Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রূপগঞ্জের প্রাথমিকে ২১ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

ভেঙে পড়ছে শিক্ষা কার্যক্রম

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সবকটিতেই দীর্ঘ ছয় বছর যাবৎ নেই প্রধান শিক্ষক। ফলে অভিভাবকহীন চলছে এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান। পরিচালনা ব্যর্থতা নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালানোর সরাসরি প্রভাব পড়েছে উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরিদ্র ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার ১১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৯২৮০ জন বালক ও ৩৬০১০ জন বালিকা শিক্ষার্থী পাঠদান করে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানে নেই প্রধান শিক্ষক। এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণহীন সহকারী শিক্ষকরা এ প্রতিষ্ঠান চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গড়ে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদানে স্বাভাবিক শিক্ষক সংকট থাকলেও প্রধান শিক্ষক না থাকায় এ সংকট আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সূত্র জানায়, সরকারিভাবে এ প্রধান শিক্ষক পদ শূন্যতার তালিকায় রয়েছে মাত্র ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেলদী-সোনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাউদপুর-পুটিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হানকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলিয়াদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামালকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোলাব ইউনিয়নের গুতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারিতালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোলাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাঞ্চন পৌরসভার তারৈল বিরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঙ্গলখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের হোড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলাকান্দাইল নীলভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়াও বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ, বদলি ও অবসরজনিত নানা সমস্যায় আরো বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই প্রধান শিক্ষক। ফলে ঢিলেঢালাভাবেই চলছে এদের কার্যক্রম। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্থানীয় দরিদ্ররাও বাধ্য হয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান পড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে। সূত্র আরো জানায়, এসব প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় উপজেলা প্রশাসন থেকে জরুরি তথ্য চাইলেও দিতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রতিষ্ঠান। সহকারীদের পরিচালনা জ্ঞান না থাকায় এ সমস্যা আরো জটিল হয়ে পড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের দেখভাল সহকারীরা পরিচালনা করায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভঙ্গুর দশায় পরিণত হয়েছে। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য দাউদপুর ইউনিয়নের সহকারী শিক্ষক শিশির রঞ্জন দাস বলেন, ৬ বছর পূর্বে প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগম বদলি হয়ে দক্ষিণ খৈসাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে যান। সেই সময় থেকে এ প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন এ প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক না থাকায় এ প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এসব বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, বদলি, অবসর, মৃত্যুসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার প্রায় ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এসব বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে সাময়িক কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান অব্যাহত আছে। তিনি আরো জানান, সারা দেশে শিক্ষকদের গ্র্যাডেশনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উচ্চ আদালতে মামলা জটিলতায় ও পদোন্নতি সংক্রান্ত সমস্যায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ