Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সময়ক্ষেপণের অপচেষ্টা করছে

প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলায় আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ ও আংশিক জেরা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম হত্যা মামলার বাদী স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্য প্রদানের পর আসামীপক্ষের আইনজীবীরা বিউটিকে জেরা করেন। তবে সাক্ষ্য প্রদানকালে বিউটিকে ৩২ জন আসামীর আইনজীবী জেরা করলেও ৩ জন আসামীর আইনজীবীরা সাক্ষ্য গ্রহণ স্থগিতের আবেদন করেন। পরে আদালত তা নাকচ করে আগামী ১০ মার্চ জেরা করার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। বৃহস্পতিবার(৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টায় জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ২৩ জন আসামীর উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শুরু হয়ে চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।
রাষ্ট্রপক্ষের পিঁপিঁ এড. ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, এদিন বিউটির সাক্ষ্য গ্রহণ স্থগিতের জন্য নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও আরিফের আইনজীবীরা আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে আগামী ১০ মার্চ সাক্ষীকে জেরা করার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলা দুটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সময়ক্ষেপণের অপচেষ্টা করছে।
গ্রেফতারকৃত ২৩ জন আসামীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মামলা দুটির প্রধান আসামী নূর হোসেনের পক্ষে এড. খোকন সাহা, লে.কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ, এম এম রানাসহ অন্যান্য আসামীদের পক্ষে ঢাকা জেলা আদালতের প্রায় ১৫ জন আইনজীবী আর পলাতক ১২ জন আসামীর পক্ষে সরকারী খরচে নিয়োগ প্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ৫ জন আইনজীবী।
এর আগে সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রধান আসামী নূর হোসেন, র‌্যাবের চাকরীচ্যুত সিইও লে.কর্নেল তারেক সাঈদ, কোম্পানি কমান্ডার এম এম রানা, আরিফসহ ২৩ আসামীকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারী সাত খুনের ঘটনায় নিহত আইনজীবী চন্দন সরকার হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন তার জামাতা বাদী বিজয় পাল। সাক্ষ্য প্রদানকালে বিজয় পালকে ২০ জন আসামীর আইনজীবীরা জেরা করলেও ৩ জন আসামীর আইনজীবীরা তাকে জেরা করার সময় প্রার্থনা করায় আগামী ৭ মার্চ জেরা করার পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।এর আগে সোমবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দুই মামলার দু’জন বাদী বিজয় পাল ও সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্য গ্রহণের কথা থাকলেও আদালত বিউটির সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ৩ মার্চ নির্ধারণ করে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে প্রায় একবছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ পত্র থেকে পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগ পত্র আদালত আমলে নেওয়ায় নারাজি আবেদন করেন সেলিনা ইসলাম বিউটি। আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জজ আদালতে খারিজ হয়ে গেলে বিউটি উচ্চ আদালতে যান।হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, পুলিশ চাইলে মামলাটির অধিকতর তদন্ত করতে পারে এবং হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার ধারা যুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দু’টি মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক। গত ১২ নভেম্বর নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর ১৩ নভেম্বর সাত খুনের দু’টি মামলাসহ ১১ মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখায়। ১১টি মামলার মধ্যে সাত খুনের দু’টি মামলা, চাঁদাবাজির তিনটি এবং অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলাগুলো রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ