Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছোট যমুনায় বয়লারের ছাই ফেলে নদী ভরাট

| প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পরিবেশ দূষণ, চোখ হারাচ্ছে অনেকে, দেখার কেউ নেই

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : নওগাঁ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ছোট যমুনা নদী। এই নদীর তীরবর্তী মানুষরা নদীর পানি দিয়ে গোসল, কাপড়-চোপড়সহ নানাবিধ কাজ করে থাকে। নদীর পূর্ব ধারে অসংখ্য চাল উৎপাদনের অটো বয়লার বা চাতাল গড়ে উঠায় এই বয়লারের বর্জ্য পানি আর ছাই এই নদীতে ফেলায় পানি দূষিত হচ্ছে। ফলে নদীর দেশীয় মাছসহ জলবৈচিত্র্যের প্রাণীরা মারা যাচ্ছে। বেশী বেশী ছাই ফেলার ফলে নদীর তলদেশ থেকে পানি উঠতে পারে না। ফলে নদীগুলোও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নদীর পানি কমে গেলে বয়লারের বর্জ্য পানি আর ছাই ফেলায় নদীর পানি দূষণের ফলে নদীতে গোসল, কাপড়-চোপড় ধোঁয়াসহ কোন কাজ কোন করা যায় না। এই পানিতে গোসল করলে খোসপাচরা, চুলকানিসহ নানাবিধ চর্মরোগ হয়। জেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অফিস না থাকায় বয়লার মালিকরা কিছুই মানে না। জেলা প্রশাসন এই বয়লারের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও তা বন্ধ করতে পারেনি। নদীর দুই ধারের জনগণের দাবি, অবিলম্বে নদী দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের।
অটোমেটিক চাল কল মালিকরা ক্ষমতাধর আর টাকাওয়ালা হওয়ায় কোন রকমে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আনলেও সে অনুযায়ী বয়লারের কাজ করে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী কোন চাল কলের সে ছাই এবং বর্জ্য পানি চাতালের পাশে ডোবায় ফেলতে হবে। যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়। অথচ নওগাঁর শতকরা ৯৯ ভাগ চাতাল মালিক যত্রতত্র যেখানে সেখানে বর্জ্য ও ছাই ফেলে দেয়। কোন কিছুই তোয়াক্কা করে না। আর নদীর ধারের চাতাল মালিকরা বর্জ্য পানি আর ছাই নদীতে ফেলে দেয়। নদী তীরবর্তী মানুষের ক্ষতি হলেও তারা কোন কিছুই মনে করে না। এছাড়াও নওগাঁ থেকে পতœীতলা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই ধারে অসংখ্য বয়লার আছে। বয়লারের ছাই তারা মহাসড়কের দুই ধারে ফেলে রাখে। ফলে এই সড়ক দিয়ে দ্রæত যানবাহন গেলে তার বাতাসে ছাই উড়ে গিয়ে চোখে পড়ে কয়েক বছরে শতাধিক পথচারীর চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জেলা চাল কল মালিক গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার জানান, জেলায় প্রায় দুই সহস্রাধিক চালকল রয়েছে। এদের মধ্যে ১ হাজার ৪০০ চালকল তাদের সমিতির তালিকাভুক্ত। তিনি চালকল মালিকদের যত্রতত্র ছাই ফেলার কথা স্বীকার করে বলেন আমারা সমিতির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট স্থানে ছাই ফেলার জন্য তালিকাভুক্ত মালিকদের বললেও তারা কোনই কর্ণপাত করেন না ।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মোঃ আমিনুর রহমান নদীর পানিসহ পরিবেশ দূষণ, ছাই দিয়ে নদী ভরাট, তলদেশ বন্ধসহ এই পরিবেশ দূষণের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এই পরিবেশ দূষণকারী বয়লার মালিকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট জরিমানা করেছে। সেটা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া নদীর দুই ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। অবিলম্বে ছাই ফেলে নদীর পানি দূষণ, নদী ভরাটসহ দূষণকারী বয়লার মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ নদী ভরাটের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানিয়েছেন, নদীর দুুই ধারের হাজার হাজার জনগণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ