Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘুচবে ফুলছড়ি চরাঞ্চলের ৪ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

কাবিটার টাকায় সড়ক নির্মাণ

| প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা : গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের চার গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচির টাকা দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তাটি নির্মাণকাজ শেষ হলে গজারিয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পসহ ওইসব গ্রামের ৪ হাজার মানুষের দুর্দশা লাঘব হবে এবং যাতায়াতের পথ সুগম হবে। সরেজমিনে ঘুরে ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফুলছড়ি হাট সংলগ্ন এলাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ অনেকটা পূর্বদিকে সরে যাওয়ায় নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এক সময়ের রুদ্ররূপী ব্রহ্মপুত্র নদের পানিপ্রবাহ পূর্বদিকে এক কিলোমিটার সরে যাওয়ায় বর্তমানে নীলকুঠি গ্রামের পূর্বপ্রান্ত দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির ¯্রােতধারা প্রবাহিত হচ্ছে। পশ্চিমপ্রান্তে বিশাল এলাকাজুড়ে চর জেগে উঠায় উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা, জিয়াডাঙ্গা, ভাজনডাঙ্গা ও চর নীলকুঠি গ্রামে বসবাসকারী ৪ হাজার লোকের যাতায়াতের চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি তাদের উৎপাদিত ভুট্টা, আখ, পেঁয়াজ, মরিচসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী বাজারে নিতেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। জেগে ওঠা চরে পায়ে হেঁটে চলার মতো রাস্তা না থাকায় গ্রামবাসী দীর্ঘদিন থেকে একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল। গ্রামবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল আলম ও স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জিহাদুর রহমান মওলার উদ্যোগে দুই হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি রাস্তা ও ত্রাণ অধিদপ্তরের একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রকল্প চেয়ারম্যান জিহাদুর রহমান মওলা বলেন, চরাঞ্চলে বসবাসকারী লোকজনের সাথে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে রাস্তাটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। রাস্তাটি নির্মিত হলে মানুষের দুর্দশা লাঘব হবে এবং চলাচলের পথ সুগম হবে। স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, ফুল উদ্দিন, আবুল কাশেমসহ অনেকে জানান, গজারিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বসবাসকারী ৪ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য গ্রামীণ রাস্তার সুবিধা না থাকায় গ্রামবাসীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছিল। রাস্তাটি নির্মাণের ফলে চরাঞ্চলের লোকজন তাদের উৎপাদিত আখ, পেঁয়াজ, মরিচ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন শস্য হাটবাজারে সহজে নিতে পারবে। চরের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাতায়াত সমস্যা দেখা দিয়েছিল। রাস্তাটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে এবং জনদুর্ভোগ অনেকাংশে কমে যাবে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের তারা ধন্যবাদ জানান। গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল আলম সরকার বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া ও উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় রাস্তাটি নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। কাজটি সফলভাবে সমাপ্ত হলে নির্মাণাধীন গজারিয়া আশ্রয় কেন্দ্রের পরিবার ও চরের লোকজন সহজে যাতায়াত করতে পারবে। এদিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল হালিম টলস্টয় ও ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এসময় জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ নিয়মতান্ত্রিকভাবে দ্রæত কাজ শেষ করারও তাগিদ দেন। ফুলছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন কুÐু জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের সরাসরি নিয়ন্ত্রাধীনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির আওতায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের মাধ্যমে গজারিয়া ইউনিয়নের নীলকুঠি এলাকায় ছয় লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে দুই হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি গ্রামীণ রাস্তা ও ১৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে একদিকে যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে অপরদিকে কর্মক্ষম গরিব লোকজন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। রাস্তাটি গজারিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত হবে। প্রকল্পের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে এবং যথাসময়ে শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ