Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদমদীঘিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কেঁচো কম্পোস্ট সার

| প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে : আদমদীঘির কৃষকদের কাছে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গোবর থেকে তৈরি কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট সার। এ সারে জমির মাটির গুণগতমান বৃদ্ধি পায় এবং ফসলের ফলন হয় ভালো। একারণে দিন দিন এ সারের চাহিদাও বাড়ছে। কৃষকরা ধান, আলু, সরিষা, গম, ডাল সবজিসহ বিভিন্ন ফসলে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে জমিতে এ সার ব্যবহার করছে। অল্প পরিশ্রমে একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদনের মাত্রা ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরুর গোবর থেকে গ্যাস উৎপাদন করে জালানি কাজে ব্যবহার করা হয়। সেই গোবরে তৈরি করা কেঁচো কম্পোস্ট সার এখন কৃষিপ্রিয় হয়েউঠেছে। এই সার তৈরি করতে গোবরভর্তি একটি হাউজে গাছের লতা-পাতা খড় ও পচনশীল আবর্জনা রেখে সেখানে কয়েকটি কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। আর হাউজে রাখা আবর্জনাগুলো মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করতে হয়। এভাবেই ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। বাণিজ্যিকভাবে এ সার উৎপাদন করাও সম্ভব। রসায়ন সার ব্যাবহারে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যায়। ফলে এ সারের গুণগতমান কৃষকদের কাছে এখন পরীক্ষিত হওয়ায় এই সারের ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। কেঁচো কম্পোস্ট সারের মূল্য কম কিন্তু রাসায়নিক সারের তুলনায় গুণগতমানও ভালো এবং মাটির উর্বরতা শক্তি বিনষ্ট করে না। কৃষকের একদিকে খরচ কমেছে অন্যদিকে তাদের জমিতে ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জিনইর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী ও ছায়ের আলী জানান, ৩০টি গরুর গোবর থেকে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি করা হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মামুন হোসেনের পরামর্শে ৩২টি হাউজ করে গোবর ও অন্যান্য আবর্জনা ফেলে সেখানে প্রতিটি হাউজে ২৫০ গ্রাম করে কেঁচো ছেড়ে দিয়ে মাঝেমধ্যে উলটপালট করা হয়। এভাবে ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। জিনইর গ্রামের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জমিতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে এখন কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছি। এতে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন খরচ কম হয় এবং ফলনও ভালো হয়। উৎপাদনকারী কৃষক আশরাফুল আলম জানান, এ সার তৈরি করে স্থানীয় কৃষকদের নিকট বিক্রি করছি। এ সারের প্রযুক্তি সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায়। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের এ সারের ব্যবহার নিশ্চিত করা হলে সারাদেশে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কামরুজ্জামান বলেন, কৃষকরা ভার্মি কম্পোস্ট সারের গুরুত্ব বুঝতে পেরে তারা নিজেরাই এখন এ সার তৈরি করে জমিতে ব্যবহার করছেন। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জমিতে জৈব পদার্থ কমে যায়। তাই কেঁচো কম্পোস্ট বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি ও ব্যবহারের উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ