বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ইনকিলাব ডেস্ক : চার দফা দাবীতে ম্যাটস শিক্ষার্থীরা গতকাল বাগেরহাট, রাজশাহী ও বগুড়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে।
পুলিশের লাঠিচার্জে অর্ধশতাধিক আহত
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটে ডিপ্লোমা মেডিকেল (ম্যাটস্) শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে সড়ক অবরোধ করেছে। অবরোধকালে পুলিশের লাঠিচার্জে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের। বুধবার সকাল ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের (বিডিএমএসএ) ব্যানারে প্রায় চারশ’ শিক্ষার্থী বাগেরহাট মেডিকেল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ম্যাটস্) থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। চার দফা দাবিতে তারা মিছিল নিয়ে বেলা পৌনে ১১টার দিকে শহরের দড়াটানা সেতুর কাছে বাগেরহাট-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে এসময় প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে ওই সড়কে। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দিতে লাঠিচার্জ করলে অর্ধশতাধিক ম্যাটস্ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে পুলিশ ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আহত দুই শিক্ষার্থীকে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠানো হয়েছে। এরা হলেন, বাগেরহাট ম্যাটসের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তারা হলেন, আক্তার ও প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হুসাইন মাহমুদ। বাকিদের বাগেরহাট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের ব্যানারে (বিডিএমএসএ) সভাপতি গোলাম রব্বানী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী ম্যাটস্ শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা, মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড নামে স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করা, ইন্টার্ণশিপ ভাতা প্রদানসহ চারদফা বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা সকালে ম্যাটস্ থেকে চার শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাগেরহাট-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করি। সেখানে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। পরে পুলিশ সেখানে এসে আমাদের সরানোর চেষ্টা করে। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকতে চাইলে পুলিশ আমাদের উপর চড়াও হয়ে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আমাদের অন্তত ৮০ জন শিক্ষার্থী কমবেশি আহত হয়েছেন। বাগেরহাট সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মশিউর রহমান বলেন, দুপুর ৩টা পর্যন্ত ম্যাটসের ৬৮ জন ছাত্র-ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের কয়েক জনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নগরীতে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট’স এসোসিয়েশন রাজশাহী জেলা ম্যাটস্ শিক্ষার্থীদের সংগঠন চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা নগরীর জিরোপয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকে। এক পর্যায়ে কিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী বেশকিছু অটোরিকশা এবং রাজশাহী কলেজের বাসে ভাংচুর চালায়। এতে বাসের ভাঙা কাঁচের আঘাতে দুইজন আহত হয়। এছাড়া গরমে আরও তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখার সাধারণ সম্পাদক কৌশিক জামাল জুয়েল জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নগরীর জিরোপয়েন্টে জড়ো হন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। সেখানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় রাজশাহী কলেজের একটি বাস তাদের বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্যে চলে আসলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করে।
এসময় গাড়ির কাঁচের আঘাতে শাকিল ও শুভ নামের দুইজন আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে গরমে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পুলিশের হাতে আটক ৯
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় আন্দোলনরত ম্যাটস্ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ও যানবাহন ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (বিডিএমএসএ) ব্যানারে ৪ দফা দাবীতে সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের সাতমাথা থেকে আন্দোলনকারীরা শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকায় মিছিল করে যায়। সেখানে সকাল ১০ টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে। পুলিশের বাধার মুখে আন্দোলনকারীরা তিন মাথার কাছে স্টেশন রোড অবরোধ করে রাখে। প্রায় ৪৫ মিনিট অবরোধের সময় রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নির্বৃত্ত করতে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে আসার সময় আন্দোলনকারীরা রাস্তায় গাড়ী ভাংচুর শুরু করে। আন্দোলনকারীদের হামলায় নওগাঁগামী বিআরটিসি বাস, বাংলা লিংকের একটি পিকআপ, করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যানসহ ককেয়কটি সিএনজি ও মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে ও ৯ ছাত্রকে আটক করে। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয় ৩০ জন ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।