Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যান চলাচল বন্ধের আশঙ্কা

ঝুঁকিপূর্ণ শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক

| প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ হাবিবুর রহমান হাবীব,শরীয়তপুর থেকে : সংস্কারের অভাবে যে কোন সময় শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চট্রগ্রাম ও মংলা বন্দরে সাথে সহজ যাতায়াতের জন্য ২০০০ সালে শরীয়তপুর-চাঁদপুরের সীমানায় মেঘনা নদীর উপর ফেরী সার্ভিস দিয়ে মংলা-শরীয়তপুর-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম এ আঞ্চলিক মহাসড়কটি চালু করা হয়। তৎকালিন সময়ে ফেরীর উদ্বোধন করেন তখনকার ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২০১৫/২০১৬ অর্থ বছরে চীন সরকারের সহায়তায় এ পথের মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদের উপর সেতু চালু হয়েছে। তবে শরীয়তপুরের আঙ্গারিয়া বাজার থেকে নরসিংহপুর ফেরীঘাট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়কটি নানান সমস্যায় বিপদশংকুল হয়ে পরেছে। শরীয়তপুর-চাঁদপুরে মেঘনা নদীর ফেরী সার্ভিসে রয়েছে নানান অনিয়ম ও ফলে এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ আর আতংকের মাঝে থাকতে হয়। এক লেন বিশিষ্ট মহাসড়কটি ১৮ ফুট চওড়া হওয়ার কথা থাকলেও শরীয়তপুর অংশে সড়ক রয়েছে ১২ থেকে ১৫ ফুট চওড়া। এ পথের মাদারীপুর সড়ক হতে শরীয়তপুরের নরসিংহপুর পর্যন্ত ৩৫ কিমি সড়কের প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়কই খনা খন্দেকে ভরা ও ভাঙ্গা। কারণে এ সড়কের উপর দিয়ে পন্যবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের চলাচল কমে গেছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্র জানায়, মংলা-চট্রগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কটি শরীয়তপুর হয়ে চাঁদপুর মেঘনা নদীর ফেরী ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩৯ কিলোমিটার। স্থানীয় এ সড়কটি কে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীত করে ২০০০ সালে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এ সড়ক দিয়ে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার (বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা) পণ্য ও যাত্রী বাহী যানবাহন সিলেট, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, ফেনী, ল²ীপুর, কুমিল­ায় যাতায়াত করে। এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কম খরচে পণ্য পরিবহন করতে পারায় অল্প কিছুদিনের মধ্যে এ সড়কটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এ সড়কটি চালু হওয়ার পর মেঘনা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে ২টি করে ফেরী চলাচল করতো। বর্তমানে মেঘনা নদীতে ২টি চলাচল করছে। ফলে পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন গুলো দীর্ঘ সময় ফেরী ঘাটে অপেক্ষা করে থাকে। শুকনো মৌশুমে মেঘনা নদীদে চর পড়ায় ফেরী গুলোকে অতিরিক্ত ৯ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হয়। সড়কটিতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর থেকে ভেদরঘঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর পর্যন্ত৩৯ কিলো মিটার সড়কের ৩৩ কিলোমিটারই খানাখন্দে ভরা ও ভাংগা। বুড়ির হাট থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগি। ভারী যানবাহন সহ সেতু ভেঙ্গে পড়ে প্রায়ই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভেদরগঞ্জ উপজেলার গাজীপুর ও বালারবাজার এলাকার ২টি বেইলী সেতু কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষনা করেছে। শরীয়তপুর অংশে সড়কটি ১২ থেকে ১৫ ফুট চওড়া। সরু এ সড়ক দিয়ে দুটি গাড়ী সাইড নিতে অসুবিধা হয়, যার ফলে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে। ট্রাক ও বাস ভাংগা সড়কে ফেসে গিয়ে মাঝে মাঝে সারাদিনও চালক সহ যাত্রীদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টির কারনে সম্পূর্ন ভাবে সড়কটি ব্যপক ক্ষতি হলেও তা মেরামত করার কোন উদ্যোগ না নিয়ে ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করায় সড়কে চলাচলে ঝুকি পুর্ন হয়ে পরেছে। খুলনার হিমায়িত মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল খায়ের বলেন, এ সড়কটি চালু হওয়ার পর ৫ বছর ভাল ছিল। ফেরী সংকটের কারণে আমরা এ পথে পণ্য পরিবহন করি না। ঢাকা হয়ে চট্রগ্রাম যেতে আমাদের অতিরিক্ত ১শ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। সড়কটির সমস্যা দুর করতে পারলে অল্প সময়ে কম খরচে পণ্য সামগ্রী ভোক্তার হাতে পৌছে দেওয়া যেতে পারে। মাদারীপুরের ফতেহপুর টেকেরহাট বাজারের যাত্রী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য শতাব্দী পরিবহনে উঠেছি। সড়কের যা অবস্থা ঝাকিতে সারা শরীর ব্যাথা হয়ে যায়। এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেই দূভোর্গে পড়তে হয়। কমফোর্ট পরিবহনের চালক ফজলুল করিম বলেন, এ পথে যাতায়াতে যাত্রীদের চরম দূভোর্গে পড়তে হয়। সড়কটিতে প্রথম দিকে অনেক যানবাহন চলাচল করতো। ভাঙাচুড়া সড়ক, ঝুকিপূর্ণ সেতু ও ফেরী সংকটের কারণে অনেক গাড়ী এ পথে আসে না। ট্রাক চালক মফিজুর রহমান বলেন, এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে ট্রাকে বেশী মালামাল লোড করতে পারি না। ঝুকিপূর্ণ সেতু দুলতে থাকে। যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই সব ভারী যানবাহন ঢাকা হয়ে অতিরিক্ত পথ ঘুরে চট্রগ্রাম অঞ্চলে যাতায়াত করে। এ সড়কটির চলাচলের উপযোগী করে দিতে পারলে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের উপকার হবে। শরীয়তপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী , দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাথে চট্রগ্রাম অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের সহজ পথ এটি। এ পথের সড়ক সংস্কার ও সেতু মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ করা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ