Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জামিন আবেদনের প্রস্তুতি কুসিক মেয়র সাক্কুর

| প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : আগামী সপ্তাহের সোম বা মঙ্গলবার আদালতে জামিন আবেদন করতে পারেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) সদ্য নির্বাচিত মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। দুদকের একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর মেয়র সাক্কু বর্তমানে আত্মগোপনে থেকেই জামিন নেয়ার ব্যাপারে তার আইনজীবীসহ ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। মামলা সংশ্লিষ্ট তার আইনজীবীদের গ্রিন সিগন্যাল পেলেই তিনি জামিনের জন্য আদালতে যাবেন। আগামী সোম বা মঙ্গলবারের মধ্যে আদালতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপনের প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। মেয়র সাক্কুর খুব কাছের জনদের কাছ থেকে মিলেছে এসব তথ্য। অন্যদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানার কাগজ আদালত থেকে ডাকযোগে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় আসার পর পুলিশ খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে মেয়র সাক্কু কুমিল্লায় নেই।
গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দশদিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন কুমিল্লা সিটির জনপ্রিয় মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে নিজ দল বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নাগরিক সমাজের প্রার্থী হয়ে জাঁদরেল ও বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানকে অন্তত ত্রিশ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দেন নগরবাসীকে। পাঁচ বছর পর দলীয় প্রতীকে সিটির দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেই আফজল কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে প্রায় ১১ হাজার ভোটে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হোন সাক্কু। দলের বাইরেও সাক্কুর ব্যক্তি ইমেজের পরিধি অনেক বড় সেটা এটা নির্বাচনেও প্রমাণ হয়েছে। দলমতের ঊর্ধ্বে সাক্কুর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সবার কাছে। গত ১৮ এপ্রিল প্রায় দশ বছর আগের দুদকের দায়ের করা একটি মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত মেয়র সাক্কুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও মালামাল জব্দের নির্দেশ দেন।
এদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানার কাগজ আদালত থেকে ডিএমপির গুলশান থানা ও কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানায় পৌঁছার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন সাক্কুর ঢাকা ও কুমিল্লার বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তিনি বাসায় থাকেন না। কুমিল্লা কোতয়ালী থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া জানিয়েছেন, মেয়র সাক্কু কুমিল্লায় নেই এ ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত। তবে মেয়র সাক্কুর নানুয়াদিঘী পাড়ের বাড়ির দিকে পুলিশের নজরদারি রয়েছে। অন্যদিকে মেয়র সাক্কুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, তিনি জামিন নেয়ার আগ পর্যন্ত গ্রেফতার এড়াতে নিজেকে আড়ালে রেখেছেন। তার ব্যবহৃত দুটি সেলফোনই আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল ঢাকা সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে মেয়র সাক্কুর জামিন আবেদন করার কথা ছিল, কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি ও কাগজপত্র পরিপূর্ণভাবে না গোছানোর কারণে তিনি আদালতে হাজির হননি। ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন মেয়র সাক্কু আগামী সোম বা মঙ্গলবার জামিন নেয়ার ব্যাপারে আদালতে আবেদন করতে পারেন। মেয়র সাক্কুর আইনজীবীদের একটি সূত্র জানায়, উচ্চ আদালত থেকে ২০১২ সালের দিকে মনিরুল হক সাক্কু ও তার স্ত্রী আফরোজা জেসমিনকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিনের আদেশ দেয়া হয়েছিল। জামিন আদেশের কপি আদালতে জমা পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। জামিননামা জমা দেয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও ভুলটা কোথায় হয়েছে এটাই বুঝা যাচ্ছে না। সাক্কুর আইজীবী সূত্র জানিয়েছে, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার আগ পর্যন্ত জামিনে থাকার সকল কাগজপত্রসহ আনুষঙ্গিক সব নথি উপস্থাপন করে আগামী সোম বা মঙ্গলবারের দিকে মেয়র সাক্কুর জামিনের আবেদন করা হতে পারে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর নাম, ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীকে শপথ নেয়ার বিধান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে শপথ নিতে না পারলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এ সময়সীমাও বাড়ানো যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি করপোরেশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ