Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলে বিদ্যালয় মাঠে

মাত্র ২২ বছরেই ভবন ব্যবহার অনুপযোগী

| প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নির্মাণের মাত্র ২২ বছরেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে মনোহরদীর মন্ডলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি। ভবনটির ছাদ ও ভীমে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই ফাটল চুইয়ে ক্লাসরুমগুলোতে পানি পড়ছে। দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে। যার ফলে বিদ্যালয়টি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্কুলের দেড় শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে বিদ্যালয়ের মাঠে বসিয়ে পাঠ দিতে হচ্ছে। নির্মাণকাজে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে স্কুল ভবনটিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মনোহরদী উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের ১১৪ নং মন্ডলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন স্কুল ভবনটি ছিল একটি টিন ও তরজা নির্মিত। ১৯৯৪ সালে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের জনৈক ঠিকাদার এই ভবনটি নির্মাণ করেন। নির্মাণের সময় নিম্নমানের ইট, খোয়া, ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদে ও পিলারে রিসাইক্লিং মেটেরিয়াল নির্মিত নিম্নমানের লোহা ব্যবহার করা হয়েছে। ঢালাইয়ের মিশ্রণ কাজে নিম্নমানের সিমেন্ট, বালু, খোয়া ব্যবহারের কারণে ভবনটির ছাদ মাত্র ২২ বছরের মাথায় বাতিল হয়ে গেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, স্কুলের দেয়ালের ব্যবহৃত ইটগুলোও অত্যন্ত নিম্নমানের। দেয়াল থেকে পলেস্তরা খসে পড়ার স্থানগুলোতে ইটগুলোও ঝুরে ঝুরে পড়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানিয়েছেন, কোনো ক্লাসরুমই ভালো নেই। ছাদ থেকে পলেস্তরা ও ইটেরগুড়া ছাত্রছাত্রীদের মাথায় পড়ে। এই অবস্থায় যে কোনো সময়ই ছাদটি ধসে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যালয়ের ভিতরে বসে আর ছাত্রছাত্রীদেরকে পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানানোর পর তিনি তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। কিন্তু বিষয়টি কেউই আমলে নিচ্ছেন না। সামনে ঝড়-তুফান ও বৃষ্টি-বাদলের দিন। অতি সত্বর বিদ্যালয়টি মেরামত বা পুরনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ না করলে এই বর্ষা মৌসুমে স্কুলটি বন্ধ করে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো গত্যন্তর থাকবে না। এব্যাপারে নরসিংদীর একজন বাস্তুশাস্ত্রিক’র সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক নাম্বার ইট, সিমেন্ট, বালু, খোয়া ও লোহা ব্যবহার করলে একটি ভবনের আয়ুষ্কাল হবে কমবেশি ৮০ বছর। ২২ বছরে একটি ভবন বাতিল বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ার অর্থই হলো সীমাহীন দুর্নীতি। অর্থাৎ ভবন নির্মাণের কাজে ব্যাপকভাবে দুর্নীতি হয়েছে। প্রপোরশন অনুযায়ী কোনো নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ