Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমার কারাগারে ৬৩ মাঝিমাল্লার মানবেতর জীবন

| প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার অফিস : ৬ মাস আগে ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে নিখোঁজ ৩টি ফিশিং বোটের ৭৪ জন মাঝিমাল্লা এখনো মিয়ানমারের কারাগারে মানবেতর বন্দী জীবন যাপন করছে। তাদের স্বজনরা অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার তদবীর করে কোন কিনারা করতে পারছে না বলে জানা গেছে। জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত লেখালেখির পরেও মিয়ানমার কারাগারে বন্দী মাঝিমাল্লাদের এখনো ফিরিয়ে আনতে না পারায় স্বজনরা তাদের দ্রæত মুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬ নভেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে সাগরে মাছ ধরা অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় নাডার কবলে পড়ে ৭৪ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে কক্সবাজারের তিনটি ফিশিং বোট নিখোঁজ হয়ে যায়। এসময় এফবি সাজ্জাদ ২৯ জন, এফবি রেশমী ২৬ জন ও এফবি হাসান ১৯ জন মাঝিমাল্লাসহ মোট ৭৪ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ব্যাপারে এফবি সাজ্জাদে থাকা নিখোঁজ ওসমান গনি মিন্টুর পিতা ছালেহ আহমদ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ইং এক খানা আবেদনে ওই তিন ফিশিং বোটের নিখোঁজ মাঝিমাল্লাদের খোঁজে বের করার আবেদন জানান। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে জানাযায় ৭৪ জন মাঝিমাল্লাসহ ঝড়ের কবলে পড়ে ওই তিনটি ফিশিং বোট মিায়ানমার পানি সীমায় ঢুকে পড়ে। এতে করে মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের বোটগুলো আটক করে এবং মাঝিমাল্লাদের কারাগারে বন্দী করে রাখে। এদিকে লেখালেখির মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি অবগত হয়ে মিয়ানমার কারাগারে বন্দী মাঝিমাল্লারা বাংলাদেশী নাগরিক কিনা তা যাচাই বাছাই করে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন দেয়। এর মধ্যে ওই তিনটি ফিশিং বোটের ৬৩ জন মাঝিমাল্লা বাংলাদেশী নাগরিক এবং তারা কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মাতারবাড়ী, শহরের কুতুবদিয়া পাড়া, মহেশখালী, মগনামা, বদরখালী ও চকরিয়া এলাকার বসবাসকারী বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ২০ মার্চ ২০১৭ ইং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ার সহকারী সচিব মুহাম্মদ আব্দুর রউফ মিয়া (স্বাক্ষরিত) মিয়ানমার হতে কারাবন্দী বাংলাদেশী নাগরিক ফেরত আনা প্রসঙ্গে এক পত্র ইস্যু করেন। ওই পত্রে তিনি পররাষ্ট্র সচিব দক্ষিণ এশিয়া-১, বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত ইয়াংগুন মিয়ানমার, মহা পরিচালক বিজিবি ঢাকা, মহা পরিচালক বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং পুলিশ সুপার কক্সবাজার ও চট্টগ্রামকে মিয়ানমার কারাগারে বন্দী ৬৩ জন বাংলাদেশী মাঝিমাল্লকে দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ জানান। কিন্তু এখনো এব্যাপারে কোন কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে না দেখে মিয়ানমারে কারাবন্দী মাঝিমাল্লদের স্বজনদের মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে। এদিকে মিয়ানমারে কারাবন্দী ৬৩ জনের পরিবারে অর্থকষ্টে দিন কাটলেও বোট মালিকরা তাদের কোন খোঁজ খবর নেয়া, সহযোগিতা করা, তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা তো দূরের কথা উল্টো তাদের স্বজনদের হুমকী ধমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কক্সবাজার সফরকালে মিয়ানমারে কারাবন্দী মাঝিমাল্লাদের স্বজনরা মিয়ানমার কারাগার থেকে তাদের দ্রæত মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ