Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধান কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সিংড়ার কৃষক

| প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আনোয়ার হোসেন আলীরাজ, সিংড়া (নাটোর) থেকে : উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়ায় আধাপাকা ধানসহ প্রায় সাড়ে তিনশ’হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়। ধান-ভুট্্রা সবজিসহ সার্বিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১৫শ’ হেক্টর জমির ফসল। গত দিন দিনের রোদে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ফলে ধান কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সিংড়া উপজেলা প্রশাসন ক্ষতি নিরুপনসহ আগাম দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় ঠিক করতে গত বুধবার জরুরী বৈঠক করেছেন সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র ও উপজেলার ১২ ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উপজেলা কৃষি অফিসের হিসেবনুযায়ী এ বছর সিংড়া বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৬ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে ৩৭হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭শ’ হেক্টর জমিতে বেশী আবাদ হয়েছে। কাল বৈশাখী ঝড় ও অনাকাংক্ষিত ভারি বর্ষন এবং আগাম বন্যার আশংকায় চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আধাপাকা বোরো ধান কেটে নিচ্ছেন। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার আশংকা রয়েছে। কৃষি বিভাগের দাবী হঠাৎ করে ভারি বর্ষনে সিংড়া উপজেলার ৬০ হেক্টর জমির পাকা ধান সম্পূর্ণ ও ৩শ’হেক্টর জমির ধান আংশিক নিমজ্জিত হয়। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আতংকিত হয়ে অনেকেই এসব জমির আধা-পাকা ধান কেটেছে। কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, হঠাৎ ভারি বর্ষনে আত্রাই ও বারনই নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে চলনবিলের ডাহিয়া, কলম, চৌগ্রাম ও শেরকোল ইউনিয়নের জোরমল্লিকা, তেলিগ্রাম, পৌর এলাকার নেঙ্গুইন, পাটকৈল, ডাহিয়া বেড়াবাড়ি,সরিষাবাড়ি ও চৌগ্রাম বিলের কয়েকশ হেক্টর বোরো ধানের জমি প্লাবিত হয়। এসব জমির আধাপাকা ধান পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সহ জনপ্রতিনিধিরা নদীর পানি প্রবেশ রোধে পাটকৈল ও তেলীগ্রামে অস্থায়ী বাঁধ তৈরী করে দিয়েছেন। বিলের পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। উপজেলা ক্ষিদ্রবড়িয়া গ্রামের কৃষক রাজু আহমেদ জানান, পূনরায় তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে আধাপাকা ধান কেটে বাড়িতে আনা হচ্ছে। উপজেলার কালিনগর গ্রামের লতিফ মাহমুদ জানান,আগাম বর্ষনে তার এবং ভাইয়ের ১৯বিঘা জমির ধান তলিয়ে যায়। গত দিন দিনের রোদে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকটে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। তিনি বলেন, চলনবিলে অন্তত ২০ বছরেও এমন বর্ষনে ফসল ডোবার ঘটনা ঘটেনি। শেরকোল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাফর হোসেন জানান, বাঁধগুলো ভাল থাকলে এমন ক্ষতি হত না। তিনি অবিলম্বে বাঁধগুলো সংস্কারের দাবী জানান। উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় ৩৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ভাড়ি বর্ষনে ধান-ভুট্্রা সবজিসহ প্রায় ১৫শ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, ভারি বর্ষনে ডাহিয়া, চৌগ্রাম, ছাতারদিঘী, শেরকোল ইউনিয়ন ও সিংড়া পৌর এলাকায় ৩৬০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক,জানান, আবহাওয়া ভাল হওয়ার কারনে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। নদীর বাঁধগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এমনটি ঘটেছে। তবে এবার বাঁধগুলো সংস্কারের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল আহসান জানান, ধান-ভুট্্রা সবজিসহ সার্বিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ১৫শ হেক্টর জমি। কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ৩৬০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ এসব কৃষকদের সরকারীভাবে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ