Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সীতাকুণ্ডে গৃহবধূ গণ-ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ৩ আসামি গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ৪:৪৫ পিএম

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : সীতাকুণ্ডের কুমিরায় গৃহবধূ শারমিন আক্তার (৪০) কে গণ-ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার তাদেরকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলো, নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ থানার চরতাকিয়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়ার পুত্র মোঃ জসীম উদ্দিন প্রকাশ বাপ্পী (৩৫), একই এলাকার মৃত গোলাপ মাওলার পুত্র আবদুল মোতালেব লিটন (৪২) এবং সীতাকুণ্ডের বড়কুমিরা কোর্টপাড়া সুতা বেপারী বাড়ির মৃত রহিম উল্লাহর পুত্র সরোয়ার আলম সেরু (৫৫)। বাপ্পী ও লিটন নোয়াখালীর বাসিন্দা হলেও বর্তমানে কুমিরা রেলওয়ে ষ্টেশন কলোনীতে বসবাস করছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সীতাকুণ্ডের কুমিরা ষ্টেশান কলোনীর পূর্ব দিকের পাহাড়ে শারমিন আক্তার (৪০) নামক এক গৃহবধূ খুন হন। দরিদ্র শারমিন পাহাড়ে কাঠ কাটতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে ধর্ষণ ও হত্যা করে পালিয়ে যায়। কিন্তু প্রথম দিন ঘটনাটি কেউ জানতে পারেনি। নিহত গৃহবধূর সন্তানরা তাকে বহু খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার শারমিনের দুই সন্তান স্থানীয়দের নিয়ে পাহাড়ে খুঁজতে গেলে মায়ের লাশ দেখতে পায়। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেম করায়। এ ঘটনায় গত শুক্রবার নিহতের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে উল্লেখ করা হয় কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী তার মাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হওয়ায় তারা খুবই বিরক্ত করত। এসব ঘটনা জানার পর সীতাকু- থানার ওসি মোঃ ইফতেখার হাসান, মামলার তদন্তকারী অফিসার ও ফোর্স নিয়ে অভিযান শুরু করে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- থানার ওসি মোঃ ইফতেখার হাসান প্রতিবেদককে বলেন, হত্যার ঘটনার পর আমরা লাশটি উদ্ধার গিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখতে পাই। এছাড়া লাশটি দেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও ধারনা করি আমরা। পরে ঐ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করে ৩ জনের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তাদের গ্রেপ্তার করি। স্বামী পরিত্যক্তা ঐ গৃহবধূকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় দুষ্কৃতীরা তাকে গণ-ধর্ষণ করে হত্যা করে। গ্রেপ্তারকৃত সবাই পুলিশের কাছে শারমিনকে ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, তারাও দিনমুজুর হিসেবে কাজ করেন। পাহাড়ে শারমিনকে একা পেয়ে তারা ৫জন মিলে ধর্ষণ করে। পরে শারমিন তাদের কথা প্রকাশ করে দিতে পারে চিন্তা করে তাকে খুন করে ফেলেন তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় জড়িত অন্য দুই আসামির নামও পুলিশকে জানিয়েছে তারা। তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নিহত গৃহবধূ শারমিন কুমিল্লা জেলার লাকসাম কাশীপুর পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আবদুর রউফের কন্যা ও একই এলাকার ইসমাইল হোসেনে তরুণের স্ত্রী। তবে স্বামীসহ তিনি সীতাকু-ের কুমিরা রেলওয়ে ষ্টেশান কলোনিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের সংসারে রিয়াদ (৮) ও ইয়াসমিন (১৭) নামক দুটি সন্তান আছে। কিছুদিন আগে স্বামীর সাথে তার ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে একাই বসবাস করছিলেন তিনি। সংসার বাঁচাতে প্রতিদিন পাহাড় থেকে কাঠ কেটে ও জুম চাষ করে সংসার চালাতেন। গত বুধবার এভাবেই কাঠ সংগ্রহের জন্য পাহাড়ে গেলে আসামিরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ