Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাল ফেলেও ডিম মেলেনি হালদায়

| প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী : মুসলধারে বৃষ্টি-বাদলা ও মেঘের গর্জনের মধ্যে দিয়ে দেশের একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে কার্প জাতীয় (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) মা-মাছের ডিম না দিলেও ডিম ছাড়ার নমুনা পাওয়া গেছে। শুক্রবার আনুমানিক সন্ধ্যারদিকে নদীর জোয়ারের সময় হাটহাজারী-রাউজান উপজেলা বেশ কয়েকটি স্থানে এ ডিম ছাড়ার নমুনা মিলেছে বলে ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন। নদীতে ডিম পাওয়ার আশায় ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে জাল ফেলে দেখে ডিমের নমুনা পাওয়া গেছে। তাই মধ্য রাতে ডিম দিবে এমন আশায় নৌকা, জাল, বালতিসহ ডিম ধরার সরঞ্জামনিয়ে বৃষ্টিবাদল মাথায় নিয়ে নদীর বুকে প্রহর গুনছে ডিম সংগ্রহকারীরা।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার আনুমানিক বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যার পর এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হালদার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার রামদাশ হাট, আজিমার ঘাট, সিপাহীর ঘাট, মগদই, কাগতিয়ার টেক ও নাফিতের ঘাট এলাকায় কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়ার নমুনা পাওয়া যায় বলে স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা জানায়। মুষলধারে বৃষ্টি, মেঘের গর্জন ও পাহাড়ি ঢল হলেও পূণির্মার ‘জো’ না থাকায় হালদায় ডিম পাওয়া যায় নি। গত কয়েকদিন আগে পূণির্মার ‘জো’ থাকলেও কোনো বৃষ্টি, মেঘের গর্জন ও পাহাড়ি ঢল ছিলনা। তবে বর্তমান মৌসূমটি হালদা নদীতে মা মাছের ডিম দেওয়ার মৌসূম। হাটহাজারী উপজেলার মার্দাশা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী শাহাজান এর সাথে কথা হলে তিনি মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে নমুনা ডিম পাওয়া গেলেও হালদায় এখনো পর্যন্ত ডিম পাওয়া যায় নি। ডিম ছাড়ার নমুনা পাওয়া গেছে মাত্র। গত দুই দিনে মুষলধারে বৃষ্টি, মেঘের গর্জন ও পাহাড়ি ঢল হলেও এখনো পর্যন্ত মা মাছ ডিম ছাড়েনি। তবে মধ্য রাতে মা মাছ ডিম দিতে পারে বলে হালদা সংশ্লিষ্টরা জানান। এদিকে বিগত ও বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য দূষণ, হালদা নদীতে নির্বিচারে মা-মাছ নিধন, হালদার বাঁক কাটা, ডিম ছাড়ার পরিবেশ নষ্ট, রাবার ড্যাম ও এশিয়ান পেপার মিল, এফ.ডি.এন এনার্জি লি: ও রিফ লেদার লিমিটেড নামক ওই প্রতিষ্ঠানের ট্যানারির অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে পতিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে করে বিগত বছরের তুলনায় মা-মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ কমছে।
উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র মিঠা পানির এই হালদা নদী বিশ্বের একমাত্র অন্যতম জোয়ার-ভাঁটার নদী। এখানে প্রতি বছর এই সময়ে কার্প জাতীয় মা-মাছ (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশ) সহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছের নিষিক্ত ডিম ছাড়ে এবং জেলেরা ডিম সংগ্রহ করে পরে তা কয়েক দফায় বিকিকিনি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। অপার এই জীব বৈচিত্র ও মৎস্য সম্পদের অন্যতম রূপালী খনি জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রেখে চলেছে বহু বছর ধরে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ