Inqilab Logo

সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঝিনাইদহে এবার নিখোঁজ শিবির নেতার গুলিবিদ্ধ লাশ: পরিবারের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহে নিখোঁজের এক মাস ছয় দিন পর জামায়াত কর্মী ও মাদরাসা শিক্ষক আবু হুরাইয়ার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহ পর এবার নিখোঁজ শিবির নেতা হাফেজ জসিম উদ্দিনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তবে, নিহত জসিমের পরিবারের অভিযোগ গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ জসিমকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমরা আর জসিমের কোনো খোঁজ পাইনি। প্রশাসনের সহযোগিতায় জসিমকে হত্যা করা হয়েছে।
আর শিবিরের পক্ষ থেকেও বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ শিবির নেতা জসিমকে আটকের পর অস্বীকার করছে।
শুক্রবার সকালে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হিঙ্গেরপাড়া গ্রামের মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহতর ভাই সাইফুর রহমান হরিণাকুন্ডু থানায় গিয়ে লাশটি তার ভাইয়ের বলে শনাক্ত করেন।
নিহত জসিম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না সাংগঠনিক থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও কালুহাটি গ্রামের খলিল মণ্ডলের ছেলে। তিনি ঝিনাইদহ আলীয়া কামিল মাদ্রাসার ফাজেল প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
নিহতর ভাই সাইফুর রহমান জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিলেট থেকে বাসযোগে বাড়ি ফেরার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থেকে জসিমকে নামিয়ে নেয়। সেই থেকে জসিম নিখোঁজ ছিল। আজ শুক্রবার সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলার হিঙ্গেরপাড়া মোস্তবাপুর গ্রামের মাঠে মুখ ও পিঠমোড়া করে হাত বাধা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় জসিমের।
সাইফুর রহমান অভিযোগ করেন, তার ভাইকে প্রশাসনের সহায়তায় পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাতাব উদ্দীন জানান, শুক্রবার সকালে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে অজ্ঞাত এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। তাকে চোখ ও পেছনে হাত বেধে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল ১০টার দিকে লাশ উদ্ধার করে হরিণাকুন্ডু থানায় নিয়ে আসে।তিনি আরো জানান, সাড়ে ১০টার দিকে নিহতর ভাই সাইফুর রহমান লাশটি তার ভাইয়ের বলে শনাক্ত করেন। কে বা কারা জসিমকে হত্যা করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে ওসি জানান।
এদিকে জসিমের বাবা কালুহাটী গ্রামের খলিল মন্ডল জানান, গত ১১ জানুয়ারি জসিম উদ্দীন সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি গোয়ালন্দ ঘাট পার হয়ে জসিম তাকে জানান, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকের লোকজন তাদের বাসটি চেক করবে বলে থামিয়েছে। এরপর থেকেই জসিমের মোবাইল বন্ধ ছিল। জসিমের সন্ধান না পেয়ে পরিবারটিতে শোকের ছায়া আসে।
জমিসের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ আগেই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জসিম নামে কাউকে পুলিশ আটক করেনি। উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদরের কালুহাটী গ্রামের বেলেখাল বাজারে ধর্মান্তরিত সমির নামে এক বয়োবৃদ্ধ হোমিও চিকিৎসক খুন হন। এ ঘটনার পর থেকে গান্না ইউনিয়নের অশ্বস্থলী ও কালুহাটীসহ বিভিন্ন গ্রামে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকের লোকজনের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। এর আগে চন্ডিপুর গ্রামের মোবারক হোসেন মোহন ও কালুহাটী গ্রামের বছির নামে দুই ব্যক্তিকে সাদা পোশাকের লোক ধরে নিয়ে আসে। বেশ কয়েক দিন নিখোঁজ থাকার পর তাদেরকে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। এরপর আবু হুরাইরা ও হাফেজ জসিম উদ্দীন দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর তাদের লাশ পাওয়া গেল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ