বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এ.টি.এম. রফিক ও আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : চৌত্রিশটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় ইসলামী মহাজোট গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। যদিও ওই মহাজোটে নাম নেই তার পার্টির। তবে জোটের নেতৃত্বে পেলে খুশি হবেন বলে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের বাইরে জাতীয় ইসলামী মহাজোট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে সর্বত্র। বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের সমন্বয়কের ভ‚মিকা পালনকারী জাতীয়পার্টির-ই জনপ্রতিনিধিত্ব নেই তৃণমূলে। আর সরকার বিরোধী দল-মতের কেউ এ জোট নিয়ে ভাবছেনই না বলে জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এইচ এম এরশাদ ২০০১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ঐক্য ফ্রন্ট গড়ে ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। ২০০৭ সালে বাতিল হওয়া সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বিএনপির বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে আলাদাভাবে অংশ নিলেও পরে সরকারে যোগ দেয়। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূতরে পদ মর্যাদাও পান।
গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইসলামী জনকল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী লীগ, গণ-ইসলামিক জোট, বাংলাদেশ ইসলামিক লিবারেল পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, মুসলিম জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী পার্টি, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তুল ওলামা পার্টি, জাতীয় ইসলামিক মুভমেন্টসহ জাতীয় ইসলামী মহাজোটভুক্ত ৩৪টি দলের নেতাদের উপস্থিতিতে জাতীয় ইসলামী জোট গঠন এবং আগামী নির্বাচনে জোটগতভাবে প্রার্থী দেবার ঘোষণা দেয়া হয়। যদিও তৃণমূলে জনপ্রতিনিধিত্ব-ই নেই জাতীয়পার্টির। আর উপরোক্ত সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কার্যালয়, সাংগঠনিক কাঠামো বা অস্তিত্ব নেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে। তবে ওই সংবাদ সম্মেলনে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ চৌত্রিশ দলের সমন্বয়ে গড়া জাতীয় ইসলামী মহাজোট প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘মহাজোটকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলে স্বাগত জানাব।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি (আ’লীগ নেতৃত্বাধীন) মহাজোটে নেই। জাতীয় পার্টি এখন বিরোধীদল। সংবাদ সম্মেলনে জোটের আহŸায়ক আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক বলেন, যোগ্য প্রার্থীর সন্ধানে শিগগিরই মাঠে নামবে জোট।
সূত্রে জানা গেছে, পল্লীবন্ধু খ্যাত সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদের জাতীয়পার্টি (জাপা) ২০১৪ সালের অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদ, ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনে খুলনা অঞ্চলে অংশগ্রহণ করেনি। গেল বছর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাপার প্রার্থী ছিল না খুলনা অঞ্চলে। যদিও জাতীয় পার্টি সরকারের একাধিক মন্ত্রীত্ব ও জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে বিরোধী দলে অবস্থান করছে।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা শফিকুল ইসলাম বলেন, তৃণমূলে জাতীয়পার্টির প্রতিনিধিত্ব কতখানি তা সময় বলে দেবে। আগামী নির্বাচনে জাতীয়পার্টি জাতীয় ইসলামী জোটকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও খুলনা জেলা শাখার সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, জোটের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। জোট হলে ভাল, শক্তি বাড়ল। তৃণমূলে জনপ্রতিনিধিত্ব নেই এতে কোনো সমস্যা নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অন্তত শক্তিশালী বিরোধী দল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি’র নেতারা এখনি জাতীয় ইসলামী মহাজোট সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাইছেন না। তবে নাম প্রকাশ না করে খুলনার একাধিক নেতা বললেন, এরশাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন ফ্যাক্টর নন। তার জোট নিয়ে দেশের মানুষ আর এখন ভাববে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।