রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : কুড়িগ্রাম রেজিষ্ট্রি অফিসের যোগসাজসে জাল দলিলের মাধ্যমে উলিপুর উপজেলায় এক পরিবারের ১৩০ শতক জমি দখলের অপচেষ্টা চলছে। পৈত্রিক সুত্রে জমির মালিক হবার পরও প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা বারবার কেটে নিয়ে যাচ্ছে ফসল। একাধিক শালিস বৈঠক, মামলার পরও প্রশাসন নিশ্চিত করতে পারেনি পরিবারটির উপর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জানা যায়, উপজেলার গোড়াই মৌজায় পৈত্রিক সুত্রে ১ একর ৩০ শতক জমির মালিক রায়হান কবির, বকুল সরকার, আনোয়ার হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন। একই জমির মালিকানা দাবি করে আসছিল পাশর্^বর্তী এলাকার আব্দুল মোন্নাফ, নুর জামাল গংরা। এনিয়ে শালিস বৈঠকে দলিলপত্র আনতে বলা হলে কয়েক দফা সময় নিয়েও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তারা। ফলে রায়হান কবির তাদের লোকজন নিয়ে জমিতে কোন কিছু চাষ করলে ফসল তোলার সময় আব্দুল মোন্নাফ, নুর জামাল গংরা ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে জোড়পূর্বক ফসল কেটে নিয়ে যায় এবং হয়রাণির জন্য পরিবারটির নামে করে একাধিক মামলা। প্রশাসনের কাছে রায়হান কবিরের পরিবারটি নিরাপত্তার আর্জি জানালেও তা নিশ্চিত হয়নি। ফলে জমিতে এবার বাম্পার বোরো ধানের ক্ষেত দেখে আব্দুল মোন্নাফ, নুর জামাল গং প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে ধান পেকে গেলে তারা ফসল কেটে নিয়ে যাবে। এনিয়ে আতংক আর শংকার মধ্যে দিন কাটছে অসহায় পরিবারটির। জমির মালিকানা নিয়ে যে বিরোধ তা নিয়ে জজ আদালতে মামলা চললেও প্রতিপক্ষের আস্থা নেই তাতে। তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে শান্তি ভঙ্গ করে জমি দখলে নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় আব্দুল মোন্নাফ, নুর জামাল এর দলিল জাল। এক উপজেলার জমি অন্য উপজেলায় রেজিস্ট্রি দেখানো হয়েছে। নুর জামালের জন্মের ২ বছর আগে দেখানো হয়েছে তার নামে জমি রেজিস্ট্রি। রেজিস্ট্রি অফিস থেকে যোগসাজসিকভাবে যে দলিল সৃজন করা হয়েছে প্রকৃত পক্ষে তার কোন অস্তিত্ব নেই। এনিয়ে মামলা পাল্টা মামলা, সালিশ করেও কোন সুরাহা হয়নি। এরপরও প্রতিপক্ষ রায়হান কবির ও বকুল সরকার সরকারি চাকুরি করায় তাদের হেনেস্তা করতে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ করে হয়রাণি করে আসছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এ পরিবারটি হামলা, মামলা ও হয়রাণির কারণে নিঃস্ব হওয়ার পথে। এ ব্যাপারে দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম (সাঈদ) স্বীকার করেন, সালিশ করে সমাধান দিলেও পরবর্তীতে নুর জামাল পক্ষ তা মানেনি। ফলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বর্তমান দূর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবেদ আলী বিএনপি’র নেতা হওয়ায় প্রতিপক্ষরা তার আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে নানা অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে। অভিযোগে জানা যায়, আব্দুল মোন্নাফ ও নুর জামাল বিএনপি’র রাজনীতির সাথে সক্রিয়। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করার নামে দূর্গাপুর ইউনিয়নে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয় তাদের নেতৃত্বে। গাড়ি পোড়া, পুলিশের উপর হামলা চালানোর মত ঘটনা ঘটায় তারা। এ সংক্রান্ত মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী। এজাহার ভুক্ত আসামী হিসাবে নুর জামাল দীর্ঘদিন হাজতবাস করে জামিনে মুক্তি পান। জামিনে মুক্ত হয়ে তার অপতৎপরতা আবারো শুরু হয়। প্রকাশ্যেই হুমকী দিচ্ছে ধান পাঁকলেই কেটে নিয়ে যাবে এবং বাড়ি ঘর পুড়ে দিয়ে গ্রাম ছাড়া করবে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, আব্দুল মোন্নাফ ও নুর জামাল জাল দলিল ও জালিয়াতীর মাধ্যমে জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে এখন হামলা মামলা এবং ভাড়াটে মাস্তানদের সাহায্যে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার অপতৎপরতা শুরু করেছে। এর আগেও দ’দফা ধান কেটে নেয়। ফলে ঐ জমিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সহকারী জজ আদালত উলিপুরে একটি মামলা আনয়ন করেন গত ২০১৫ সালে। সন্তোষজনক কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এখন পর্যন্ত আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেনি। অভিযুক্ত নুর জামাল জন্মের আগে জমি রেজিষ্ট্রি সংক্রান্ত প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারলেও তিনি বলেন, নজির হোসেন নিলাম সুত্রে জমির মালিক। কিন্তু আমরা ক্রয় সুত্রে ওই জমির মালিক। আমাদের জমির দলিল হারিয়ে গেছে। আমরা রেজিষ্ট্রি অফিসে সার্চিংয়ের পর ভলিউম থেকে জাবেদা তুলেছি। জমি থেকে ফসল কেটে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের জমির ফসল আমরা কেটে আনবো। কিন্তু তিনি জাবেদা ছাড়া জমির মালিকানা সংক্রান্ত কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি যোগদানের আগে এই অভিযোগ দেয়া আছে। উপজেলা পরিষদ ও ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট আরো যারা আছেন তাদের নিয়ে আমি দু-একদিরে মধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাধানের একটা উদ্যোগ নেব। সদর সাব রেজিষ্ট্রার রফিকুল ইসলাম রেজিষ্ট্রি অফিসে রায়হান কবিরকে আটকের বিষয়ে বলেন, আমি সত্য ঘটনা অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছি। সত্য ঘটনাটি সামনে আসুক। তবে আটকের ঘটনাটি রায়হান কবির নিজেই সাজিয়েছেন বলে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, রায়হান কবিরগং ও নুর জামালগং রিলেটিভ। নুর জামালদের নামে ১৯৬৬সালে বিরোধ জমিটি দলিল হয়। পরবর্তিতে নুর জামাল ও ভাই-বোনদের ভাগবাটোয়রা করার সময় দলিলটি পায়নি। এতে করে রায়হান কবিররা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে জেলা রেজিষ্টার আনোয়ার হোসেন জানান, উক্ত বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়। তদন্ত দলের রিপোর্ট ইতোমধ্যে আমার কাছে চলে এসেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্টটি পাঠিয়ে দেয়া হবে। ভলিউম হারিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজে নিজে কেউ যদি অপরাধী হয় তাহলে তো কিছু করার নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।