Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতি হাটবারে বাড়ছে চালের দাম দিশেহারা সাধারণ মানুষ

১০ টাকা কেজি’র মোটা চালের সরবরাহ কোথায় যায় ?

| প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : ১০ টাকা কেজির মোটা চালের সরবরাহের পাশাপাশি বছরের পর বছর ধানের বাম্পার ফলনের পরও ক্রমাগতভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দিশেহারা এখন বগুড়া, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা ও নওগাঁ জেলার মানুষ। ঠিকভাবে কেউ বলতেই পারছে না ঠিক কি কারণে বাড়ছে চালের দাম। কোথায় যাচ্ছে ১০ টাকা কেজির চাল এই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে।
গতকাল বগুড়ার বকশিবাজার, রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, কালিতলা ও খান্দার বাজারের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বগুড়ায় এখন খুচরা পর্যায়ে উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫৬ টাকা, কাটারীভোগ ৫২/৫৪ টাকা, পাইজাম ৫০/৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই চালগুলোর ক্রেতা উচ্চ শ্রেণীর মানুষ। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতাদের পছন্দ বিআর ৪৯ প্রতি কেজি ৪২/৪৪ টাকা এবং বি আর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়। অন্যদিকে মোটা চাল উধাও হয়েছে বাজার থেকে। ফলে মধ্যবিত্তের পাশাপাশি নিম্নবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতাদের চাল কিনতে চোখের পানি, নাকের পানি একাকার অবস্থাÑ বললেন ফতেহ আলী বাজারে চাল কিনতে আসা শহরতলী চেলোপাড়ার বাসিন্দা সুকুমার দাশ। বকশি বাজারের মুদি দোকানদার রতন সরকার জানালো গত এক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে প্রতি হাটবারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে গড়ে ২/৩ টাকা হারে বাড়ছে। কেন বাড়ছে তা’ পাইকাররা তা’ জানাচ্ছে না।
এদিকে বগুড়ার নন্দীগ্রাম, সান্তাহার, দুপচাঁচিয়া, এবং পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট ও গাইবান্ধার পাইকারী চালের মোকামগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার চালকল, চাতাল ও অটোরাইস মিলগুলোতে যোগাযোগ করে চাহিদা অনুযায়ী চালের সরবরাহ চাইলে বলা হচ্ছেÑ তাদের স্টকে চাল নেই ? তাহলে ধানের বাম্পার ফলন-এর দান গেল কোথায়, সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়া হচ্ছেনা। কয়েকজন আমদানীকারক ইনকিলাবকে বলেছেন, বাম্পার ফলন এবং উৎপাদক চাষীদের স্বার্থ রক্ষার কথা বলে চালের আমদানী শুল্ক এতটাই বাড়ানো হয়েছে যে, তারা চাল আমদানী বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই কারণেই বাজারে সৃষ্টি হয়েছে চালের সংকট।
বাংলাদেশ অটো রাইস এন্ড হাসকিং মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, বোরো ওঠার পূর্বমুহূর্তে প্রতি বছরই এ সময়ে চালের মূল্য বাড়ন্তই থাকে। সাধারণত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই উত্তর বঙ্গের চলনবিল এবং সিলেটের হাওরাঞ্চলের ধান বাজারে চলে আসতো, তবে এবার হঠাৎ বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে তা পিছিয়ে গেছে। তবে আগামী সপ্তাহে বাজারে ব্যাপকহারে নতুন বোরো ধান বাজারে আসতে শুরু করলে তা’ চাল আকারে বাজারে সরবরাহ হলে আবার নিম্নগামী হবে চালের বাজার। তিনি বলেন, দিনে দিনে হাজার টন ধানকে চালে রূপান্তর করে তা’ বাজারে সরবরাহ করতে সক্ষম এধরনের অটো রাইস মিলের সংখ্যা এখন ৫ শতাধিক। এছাড়াও হাসকিং মিলের সংখ্যাও দুই হাজারের মত। চালের সংকটের অন্তর্বর্তী কালীন সময়ে আমদানীর সুযোগ দেয়া উচিৎ কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, চাল আমদানীর সুযোগ দিলে উৎপাদক চাষী ও মিল মালিক সবারই ক্ষতি হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ