Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপিকে বাইরে রেখে আগামী নির্বাচন এত সোজা হবে না : মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপিকে বাইরে রেখে একাদশ নির্বাচন করা এত সোজা না হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, নিবন্ধন বাতিল নিয়ে উই আর নট কনসার্ন। বিএনপিকে বাদ দিয়ে যদি তারা (বর্তমান সরকার) নির্বাচন করতে চায় করুক না- এত সোজা না তো। বিএনপি ইজ দ্য লার্জেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি ইন দিজ কান্ট্রি এবং এই পলিটিক্যাল পার্টিকে বাদ দিয়ে একটা নির্বাচন তারা করেছে, যে নির্বাচনের কোনো লেজিটিমেসি তারা পায়নি, কোনো লেজিটিমেসি এখন পর্যন্ত পায়নি। প্রত্যেকে, ভারতও পর্যন্ত বলে যে, এটা লিজিটিমেট ইলেকশন হয়নি।
আমরা বলতে চাই, আবারো যদি তারা (সরকার) বিএনপিকে বাদ দিয়ে সেই অবস্থা তৈরি করে, সরকার কখনোই সারা বিশ্বের কেনো, বাংলাদেশের মানুষের কাছেও কারো কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
একই সঙ্গে একাদশ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সঠিক সময়ে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেয়া হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে একটা সহায়ক সরকারের রূপরেখার উপর আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন গুণীজন যারা এই বিষয়ে কাজ করেন তাদের মতামত নিচ্ছি, জনগণের মতামত নিচ্ছি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে একটা সহায়ক সরকারের রূপরেখা আমরা জাতির সামনে তুলে ধরব।
সহায়ক সরকারের রূপরেখা কি হবে, জানতে চাইলে ফখরুল ইসলাম বলেন, মূল ফোকাস থাকবে কিভাবে একটি নির্বাচন করা যেতে পারে। নির্বাচনটা যেন দলনিরপেক্ষ হয়, সেই নির্বাচন যেন জনগণ গিয়ে ভোট দিতে পারে, তার ভোট দেয়ার অধিকারটা প্রয়োগ করতে পারে- এই বিষয়টা হবে প্রধান। সেটা নিঃসন্দেহে এ দেশের জন্য, জনগণের জন্য ও তার অধিকার আদায়ের জন্য সেই ধরনেরই একটা প্রস্তাব দেয়া হবে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজের চেম্বারে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব।
নির্বাচনে যাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে পরিবেশ তৈরির বিষয়টি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বরাবরই বলেছি, আমরা  নির্বাচনমুখী দল, আমরা নির্বাচন করতে চাই। সেই নির্বাচন করার জন্য তো উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। আওয়ামী লীগের অত্যন্ত সচেতনভাবে সেই পদ্ধতিকে নষ্ট করেছে। তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করার জন্য ভিন্ন আঙ্গিকে আজকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। এখানে কখনোই কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। নির্বাচন যখন হবে, ইট মাস্ট বি নিউট্রাল। এখানে সরকারকে নিউট্রাল হতে হবে, নির্বাচন কমিশনকেও নিউট্রাল রোল প্লে করতে হবে। প্রতিটি ভোটার যেন ভোট দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবিধান তো তারা পরিবর্তন করেছে গায়ের জোরে, আর ক্ষমতায়ও টিকে আছে গায়ের জোরে। যেখানে (২০১৪ সালের নির্বাচন) শতকরা ৫ ভাগ লোকও ভোট দেয়নি, ১৫৪ আসন অনির্বাচিত,  সেটাকে জনগণের সরকার বলবেন কী করে, এটা দখলদারী সরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে তখনই আমরা যাব, যখন দেখব যে নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। সেটার দায়িত্ব তো সরকারের। এখন কোনো ডেমোক্রেটিক স্পেস নেই। হাজার হাজার নেতাকর্মী আমাদের এখন জেলে রয়েছে, অসংখ্য মামলা- এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের মতো একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে নির্বাচনে যাওয়া তো কোনো মতেই সম্ভব নয়। এই বিষয়গুলো যদি ন্যূনতম স্পেস তৈরি করা না হয়, একটা লেভের প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা না হয় তাহলে নির্বাচনে যাওয়ার তো প্রশ্নই উঠতে পারে না।
বৃষ্টি-বর্ষণে ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এর মূল কারণ দুর্নীতি জাতীয়করণ করা হয়েছে। এমনভাবে দুর্নীতি হচ্ছে, প্রজেক্টের নাম করে টাকা নেয়া হয়, ওইসব প্রজেক্টে কোনো কাজ করা হয় না।
আরেকটি কারণ হচ্ছে- সিটিগুলোতে যে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয় ভবিষ্যৎ চিন্তা করে, জলাবদ্ধতাকে দূর করার জন্য যে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা দরকার, সেই মাস্টার প্ল্যান তাদের নেই।  সে কারণে জলাবদ্ধতা দূর করতে পারছে না। তবে প্রধান কারণ হচ্ছে দুর্নীতি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রামপালের বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রত্যেকটা অনুষ্ঠানে বলেন, রামপালের বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে। উনি বলেছেন, দূরে কোথাও করলে আমাদের আপত্তি থাকবে না।
সরকার রামপালে কেনো এই প্রকল্প এখানে করতে চাচ্ছে? এখানে বিশেষ কোম্পানির প্রতি তাদের (সরকার) যে দায়বদ্ধতা যেটাকে ভারত থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এই দায়বদ্ধতার কারণেই তারা এটার প্রতি জোর দিচ্ছে। জনগণের কাছে এই সরকার কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেই তারা একটা পরিবেশ বিনাশী ও বাংলাদেশের স্বার্থ বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এখানে দেশের ক্ষতি করবে না জনগণের ক্ষতি করবে তা চিন্তা করছে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হাওর অঞ্চলে ব্যাপক বন্যার কারণে মাছের মড়ক কেনো হচ্ছে, তা জরুরিভাবে মৎস্য মন্ত্রণালয়ের উচিৎ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়া। তা না হলে সেটা মৎস্য সম্পদের ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হবে এবং জনস্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে বন্যাকবলিত এলাকা আমি ঘুরে এসে আপনাদের বলেছি, ওই অঞ্চলটাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা প্রয়োজন। এই প্রয়োজনটা জনগণের জন্যই।  যেহেতু আওয়ামী লীগের এখন জনগণ নেই, সেজন্য তারা এই বিষয়গুলোতে কখনোই গুরুত্ব দেয় না।
আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি, ওইখানে মানুষ খুব কষ্টে আছে, আগামী ফসল ওঠা পর্যন্ত অগ্রিম সুদমুক্ত ঋণ দেয়া এবং দূর্গতদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী প্রদান করা। যে ঋণ আছে তা মওকুফ করার কথা বলেছি। শুনেছি, ইতোমধ্যে একজন আত্মহত্যা করেছে, একজন হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছে ঋণের চিন্তায়।



 

Show all comments
  • মিলটন ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ৫:৪৫ এএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন ভারত থাকলে হাসিনা bnp কে না হলে ও চলবে
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Abdal ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৫৫ পিএম says : 0
    100% সঠিক কারণ আপনারা সবাই ভিতরেই থাকবেন মানে জেলের ......
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ