রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীতে বোরো ধান চাষাবাদে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জেলার ৬টি উপজেলার গ্রামাঞ্চলে ফসলের মাঠগুলো সবুজ ধানে ছেয়ে গেছে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। পাহাড়ি সমতল, সমতল ভূমি ও নদীবহুল নিম্নভূমির ধানের ক্ষেতগুলো সবুজে সবুজে সয়লাব হয়ে গেছে। দিগন্ত জুড়ে শুধুই সবুজের হাতছানি। সবুজ ধানের পাতায় দক্ষিণা মলয়ের ছোঁয়া যেন নদীর ঢেউয়ের মতোই শিহরণ জাগায় প্রাণে প্রাণে। মেঠোপথে সবুজের ছায়া, নদ-নদীর সর্পিল বাঁকে সবুজের সমারোহ আর পাহাড়ি ভূমির গৈরিক সমতলে সবুজের মেলা দেখে নয়ন জুড়িয়ে যায় পথিকের। নিজের অজান্তেই ভাবুক মন গেয়ে উঠে ‘নদী আঁকাবাঁকা পথ ছায়ায় ঢাকা, মাঠে সবুজের বিছানা, আহারে আমার দেশ, কাজল মায়ার দেশ, এখানে আমার ঠিকানা’। গ্রামের মেঠোপথে যেতে যেতে দেখা যায় চাষিরা ধান ক্ষেতের পরিচর্যায় রত। তাদের মুখে হাসির ঝিলিক। জমিতে কর্মরত চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারের বোরো উৎপাদনে তারা খুবই আশাবাদী। ধানের সাবজীক বৃদ্ধি, ধানের চারার রং এবং আগাম বৃষ্টি কৃষকের বুকে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছে। তারা বলেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে বড় ধরনের ঢল, শীলাপাত বা কালবৈশাখীর আঘাত না পেলে এবারের বোরো ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে। নরসিংদী কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. লতাফত হোসেন জানিয়েছেন, এবছর নরসিংদী জেলায় ৫৪ হাজার ৬৫৮ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশার কথা চাষাবাদ হয়েছে ৫৫ হাজার ৮৪০ হক্টর জমিতে। এরমধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৮ হেক্টর, পলাশ উপজেলায় ৪ হাজার ১০২ হেক্টর, শিবপুর উপজেলায় ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টর, মনোহরদী উপজেলায় ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর, বেলাব উপজেলায় ৫ হাজার ৬৩৩ হেক্টর এবং রায়পুরা উপজেলায় ১৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। গত বছর ধানের উচিৎ মূল্য পাওয়ায় এ বছর চাষিরা বোরো ধানের দিকে বেশি ঝুঁকেছে। প্রতি বছরই কোনো না কোনো এলাকায় চাষাবাদের বাইরে থেকে যায়। এবছর বোরো ধানের জমি অনাবাদি রয়েছে বলে জানা যায়নি। চাষিরা যেমন আগ্রহ সহকারে বোরো ধান চাষাবাদ করেছেন তেমনিভাবে প্রকৃতিও তাদের অনুক‚লে রয়েছে। গত ৮/১০ বছর মার্চ মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। কিন্তু এবছর মার্চ মাসে উল্লেখযোগ্য হারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। সরকারের হাইড্রোলজি বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী এ বছর মার্চ মাসে একদিনে ৭৪ মিলি মিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে এখনো কোথাও বড় ধরনের শীলাপাতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রাকৃতিক বৃষ্টির কারণে বোরো ধানে রোগবালাইও তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তবে এবছর বোরো ধানের উৎপাদন হবে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৭৪ মেট্রিক টন। তিনি আরো জানান, চলতি বছর স্থানীয় ভেরাইটি চাষাবাদ হয়েছে কম। মাত্র ৬২১ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে। হাইব্রিড চাষাবাদ হয়েছে ৬৮৪ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় হাইব্রিড চাষের এলাকা কিছুটা বেড়েছে। উফশী জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে ৫৪ হাজার ৫ ৩৫ হেক্টর জমিতে। নরসিংদী জেলায় উৎপাদিত ধান রাজধানী ঢাকার ৪০ ভাগ চাহিদা পূরণ করে থাকে। এবছর বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও রফতানির মাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে। চাষিরা বুকভরা আশা নিয়ে বসে রয়েছেন কবে তাদের ঘরে বোরো ধান উঠবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।