Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস

| প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

থ্যালাসেমিয়া নিয়ে দেশে বছরে সাড়ে সাত হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে
বিয়ের আগে বর ও কনের রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
স্টাফ রিপোর্টার : আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘থ্যালাসেমিয়া থেকে চাইলে রক্ষা, বিয়ের আগে করুণ রক্ত পরীক্ষা’। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব থ্যালাসেমিয়ার তথ্য মতে, দেশের ১০ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করছে। এর মধ্যে চার শতাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বেঁচে থাকার জন্য এদের নিয়মিত রক্ত নিতে হচ্ছে। দেশে বছরে সাড়ে সাত হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম গ্রহণ করছে। সে হিসেবে দিনে ২০ জনের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে পৃথিবীতে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশে প্রতি বছর এক হাজার ৪০ জন শিশু বেটা থ্যালাসেমিয়া মেজর এবং ছয় হাজার ৪৪৩ জন শিশু বেটা থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। বর্তমানে এ দেশে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি শিশু এ রোগে ভুগছে। অপরদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন। বাংলাদেশে প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। বিশ্বে প্রতি বছর এক লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে এক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা থ্যালাসিমিয়া রোগ প্রতিরোধে বিয়ের আগে বর ও কনেকে রক্ত পরীক্ষা করে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে নেয়া প্রয়োজন। কারণ স্বামী-স্ত্রী দু’জনই যদি থ্যালাসিমিয়ার বাহক হন, শুধু তখনই তাদের সন্তানদের এই রোগ হতে পারে। এক্ষেত্রে সন্তানদের থ্যালাসিমিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ। তবে যদি দু’জনের একজন আক্রান্ত এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে সন্তান থ্যালাসিমিয়া রোগে আক্রান্ত হবে না।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান, পিএসসির সচিব বেগম আকতারী মমতাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে থ্যালাসিমিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এতে আক্রান্ত রোগীদের শরীরের লোহিত রক্তকণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না এবং দ্রæত ভেঙে যায়। ফলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। সাধারণত জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে শিশুদের মারাত্মক থ্যালাসিমিয়া রোগ ধরা পড়ে।
বক্তারা আরও বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতি মাসে ১ থেকে ২ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। ক্রমাগত রক্ত গ্রহণের ফলে তাদের শরীরে ক্ষতিকর আয়রণ জমা হয়। যা যকৃত, হƒদপিন্ড এবং অগ্নাশয়ের ক্ষতি সাধন করে। তাই এসব রোগীদের আয়রণ নিষ্কাশক ওষুধ খেতে হয়। এসব ওষুধ অত্যান্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকের পক্ষে পর্যাপ্ত চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় না। এ সময় জানানো হয়, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় বয়সভেদে প্রতিমাসে ৬ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১৬ হাজার ৮০০টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব থ্যালাসেমিয়া আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। একই সঙ্গে দুপুর ১২টায় উত্তরা কার্যালয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ এবং দুপুর আড়াইটায় মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ