Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শাহাবুদ্দিন নাগরী ফের রিমান্ডে : নূরুল ইসলামকে হত্যার কথা অস্বীকার

| প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে নিহত ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন কাস্টমসের সাবেক কমিশনার ও কবি শাহাবুদ্দিন নাগরী। প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। নূরুল ইসলাম হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি শাহাবুদ্দিন নাগরী। তাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। একই সাথে একই সময়ের জন্য রিমান্ডে নেয়া হয়েছে নূরুল ইসলামের স্ত্রী নূরানী আক্তার সুমীকেও। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত অপর আসামি নিহত ব্যবসায়ীর গাড়িচালক সেলিম হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল এলিফ্যান্ট রোডের ১৭০/১৭১ নম্বর ডম-ইনো অ্যাপার্টমেন্টের ৫ম তলার ফ্ল্যাটের নিজ বেডরুমের ফ্লোর থেকে ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের (৪৭) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বোন শাহানা রহমান কাজল বাদি হয়ে নূরুল ইসলামের স্ত্রী নূরানী আক্তার সুমী (৩৫), স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক সাবেক কাস্টমস কমিশনার শাহাবুদ্দিন নাগরী (৬০), গাড়িচালক সেলিমসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় শাহাবুদ্দিন নাগরী এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি। এ মামলায় গ্রেফতারের পর
১৭ এপ্রিল শাহাবুদ্দিন নাগরী, নূরানী আক্তার সুমী ও গাড়িচালক সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড নেয় পুলিশ। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল রোববার পুনরায় নাগরী ও সুমিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক মাতলুবুর রহমান। এ সময় আদালতের কাছে ফের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনে বলা হয়, ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম শেখ ছামিদুল ইসলাম দুই আসামির ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রথম দফার রিমান্ডে নাগরী ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের স্ত্রীর সঙ্গে নিজের অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, নূরুল হত্যার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অপরদিকে সুমী বলেছেন, গলা টিপে তার স্বামী নূরুলকে হত্যার পর বিষয়টি শাহাবুদ্দিন নাগরীকে জানান। ঘটনার দিন বেলা সোয়া ৩টার দিকে শাহাবুদ্দিন তার ফ্ল্যাটে এলে হত্যাকাÐ ধামাচাপা নিয়ে পরামর্শ হয়। তখন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এমন খবর প্রচার করার পরামর্শ দিয়ে দেয়। এ জন্য একজন চিকিৎসককেও বাসায় আনার কথা জানান। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে শাহাবুদ্দিন নাগরী তার ফ্ল্যাট থেকে বের হন। এরপর সুমী তার বোন মীমকে দিয়ে গাড়িচালক সেলিমকে বাসায় ডেকে আনেন। রাত ১০টার দিকে গাড়িচালক সেলিম অ্যাপার্টমেন্টের ম্যানেজার স্বর্ণকার বাবুর কাছে গিয়ে জানান যে, ম্যাডাম (সুমী) অসুস্থ। ডাক্তার দরকার। এরপর সেলিম আবার ফ্ল্যাটে আসার পর শিখিয়ে দেয়া হয় যে, ম্যাডাম নয় স্যার (নূরুল) অসুস্থ হয়েছে। সেলিম একই অ্যাপার্টমেন্টের চিকিৎসক রবিউল হালিম মুন্নাকে ফ্ল্যাটে ডেকে আনে। তিনি গিয়ে পরীক্ষা করে জানান যে, আরো অনেক আগেই তিনি মারা গেছেন। এরপর তিনি লাশ বহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে থাকেন। এরই মধ্যে তিনি লাশটি খাটের নিচে রেখে দেন। কিন্তু আধ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের কাছে খবর পৌঁছে। রাত ১টায় পুলিশ আসে। এরপর তাকে আটক করে। পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সুমী তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও শাহাবুদ্দিন নাগরী এখনও অস্বীকার করে যাচ্ছেন। নাগরী ও সুমীর বক্তব্য নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের আবারও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ