পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল ইসলাম : মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রধান গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় হাজার হাজার প্রবাসী কর্মী চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় সময় বেলা দু’টা পর্যন্ত হাই কমিশনের বিল্ডিংয়ের মালিক পক্ষ প্রবাসী কর্মীদের প্রবেশ পথের মূল গেইটে তালা লাগিয়ে রাখে। এতে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ডিষ্ট্রিক্ট থেকে আগাত হাজার হাজার প্রবাসী কর্মীর হাই কমিশনের প্রবেশ করতে না পেরে প্রচন্ড রৌদ্রের মাঝে রাস্তার উপর চরম ভোগান্তির শিকার হন।
অনেকেই তৈরি পাসপোর্ট না নিয়েই খালি হাতে বিভিন্ন ডিষ্ট্রিক্টে ফিরে যায়। এর দায়-দায়িত্ব কে নিবে ? একাধিক প্রবাসী এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ হাই কমিশনের একটি সূত্র এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। প্রবাসী কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং দেশের ভাবমর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে কুয়ালালামপুরস্থ কূটনৈতিক জোনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের কার্যালয় সরিয়ে নেয়অ জরুরী হয়ে পড়েছে। মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটি’র একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
সকালে হাই কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান গেইটে তালা ঝুলানোর বিষয়টি হাই কমিশনারকে অবহিত করেন। প্রবাসী কর্মীরা নতুন পাসপোর্ট নিতে এবং পাসপোর্টের কাগজপত্র জমা দিতে হাই কমিশনের সামনে জড়ো হলে গেইট বন্ধ দেখে হতবাক হন। বিল্ডিংয়ের চায়নীজ মালিকের অনুরোধে মালয় পুলিশ হাই কমিশনের সামনে অবস্থান নেয়। হাই কমিশন কর্তৃপক্ষ বিল্ডিংয়ের মালিক পক্ষের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা বৈঠক করেও আগাত প্রবাসী কর্মীদের সেবা কার্যক্রম চালু করতে পারেনি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুপুর ১২টার পর হাই কমিশনের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ও লেবার কাউন্সেলর সায়েদুর রহমানের গাড়ী চালককে দু’টি ঝুড়ি দিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দেয়া হয় কর্মীদের পাসপোর্টের কাগজপত্র ও শ্লিপ জমা নিতে । চরম হতাশাগ্রস্ত প্রবাসী কর্মীরা রাস্তার উপ রহাই কমিশনের ঝুড়িতেই তাদের কাগজপত্র জমা দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। অবশেষে বিল্ডিংয়ের মালিক সমঝোতার ভিত্তিতে বেলা দু’টার দিকে হাই কমিশনের গেইট খুলে দেয়। এসময়ে অপেক্ষমান প্রবাসী কর্মীরা পাসপোর্ট নিতে ভেতরে যান।
গত জানুয়ারী মাসে হাই কমিশনার শহিদুল ইসলাম তার সিরাজগঞ্জ জেলার নিকট আতœীয় পরিচয়দানকারী এবং মালয়েশিয়ার প্রস্তাবিত আওয়ামী লীগের একাংশের এক ভূইফোঁড় নেতার মাধ্যমে চড়া দামে কুয়ালালামপুরস্থ জালান পাহাং রোডস্থ বাণিজ্যি ও আবাসিক এলাকায় হাই কমিশনের বিল্ডিং ভাড়া নেন। হাই কমিশন ভাড়া নিতেও কেউ কেউ কমিশন নিয়ে ভাগাভাগি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আমপাং কূটনৈতিক এলাকা ছেড়ে কার স্বার্থে বানিজ্যিক এলাকায় একটি হোটেলের ভেতর দিয়ে হাই কমিশনে সেবা নিতে প্রবাসী কর্মীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে তা’বোধগম্য নয়। হাই কমিশনের একই ফ্লোরে কথিত নেতার ভাতের হোটেলে দু’থেকে তিন গুন বেশি দিয়ে খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছে প্রবাসী কর্মীরা। ফটো স্ট্যাটসহ অন্যান্য দোকানগুলোও চড়া দামে সার্ভিস দিচ্ছে প্রবাসীদের । কুয়ালালামপুর থেকে একাধিক সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। হাই কমিশন কর্তৃপক্ষ বিল্ডিংয়ের মালিক পক্ষের সাথে শর্ত ভঙ্গ করা এবং প্রতিদিন এতো প্রবাসী কর্মী হাই কমিশনে আসবে কেন ? এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ীর মালিক পক্ষ গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বাড়ীর মালিক পক্ষ গেইটে একটি নোটিশও সাটিয়ে দেয়। হাই কমিশনে আআগত হাজার হাজার প্রবাসী কর্মী এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে তা’ প্রতিকার করার জন্য বিল্ডিংয়ের মালিক হাই কমিশনার শহিদুল ইসলামকে একাধিক লিখিত নোটিশ দিয়েছে বলে জানা গেছে। হাই কমিশন কর্র্তপক্ষ এসব নোটিশের কোনো সঠিক উত্তর দেয়নি। এ ব্যাপারে গতকাল হাই কমিশনের লেবার কাউন্সেলর সায়েদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মালয়েশিয়ার পেনাং ও জহুরবারু থেকে হাই কমিশনে পাসপোর্ট নিতে আগত যথাক্রমে কুমিল্লার জালাল ও দাউদকান্দিও দ্বীন ইসলাম টেলিফোনে ইনকিলাবকে বলেন, কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই হাই কমিশনের গেইট তালা দেয়া হবে তা’ মেনে নেয়া যায় না। এতে দূরদুরন্ত এলাকা থেকে আগত প্রবাসী কর্মীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ক্লাংনামা থেকে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট দেয়ার কথা থাকলেও হাই কমিশন তা’দিতে পারেনি। হাই কমিশনের গেইট তালা লাগিয়ে দেয়ায় আমরা রাস্তার উপর চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েছি। শাহ আলম থেকে মুন্সিগঞ্জের আলমগির ও ক্লাং থেকে আগত নুরু বলেন, এমন একটি বাণিজ্যিক এলাকায় বাংলাদেশী হাই কমিশনের অফিস নেয়া হয়েছে তা’দেখে বিদেশীরা ঘৃণার চোখে দেখছে। তারা বলেন, হাই কমিশনের দালাল চক্রের উপদ্রব বেড়ে গেছে। বিল্ডিংয়ের মালিকের সাথে দ্ব›েদ্বর কারণে প্রবাসীরা আজ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তারা লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীর স্বার্থে অবিলম্বে কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশী হাই কমিশন সরিয়ে নেয়ার জোর দাবী জানান। পেনাং থেকে আব্দুল নকীব ও প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মোমেনও হাই কমিশনের গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হন। হাই কমিশনের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, বিল্ডিংয়ের মালিক পক্ষ গেইটে তালা দেয়ায় কয়েক ঘন্টা কর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এসময়ে ঝুড়ির মাধ্যমে কর্মীদের শ্লিপ ও কাগজপত্র জমা নেয়া হয়েছে। পরে উভয় পক্ষের আলোচনার পর গেইট খুলে দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।