Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেনাপোলে উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ বন্দর ব্যবহারকারীদের ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস : এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এর আর্থিক সহযোগিতায় ৮৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বেনাপোল বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়ন নির্মাণ কাজে পুরানো আধলা ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক মানের কাজে এমন অনিয়মের অভিযোগে প্রতিবাদ উঠেছে বন্দর ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে।
বন্দর সূত্র জানায়, এডিবি’র অর্থায়নে (এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) ৮৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করছেন ঢাকার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মনিকো লিমিটেড। দুই বছরের মধ্যে তাদের এই কাজ সম্পূর্ণ করার চুক্তি রয়েছে। এসব উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে, নতুন দুইটি আমদানি পণ্যাগার, চারটি ওপেন শেড, পানি নিষ্কাশনের ড্রেন, বন্দরের মধ্যকার রাস্তা ও ওপেন ইয়ার্ড নির্মাণ।
সরেজমিন বেনাপোল বন্দরের ৮ নাম্বার ইয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বন্দরের পুরানো পণ্যাগার ও পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ভাঙা পুরাতন আধলা নিম্নমানের ইট এনে বিশাল স্তূপ করা করা হচ্ছে। আর শ্রমিকরা ওই আধলা ইট থেকে মেশিনে খোয়া তৈরি করে তা নতুন নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছেন।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মনিকো লিমেটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার পার্থ ও মামুন সহ চার ইঞ্জিনিয়ার এই নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকলেও তারা কাজের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ল্যান্ডপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বেনাপোল বন্দর’র অবকাঠামো উন্নয়নের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বন্দরের ওপেন ইয়ার্ডে ভারী পণ্য উঠা-নামা করবে, এর নির্মাণ কাজ অবশ্যই ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে করতে হবে। তা না হলে ছয় মাসের মাথায় তা ধসে যাবে।
বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, প্রতিবছর এই বন্দর থেকে সরকারের ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুব একটা হয়নি। ফলে বন্দরে স্থান সংকট, পণ্য খালাসে বিলম্ব, রাজস্ব আয়ে প্রতিবন্ধকতাসহ অর্থনৈতিক ক্ষতিতে ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এই বন্দর থেকে। আজ ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও নির্মাণ কাজে পুরানো আধলা ইটের ব্যবহার দুঃখজনক।
আমদানি-রফতানি সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি আমিনুল হক জানান, বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ৩শ’ একর জমির ওপর অত্যাধুনিক বন্দর স্থাপনা তৈরি হয়েছে। সেখানে পুরো বন্দর এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতাধীন, রয়েছে উন্নত মানের সড়ক ব্যবস্থা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এসি ওয়ার হাউজ, চোরাচালান প্রতিরোধে স্ক্যানিং ব্যবস্থাসহ আরও অনেক আধুনিক ব্যবস্থা। বেনাপোল বন্দরে ওই একই সুবিধা থাকার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা গড়ে ওঠেনি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম পুরানো আধলা ইট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, বন্দরের পুরানো স্থাপনা ভাঙার পর সেখান থেকে এক কোটিরও কিছু বেশি পরিমাণে আধলা ইট পাওয়া গেছে। বিস্তারিত কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ঢাকা অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী জানান, এসব পুরানো আধলা ইট বাইরে অকশানে বিক্রি করে ভালো মূল্য পাওয়া যায় না। তাই সেগুলো তারা নতুন ইটের সঙ্গে পুরাতন ইট মিশিয়ে পুনরায় নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছেন। নির্মাণ কাজে খুব একটা সমস্যা হবেনা বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেনাপোল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ