রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার সাব্বির আহমেদ সরফরাজের (৩৩) ঝুলন্ত লাশ আরএমপির অফিসার্স মেসের কক্ষে পাওয়া গেছে। তিনি নগরীর রাজপাড়া থানা জোনে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামে। তার বাবা মো: ওবায়দুল্লাহ আরএমপির কমিশনার ছিলেন। সরফরাজ নগরীর উপশহরের একটি বাসায় স্ত্রী ও তিন বছরের এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। ৩১তম বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সরফরাজ। আরএমপির মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে আরএমপির একটি অফিসার্স মেস আছে।  সেখানে একটি কক্ষে মাঝে মাঝে গিয়ে বিশ্রাম নিতেন পুলিশ কর্মকর্তা সরফরাজ। শনিবার সকালে ওই কক্ষেই তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। জানালার গ্রিলের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সরফরাজের লাশ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার রাতে তিনি অফিসার্স মেসে গিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে নিহত সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহমেদ সরফরাজের মা ও বাবাসহ পরিবারের সদস্য এবং স্বজনরা বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর লাশ জানালার গ্রিল  থেকে নামানো এবং  লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।  যে কক্ষে লাশটি ছিল সেটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসি সরফরাজ আরএমপির রাজপাড়া থানা জোনের সহকারী কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। শুক্রবার রাত ৩টা পর্যন্তও তিনি অভিযানে ছিলেন। পরে ‘বিশ্রাম’ নিতে যান ওই অফিসার্স মেসে। এরপরই সকালে তার লাশ পাওয়া যায়।
সরফরাজের মা ফাতেমা বেগম রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) সাবেক মহাব্যবস্থাপক ছিলেন। ছোট ভাই মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লাশ পাওয়া গেলেও পরিবারের অনুরোধে তারা না আসা পর্যন্ত লাশ নামানো হয়নি। বিকেলে বিমানযোগে পরিবারের স্বজনরা রাজশাহী আসেন। এরপর তারা অফিসার্স মেসে গেলে নিহত সরফরাজের লাশ নামানো হয়।
অফিসার্স মেসের ভেতরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা তদন্ত করেন। সেখানে আরএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও আছেন। ভেতরে স্বজনদের ঢুকতে দেয়া হলেও গণমাধ্যমকর্মীদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। পিবিআই কর্মকর্তা  তৌহিদুল আরিফ বলেন, ‘আত্মহত্যার মতোই মনে হচ্ছে।’
এর আগে দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক এনামুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনিও বের হয়ে জানান, এসি সরফরাজ আত্মহত্যা করেছেন বলে তার কাছেও মনে হয়েছে। আরএমপির মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলমও একই কথা বলেছেন। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।