বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুÐ থেকে : স্যার আমার গাড়িটি ছেড়ে দেন। ছেড়ে দিলে আমি আপনাকে দোয়া করব। আপনি এক’শ বছর বাঁচবেন! এদেশে কতরকম সমস্যা আছে। বাম্পার আর এমন কি সমস্যা? আমরা তো পোকা-মাকড়ও খেয়ে ফেলছি। তাতে কি হচ্ছে? আমাকে ছেড়ে দিলে পরে আমি নিজেই বাম্পার কেটে ফেলব। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সীতাকুÐের বড়দারোগারহাটে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের বাম্পার, এ্যঙ্গেল অপসারণে বিআরটিএ’র মোবাইল কোর্ট চলাকালে এক কাভার্ড ভ্যান চালক তার গাড়ির বাম্পারটি না কাটার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এভাবেই অনুরোধ জানান। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট তার অনুরোধ শুনতে রাজি নন। তিনি বলেন, অনেক দিন সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আজকে আর কোন সুযোগ না। একথা শুনে বৃদ্ধ ঐ ট্রাক ড্রাইভার এবার বলে উঠলেন, স্যার আপনি আমার ছেলের বয়সী। একটি অনুরোধ করলাম, রাখবেন না? এরপরও ম্যাজিস্ট্রেট তার গাড়ি যেতে দিচ্ছেন না দেখে বৃদ্ধ চালক বললেন, স্যার পরিচয় দিতে চাইছি না। আসলে এটি মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পিএ’র গাড়ি। ছেড়ে দেন না স্যার। বৃদ্ধের অনুনয় বিনয় শুনতে শুনতে ইতিমধ্যে বিচলিত হয়ে উঠা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপস্থিত বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের মুখে এবার হাসি ফুটল।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার ও বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, তাহলে তো আরো ভালো কথা। মন্ত্রী মহোদয় খুশি হবেন। কারণ, আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছি। এদিকে মন্ত্রীর পিএ’র গাড়ি বলার পরও কাজ না হলে বৃদ্ধ চালক আরো এক নেতার সাথে তার আতœীয়তার কথা জানান। একথা শুনে ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ বলেন, তারা অনেক বড় মাপের মানুষ। আমাদের গর্ব। কিন্তু আপনি এসব আর বলবেন না। কারণ, আমি ছাড়তে পারব না। বরং এত কিছু বলার পরও ছাড়তে পারছি না বলে আমার খারাপ লাগবে। অন্যদিকে এত কিছু বলেও গাড়ির বাম্পার বাঁচাতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়লেন তিনি। শেষে তার গাড়িটির বাম্পার ও এ্যঙ্গেল কেটে নেওয়া হলো। এদিন শুধু এই বৃদ্ধের গাড়িই নয়, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আরো ৭টি গাড়ির বাম্পার, এ্যাঙ্গেল, হুক কেটে জব্ধ করে বিআরটিএ।
অভিযানকালে ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার এ প্রতিবেদককে বলেন, গাড়ির সামনের অংশ থেকে এসব বাম্পার, এঙ্গেল অপসারণ খুবই জরুরী ছিলো। এসব বাম্পার নিয়ে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান যদি কোন কার, মাইক্রোবাস বা হালকা যানবাহনকে সজোরে ধাক্কা দেয় তাহলে ঐ গাড়িটির আর কোন অস্তিত্ব থাকবে না। যাত্রীদের বাঁচার সম্ভবনাই থাকে না। কিন্তু এসব গাড়ির কিছুই হয় না। এ কারণে এ গাড়িগুলির চালকরা বেপরোয়া হয়। তাই এগুলো কেটে নেওয়াই ভালো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।