পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক : রাজধানীর গুলশানে ক‚টনৈতিক জুনের বিভিন্ন দূতাবাসের অবৈধ দখলে থাকা সরকারি জমিন, রাস্তা ও ফুটপাথ উদ্ধার শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ কর্যক্রম এখন অনেটাই সফলতার দিকে এগুচ্ছে। যার সুফল পেতে শুরু করেছেন নগরবাসী। ফুটপাথ দিয়ে এখন নিরাপদে যাতায়াত করতে পারছেন মানুষ। নিরাপত্তা আর সৌন্দর্য বর্ধনের অজুহাতে দূতাবাসগুলো তাদের অফিস সংলগ্ন ফুটপাথ দখল করে গড়ে তুলেছে কংক্রিটের তৈরি বিভিন্ন স্থাপনা। ফুটপাথ দিয়ে চলাচল করতে না পেরে ঝুঁঁকি নিয়ে সড়কের উপর দিয়েইে চলাচল করতে হতো পথচারীদের। এ যেন নিজ দেশে পরবাসীর।
দূতাবাসগুলোর দখলে থাকা ফুটপাথের মধ্যে ইতোমধ্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে মার্কিন দূতাবাস ও কানাডা দূতাবাসের সামনের ফুটপাথ। উচ্ছেদ করা হয়েছে ইতালিয়ান দূতাবাসের সামনে থাকা বøক ও পুলিশ বক্স। পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনের রাস্তার বøকও তুলে দেয়া হয়েছে। রাশিয়ান দূতাবাসের তিন দিকের ফুটপাথ ঘিরে লোহার বেড়া ও মূল সড়কের ওপর কংক্রিটের স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এ দূতাবাসটি সরকারের প্রায় ১৫ কাঠা জায়গা দখল করে রেখেছে বলেও মেয়র আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, আলোচনার ভিত্তিতে এগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। ফুটপাথ দিয়ে চলাচল জনসাধারণের সাংবিধানিক অধিকার। এতদিন তারা না বুঝে জায়গাটি দখল করে রেখেছিল। এ ছাড়াও সৌদি দূতাবাসের সামনের ফুটপাথের ওপর থাকা ছাউনি তুলে দেয়া হয়েছে। মেয়র এ কার্যক্রমকে উচ্ছেদ হিসেবে অবহিত না করে সড়ক ও ফুটপাথ অবমুক্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যা করেছি দূতাবাসগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই করা হয়েছে। তারা বিদেশি মানুষ, এটি জনগণের চলাচলের পথ তারা হয়তো এটি জানতো না। তাদেরকে বলার পরে তারা আমাদের বলেছে, আপনাদের যেটা ভালো হয় সেটা করেন। ক‚টনৈতিক এলাকার ফুটপাথগুলো দখলমুক্ত করে প্রতিটি ফুটপাথ পথচারী চলাচলের পাশাপাশি প্রতিবন্ধীবান্ধব করা হবে বলেও মেয়র জানিয়েছেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন তাদের হুইল চেয়ার নিয়ে সহজেই এ ফুটপাথ দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করা হবে। তবে কোনোভাবেই ফুটপাথ দখল করতে দেয়া হবে না।
মেয়র আনিসুল হকের প্রচেষ্টায় বহুদিন ধরে বিভিন্ন দূতাবাসগুলোর দখলে থাকা ফুটপাথগুলো উদ্ধার হওয়ায় ইতোমধ্যে এর সুফল ভোগ করতে পারছেন ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।
গুলশান নতুন বাজার এলাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারী মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, এতদিন এ রাস্তাটি দিয়ে হেঁটে যেতে আমাদের মনে হতো আমরা ভিন্ন কোনো দেশের নাগরিক। আর এরা এ দেশের নাগরিক। তিনি বলেন, আজ বহু বছর ধরে এরা অবৈধভাবে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা দখল করে রেখেছিল। এ নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা ছিল না। উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের চেষ্টায় উদ্ধার হওয়া এ পথটি দিয়ে আমরা এখন স্বাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারছি।
জানা গেছে, পথচারীদের চলাচলের জন্য ফুটপাথের ওপর গড়ে তোলা নিরাপত্তা স্থাপনা সরিয়ে নিতে আটটি দূতাবাসকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইটালি, জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূতদের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়।
উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলামের স্বাক্ষরিত চিঠিতে ফুটপাথের উপরের এসব স্থাপনা সরিয়ে দূতাবাসের নিজেদের জায়গায় নিতে অনুরোধ জানানো হয়। তা করা হলে ফুটপাথে জনসাধারণের চলাচল সহজ হবে বলে চিঠিতে উল্লখ করা হয়।
মেসবাহুল ইসলাম বলেন, এসব এলাকায় ফুটপাথে পথচারীরা চলতে পারছে না। আমাদের লোকজনকে যেন চলতে দেয় এ ব্যাপারে অন্তত একটা আলোচনা শুরু করার জন্যই তাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে বিভিন্ন মহল কথা বলেছেন। এ ছাড়া হাই কোর্টের একটা আদেশ আছে ফুটপাথ ফ্রি করে দিতে হবে।
ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক বলেন, দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা ঠিক রেখে, ফুটপাথগুলোকে সাধারণ মানুষের চলাচল উপযোগী করা হবে। তারা গত ১০ বছর ধরে এমনভাবে দখল করে আছেন যে, আমাদের সাধারণ মানুষ চলতে পারেন না, চলতে দেয় না। যা পৃথিবীর কোথাও নেই। আমরা সব দূতাবাসকে বলেছি, তোমাদের নিরাপত্তা আমরা দেখব, তবে আমাদের রাস্তা ছেড়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, তিন মাস আগে প্রায় সব দূতাবাসকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ফুটপাথ থেকে বøক সরিয়ে নিতে। অনেকেই সাড়া দিয়েছে। আমরা আরো একবার চিঠি দেবো, ফোনে কথা বলব। এরপর না সরালে আমাদের কাজ আমরা করব।
মেয়র অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে গিয়ে সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানান, আমরা অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসকে বলেছি তোমাদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে গুরত্বপূর্ণ। নিরাপত্তার বিষয়টা দেখব, তোমরা আমাদের রাস্তা ছেড়ে দাও, সাধারণ মানুষকে চলতে দাও। তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। আশা করি, এক মাসের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের সামনের রাস্তাও দখলমুক্ত করতে পারব।
আমরা গুলশানবাসী ও ঢাকাবাসীর জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, ফুটপাথগুলোকে চলাচল উপযোগী করব, চলাচল করতে দেবো। আমরা সব আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতেই করব।
ফুটপাথ দখলমুক্তকরণের আওতায় মাদানী এভিনিউতে মার্কিন দূতাবাস ও কানাডিয়ান হাইকমিশন কর্তৃক ফুটপাথ অবরুদ্ধকারী সিসি বøক অপসারণ করে পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে ফুটপাথে চলাচল নিশ্চিত করা হবে। গুলশান ৫৫ নং সড়কে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের সামনের সড়কের ওপর বিদ্যমান কম-বেশি ৪০টি সিসি বøক অপসারণ করা হবে।
গুলশান ৫৪ নং সড়কে ইটালিয়ান রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের সামনে সড়কের উপর বিদ্যমান সব (প্রায় ৬০টি) সিসি বøক অপসারণ, গুলশান ৩ নং সড়কে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের সামনে ফুটপাথের উপর নির্মিত সিকিউরিটি শেড অপসারণ করা হবে।
মেয়র জানান, রাশিয়ান দূতাবাস সরকারের প্রায় ১৫ কাঠা জায়গা দখল করে রেখেছে, যা আলোচনার ভিত্তিতে এগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। ফুটপাথ দিয়ে চলাচল জনসাধারণের সাংবিধানিক অধিকার। এতদিন তারা না বুঝে জায়গাটি দখল করে রেখেছিল।
মেয়র বলেন, আমরা এটাকে উচ্ছেদ বলব না। সড়ক এবং ফুটপাথ আমরা উন্মুক্ত করছি। তিনি আরো বলেন, দূতাবাসগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা তাদের বুঝিয়েছি, এটা জনগণের রাস্তা। জনগণের ফুটপাথ। এখান দিয়ে হাঁটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তারা বিষয়টি বোঝেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।