বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাছিম উল আলম : ভরা বসন্তে দেশের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে গ্রীষ্মের আবহাওয়ার সাথে লাগাতর বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত। এবার ‘মাঘের শীত বাঘের গায়’ লাগার আগেই দক্ষিণাঞ্চলে বসন্তের আবহাওয়া লক্ষ করা যায়। আর বসন্তের মধ্যভাগের কয়েকদিনের লাগতার বর্ষণে শত শত কোটি টাকার তরমুজ আর গোল আলুসহ বেশ কিছু রবি ফসল বিনষ্ট হবার পরে এখন দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে তাপমাত্রার পারদ ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাচ্ছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, লঘুচাপের বর্ধিত অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশসহ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার কথাও বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। গতকাল বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়সের কাছাকাছি। সর্বনিম্ন ২৬.৭ ডিগ্রি। আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়া পরিস্থিতির সামান্য পরিবর্তনের কথাও বলা হয়েছে। গতকাল দিনভরই দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে মেঘের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন বৃষ্টি হয়নি।
এবারের শীত মওশুমে শুধুমাত্র একদিন বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হ্রাস পাবার পরে আর কনকনে শীতের দেখা মেলেনি। ১ মাঘের প্রথম দিনের কনকনে শীত পর দিন থেকেই উধাও হতে শুরু করে। এর পরে পুরো মাঘ জুড়েই ছিল বসন্তের আমেজ। ফাল্গুনের শেষভাগে এসে গত ১০-১২ মার্চের কয়েক দফার মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণে ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনার বি¯ৃÍর্ণ এলাকায় গোল আলু ও তরমুজের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফ্তর-ডিএই’র মতে শুধুমাত্র তরমুজেরই ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা। গোল আলুর অবস্থা আরো খারাপ। ভোলাতে এক গোল আলুর চাষি ফসলের ক্ষতি সহ্য করতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। সেখানের পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, বেশীরভাগ গোল আলুই আর জমি থেকে তোলা সম্ভব হয়নি। অনেক চাষির আলু টানা বৃষ্টিতে পচন ধরে জমিতেই নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক চাষিই জমি থেকে আলু তোলারও সাহস করেননি। কারণ এতে শ্রমিকের মজুরির অর্থও উঠবে না। অথচ ডিএই’র বরিশাল আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ভোলা থেকে গোল আলুর ক্ষয়ক্ষতির কোন হিসেব পৌঁছেনি।
দক্ষিণাঞ্চলে এবারে কৃষকদের সর্বশান্ত করে দেয়া এ বৃষ্টিপাতের পর পরই তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ চড়ছে। আর তাপমাত্রার এ বাড়াবাড়ির মধ্যেই বিদ্যুৎ সঙ্কট না থাকলেও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রæটির কারণে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বেশ কষ্টে আছেন। গত দিন পনের ধরেই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট যথেষ্ট অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন থেকে শুরু করে সঞ্চালন লাইনে সমস্যাসহ ১১ কেভি ও ০.৪ কেভি বিতরণ লাইনে গোলযোগ নিয়মিত ঘটনায় পরিনত হয়েছে। সাথে ছোট-বড় সব ধরনের ট্রান্সফর্মারগুলোও বার বার গোলযোগের শিকার। ফলে খোদ বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই বিদ্যুতের হাহাকার শুরু হয়েছে। দূর্ভোগে সাধারণ মানুষ। শিল্প ও ব্যাবসা-বাণিজ্যের অবস্থাও যথেষ্ট নাজুক। গত দু’দিন বরিশালের রূপাতলী ৩৩ কেভি মূল সাব-স্টেশন থেকে পলাশপুরগামী ৩৩ কেভি লাইনে গোলযোগের কারণে রাত-দিন গোটা নগরীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বার বারই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রূপাতলীÑকাশীপুর ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন ও এর সরঞ্জামগুলোতেও গোলযোগ চলছে। ফলে এসব সঞ্চালন লাইন বার বার ট্রিপ করায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। এমনকি বুধ ও বৃহস্পতিবার রূপাতলীÑপলাশপুর ৩৩ কেভি লাইনে গোলযোগের কারণে কয়েক দফায় বরিশাল গ্রিড সাব-স্টেশনটিই বন্ধ হয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।