবর্ত্র চলছে আতংক। এ আতংক আর দুগতির শেষ কোথায় তা কেউ বলতে পারে না। তাই যমুনা পারের মানুষেরা নিরঘুম রাত কাটাচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষা মৌসমের শুরুতেই শুরু হয় যমুনা নদীর ভাঙ্গন। জেলার চৌহালী উপজেলা,কাজিপুর উপজেলা ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় চলছে নদী ভাঙ্গনের মাতন। মুহুরর্তের মধ্যে যমুনা গর্ভে চলে যাচ্ছে বাড়ি ঘর, দোকানপাট,জমি জিরাত,হাট বাজার ও বিভিন্ন স্থাপনা। ইতিমধ্যে অনেকেই ভিটামাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে নিদারুন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। অনহারে অধহারে কাটছে তাদের জীবন। এ রিপোট লেখা পযর্ন্ত ভাঙ্গন এলাকায় কোন প্রকার সাহায্য পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, গত ২রা মে প্রায় ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধিন সিরাজগঞ্জ চৌহালী উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধের ৭৫ মিটার এলাকা ধ্বসে পরে। নিরমান কাজে অনিয়ম ও দুনিতীর কারণে ৭নং প্যাকেজে খগেন ঘাট সংলগ্ন দক্ষিনে জিও ব্যাগ ও সিসিব্লক নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমের আগেই বাধে ধ্বস নামে যমুনা তীরবত্তী মানুষের মধ্যে নতুন করে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। এ উপজেলার এনায়েত পুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ কোটি টাকার স্থাপনা হুমকির মুখে পড়ছে। রযেছে আরো তাঁত সমৃদ্ধ বিখ্যাত হাট বাজার,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ হাজারও স্থাপনা। এঘটনা শেষ হতে না হতেই গত ৩মে সিরাজঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের বাহুকা টুটুল মোড় এলাকায় প্রায় ২৪ঘন্টায় ১৫০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ যমুনা নদীর পেটে চলে গেছে। ফলে ভাঙ্গনের ভাটি এলাকা থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘর দ্রত সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেই সাথে লাল নিসান উড়িয়ে অনত্র সড়ে যাবার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকার বেশ কিছু সংখক ঘর বাড়ি জমি জিরাত দোকান পাট নদী গর্ভে চলে গেছে। অনেকে অধহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় তাদের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য কোন রাজনৈতিক দল তাদের সাথে সাক্ষাত কিংবা কোন প্রকার সাহায্য দেয়া হয়নি বলে তারা ক্ষোভের সাথে জানান । তারা আরো জানায়, গত ১সপ্তাহ ধরে ছোট খাটো ভাঙ্গন মোকাবেলা করতে পারলে এত বড় মারাতœক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হতো না। তাদের অভিযোগ ,পানি উন্নয়ন বোর্ড এই ভাঙগন এলাকায় সার্ভে না করার কারনে তাদের গাফিলাতিতেই এরূপ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো বন্যা মৌসমের আগে এ ভাঙ্গন স্থলে বেড়ি বাধ দেয়া না হলে সিরাজগঞ্জ জেলা শহরে পানি প্রবেশ করে তা ব-দীপে পরিণত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। অপর দিকে জেলার কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ার পাড়ায় তীব্ররো ভাঙ্গন অব্যহাত রয়েছে। রতনকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খোকন বলেন, শুস্কো মৌসমের শুরুতেই ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা নিলে এমন জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে ভাওকা এেলাকার কৃষক ময়দান, আলী, শুভগাছার আব্দুল মজিদ, শাহার বানু, আব্দুল কাদের, মহিব উদ্দিন, তোতা মিয়াসহ প্রায় ১৫-২০জন ক্ষতি গ্রস্থ মানুষের সাথে কথা বলে যানাযায়, সদর উপজেলা বাহুকা থেকে কাজিপুর উপজেলার ক্ষুদবান্দি পর্যন্ত পাউবোর নদী সংরক্ষন বাদের টুটুল মোড় পর্যন্ত পক্ষকাল ব্যাপি ভাঙ্গন শুরু হলে তা রোধে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে চর বাহুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পুরো গ্রামকি এখন নদীর মধ্যে চলে গেছে। এছাড়া চুরমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মসজিদসহ হুমকির মুখে পড়েছে বাহুকা, শুভসাছাসহ আশেপাশের গ্রামগুলো। নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেলে যে কোন সময় শিমলা, -ক্ষুদবান্দি বাধটি ভেঙ্গে যেতে পারে। এতে তিনটি ইউপির অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রতনকান্দি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম যানান ভাঙ্গনে শত শত পরিবার রিক্ত,নিঃশ্ব, সর্বশান্ত হয়ে পড়লেও কেউতাদের খোজ খবর নিচ্ছেনা। পাওবো শুধূ পরিদর্শন করেই তাদের কাজ সমাপ্ত করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলি রনজিত সরকার তাদের সকল ব্যার্থতা ও অভিযোগ উপক্ষো করে বলেন, আসামের পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানির চাপ বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিনি আরো জানান, বাহুকা থেকে ক্ষুদবান্দি ও কাজিপুর মেধাই এলাকা মিলে ৭ কিলোমিটার নদী তৃীর রক্ষা বাধের একটি প্রকল্প ইতি মধ্যে প্রি-একনেটে অনুমোটিত হয়েছে। একনেটে প্রকল্পটি অনুমদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ৬৮৮ কোটি টাকায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদী ভাঙ্গথেকে রক্ষা পাবে এলাকাবাসী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ