Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরগঞ্জে মরিচ চাষে স্বাবলম্বী তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষক

| প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে কৃষকরা মরিচসহ নানাবিধ রবিশস্য চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তিস্তার চরাঞ্চলের মরিচ এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি করা হচ্ছে। রবিশস্য ক্ষেতে স্ত্রী-পুত্র পরিজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। বর্তমানে চরাঞ্চলে মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, বাদাম, ভুট্টা, মিষ্টি, কুমড়া, গাজর, আদা, বেগুন, শসা, করলা, ঢেড়স, পটল, মিষ্টি আলুসহ নানাবিধ ফসলে ভরে উঠেছে। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হারিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, দহবন্দ ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর চরাঞ্চল আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তার কড়ালগ্রাসে বাপ-দাদার ভিটামাটি ছেড়ে যাওয়া পরিবারগুলো পুনরায় চরে ফিরে বসতি স্থাপন করেছেন এবং রবিশস্য চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। কথা হয় হরিপুর চরাঞ্চলের কৃষক বিদ্যুৎ কুমার দেব শর্মার সাথে। তিনি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পলি জমে তিস্তার চরাঞ্চল এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। আমরা সেই বাপ-দাদার ভিটামাটিতে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করছি। ফলন খুব ভালো হচ্ছে। অল্পখরচে অধিক লাভ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। এক সপ্তাহ পর পর আমি ২ বিঘা জমির মরিচ বিক্রি করে ৫ হতে ৬ হাজার টাকা আয় করছ্।ি এছাড়া পিঁয়াজ, ভুট্টা হতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা আয় করব। খোর্দ্দার চরের কৃষাণি শাহারবানু জানান, আমার স্বামী মিস্ত্রী কাজ করেন। তাই আমি নিজেই মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা করি। এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। প্রতি সপ্তাহে ২ দিন মরিচ হাটে পাঠাই। এতে সপ্তাহের দুইদিনে ৩/৪ হাজার টাকা আয় করি। রবিশস্যের মধ্যে মরিচ চাষে বেশি আয় হচ্ছে। চরাঞ্চলবাসীরা এখন কৃষির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা তরিতরকারি যথাসময়ে বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। যার কারণে তরিতরকারী নষ্ট হয়ে যায় এবং কৃষকদের বড় লোকসান গুনতে হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে কোনো হিমাগার এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় তরিতরকারি সংরক্ষণ করতে না পেরে কমদামে বিক্রি করতে হয়। চরাঞ্চলবাসীর প্রাণের দাবি যদি স্থানীয়ভাবে একটি হিমাগার নির্মাণ করা হয় তাহলে বিভিন্ন ফসল গুদামজাত করা সম্ভব হবে। এতে করে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে না। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে ১৫৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষাবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, তরিতরকারির চাষাবাদে অধিক লাভ। এছাড়া দীর্ঘদিন তরিতরকারি বাজারজাত করে সংসার পরিচালনা করা যায়। এজন্য চরাঞ্চলের কৃষকরা মরিচসহ নানাবিধ রবিশস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। তিনি আরো জানান, বর্তমানে উন্নত জাতের উচ্চফলনশীল রবিশস্য চাষ করায় অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ