Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জনবল সঙ্কটে কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস

| প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : জনবল সঙ্কটের মধ্যেই চলছে কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের কার্যক্রম। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও ল²ীপুর জেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে অনুমোদিত জনবলের চেয়ে বিভিন্ন পদের ৫৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কম নিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম। আঞ্চলিক ও জেলা কার্যালয় যেমন প্রয়োজনের চেয়ে কম জনবল সঙ্কটে ভুগছে তেমনি উপজেলা নির্বাচন অফিসগুলোতেও জনবল সংকটে কার্যক্রম পরিচালনায় অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে কর্মরতদের। তবে নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেছেন শূন্যপদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে কাজের গতি আরও বাড়বে। কুমিল্লা নগরীর ছোটরা এলাকায় অত্যাধুনিক ভবনে কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়টি অবস্থিত। ওই ভবনে উদ্বোধন হওয়া সার্ভার স্টেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ও রয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশনের উদ্বোধন করেন। ঢাকার বিকল্প হিসেবে কুমিল্লার এ স্টেশন হতে সার্ভার পাওয়ার পরিচালিত হওয়ার চিন্তাভাবনা থাকলেও এটি আর কুমিল্লা থেকে হচ্ছে না। তবে অন্যান্য কার্যক্রম চলবে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের একটি পুরাতন ভবনে ২০১০ সাল থেকে কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর কুসিকের ওই ভবন ছেড়ে ছোটরা এলাকায় নবনির্মিত নিজস্ব ভবনে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় স্থানান্তর করা হয়। এ আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীনে রয়েছে ছয়টি জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়। এসব কার্যালয়ের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের পরিচয়পত্র ইস্যুসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। গুরুত্বপূর্ণ এসব কাজ সম্পাদন করতে এবং এসব কার্যালয়ের প্রতিদিনের দাপ্তরিক কাজ সারতে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে কাজকর্মে দেখা দেয় মন্থরগতি। কারণ একটাই জনবল সঙ্কট। কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় এবং এ কার্যালয়ের অধীনে জেলা ও উপজেলা অফিসগুলোতে বিভিন্ন পদে ২৩৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ১৮৬ জন অনুমোদিত জনবল রয়েছে। ৫৩টি শূন্যপদ দীর্ঘদিন ধরে পূরণ হচ্ছে না। তার মধ্যে কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ে অনুমোদিত ১২ জনের জায়গায় রয়েছে মাত্র ৫ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ৩টি পদের ২টি শূন্য রয়েছে। প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের পদটিতে অনুমোদিত কর্মকর্তা থাকলেও পদায়ন না থাকায় সমমর্যাদার অতিরিক্ত আঞ্চলিক অফিসারের ২টি পদ শূন্য রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদার স্টেনোগ্রাফারের ২টি পদ এবং চতুর্থ শ্রেণির অফিস সহায়কের ৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এদিকে আঞ্চলিক ছয় জেলার মধ্যে কুমিল্লা জেলা নির্বাচন অফিসে অনুমোদিত ৬২ জনের মধ্যে জনবলের অভাব রয়েছে ১১ জনের। প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদে ১ জন, তৃতীয় শ্রেণির পদমর্যাদার উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী ও স্টেনোগ্রাফারসহ ৭টি পদ শূন্য রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ ৩টি পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন অফিসেও জনবলের অভাব রয়েছে। এর মধ্যে কর্মকর্তা পদে চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, বরুড়া, মুরাদনগর, মেঘনায় ৬টি পদ শূন্য রয়েছে। স্টেনোগ্রাফার ও অফিস সহায়ক পদে নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, হোমনা, তিতাস, ব্রাহ্মণপাড়া ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় ১টি করে পদ শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে আঞ্চলিক অন্য ৫টি জেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাচন অফিসে কর্মকর্তা, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কসহ ৫টি পদ শূন্য রয়েছে। চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিসে কর্মকর্তা, উচ্চমান সহকারী, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কসহ ৭টি পদ শূন্য রয়েছে। ফেনী অফিসে কর্মকর্তা, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কসহ ৯টি পদে জনবল নেই। নোয়াখালীতে কর্মকর্তা, অফিস সহকারী, স্টেনোগ্রাফার ও অফিস সহায়কসহ ৯টি পদ শূন্য। ল²ীপুর নির্বাচন অফিসে কর্মকর্তা, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কসহ ৫টি পদে রয়েছে জনবল সঙ্কট। জনবল সঙ্কটের বিষয়ে জানতে চাইলে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মÐল বলেন, ‘কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও ল²ীপুর নির্বাচন অফিসে অনুমোদিতের চেয়ে কম জনবল কর্মরত রয়েছে। কেবল তাই নয় আঞ্চলিক অফিসেও জনবল সঙ্কট রয়েছে। জনবলের এ সঙ্কটের মধ্য দিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সদ্য অবসরে যাওয়া সিইসি স্যার গত জানুয়ারি মাসে কুমিল্লায় এলে আমি স্যারকে জনবলের অভাবের বিষয়টি মৌখিকভাবে বলেছি। এছাড়াও শূন্য পদগুলো পূরণের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে আমি চিঠি পাঠিয়েছি। কমিশন এসব শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দিলে আমাদের কাজের গতি অনেক বেড়ে যাবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ