Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

১৭ জনের স্থলে আছেন ৫ জন বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

| প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এস এম বাবুল (বাবর), ল²ীপুর থেকে : ল²ীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ১৭ জন শিক্ষকের স্থলে মাত্র ৫ জন শিক্ষক দ্বারা পাঠদান কার্যক্রম অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই সংকট চলে আসলেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ। চলমান সংকট নিরসনে রামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পৌরসভা মেয়রসহ বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে একের পর এক তদবির করার পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে নিয়মতান্ত্রিক পাঠদান ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অত্র অঞ্চলে ঐতিহ্যের ধারক এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি তার জৌলশ হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষানীতি শতভাগ বাস্তবায়নের কর্মসূচিতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র জানায়, ব্রিটিশ শাসন আমলে রামগঞ্জের কৃতি প্রতিথযশা ব্যক্তিত্ব মৌলভী ফয়েজ বক্স প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত রামগঞ্জ ঈদগাহ সংলগ্ন মাদ্রাসায় এবং মধুপুরের জমিদার অনঙ্গ মোহন মজুমদার কৃর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মধুপুর টেলে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্মীয় শিক্ষার সম্প্রসারণে সুনাম কুড়িয়ে ছিল। এই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সমন্বিত করে দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতার যৌথ প্রচেষ্টায় ১৯১৫ সালে রামগঞ্জ উপজেলার রতনপুর নামক গ্রামে আধুনিক শিক্ষার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৩ একর ৪৬ শতক সম্পত্তির ওপর রামগঞ্জ মধুপুর ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় নামে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠা লগ্নের কার্যকরী কমিটির ১১ সদস্যের অক্লান্ত পরিশ্রমে ৯০ জন শিক্ষার্থী এবং ৮ জন শিক্ষক নিয়ে বিদ্যালয়টি পাঠদান শুরু হয়। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক বাবু হেমেন্দ্র কুমার মুখুটির অক্লান্ত পরিশ্রমে বিদ্যালয়টির সুনাম ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি ১৯১৮ সালে একাডেমিক বিদ্যাপীঠের স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর এ প্রতিষ্ঠানটিকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। স্বাধীনতার পরও বিদ্যালয়টি তার নিজস্বতা অক্ষুণœ রাখলেও বিগত ২০০৩ সালে হঠাৎ করেই শিক্ষক সংকট শুরু হয়। একপর্যায়ে ১৭ জন শিক্ষকের স্থলে মাত্র ৫ জনে নেমে আসে। এ ৫ জনের পক্ষে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি শিক্ষক, অভিভাবক মহল কর্তৃক বারংবার তদবির করেও কাজ হয়নি। সর্বশেষ তাদের আকুতি জানিয়ে ২০১৬ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি অত্র পত্রিকায় তুলে ধরলেও কাজ হয়নি। ফলে বিদ্যালয়টি থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মতিন জানান, অত্র বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কথা সর্বমহলকে জানানো হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র মহোদয়ও চেষ্টা করেছেন। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রধান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়কেও অবহিত করা হয়েছে, কিন্তু কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে ৩ জন গেস্ট শিক্ষক দিয়ে কোনো রকম পাঠদান পরিচালনা করে আসছি। ল²ীপুরের সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১ জন শিক্ষক রামগঞ্জে আসতে চাইছেন। উনি আসতে পারলে ভালো হতো। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানে পরিপূর্ণ শিক্ষক রয়েছেন ওইসব প্রতিষ্ঠান থেকে ২/১ জন করে শিক্ষককে ডেপুটিশনে (নির্ধারিত সময় দিয়ে) পাঠালে এ বিদ্যালয়টি তার ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে বলে আসা রাখি। বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবু ইউসুফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সংকট নিরসনে চেষ্টা করছি। ডিসি মহোদয়কে অবহিত করেছি। আশা রাখি রেজাল্ট পাব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ