Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী শিক্ষার অভাবেই জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে-যুব কনভেনশনে পীর সাহেব চরমোনাই

মঙ্গল শোভাযাত্র বাতিল ও মূর্তি অপসারণ করতে হবে

প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ১ এপ্রিল, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সমাজ আজকে নীতি-নৈতিকতাহীন, বস্তুতান্ত্রিক সফলতার চিন্তায় বিভোর। মানুষ বল্গাহীন দুর্নীতি, হত্যা, পাপাচার এবং দুুরাচারে লিপ্ত হচ্ছে। শাসক গোষ্ঠী ক্ষমতাকে লুণ্ঠনের অধিকার মনে করছে। রাজনীতিকে সেবা নয়; বরং শোষণের হাতিয়ার বানিয়েছে। জাতি ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ছুটে চলছে। এ ধরণের সংকট মোকাবেলার জন্য বাংলার যুব সমাজকে জেগে উঠতে হবে। জাতির হাজার বছরের মুক্তির স্বপ্ন যুবকদের কাঁধে অর্পিত হয়। যুবসমাজকে সুষ্ঠু পথে পরিচালিত করা গেলেই দেশ সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে। তাই তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষাসহ ইসলামী শিক্ষার জ্ঞানে শিক্ষিত এবং তাদের সুষ্ঠ পথে পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার রোধে অবিলম্বে ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন ২০১৬ অবিলম্বে বাতিল করে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামিক স্কলারদের সাথে নিয়ে এগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে হবে। জঙ্গিবাদ বন্ধে, জঙ্গি কার্যক্রমের উস্কানিদাতা এবং অর্থদাতাদের চিহ্নিত করে ওদের বিরুদ্ধে দ্রæত কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী কওমি শিক্ষার স্বকীয়তা রক্ষা করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, এদেশের মুসলিম যুবকেরা জ্ঞানের অভাবে এবং পশ্চিমা অপপ্রচারের কারণে ইসলামকে বাদ দিয়ে একদিকে কুফরি গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে। অপরদিকে ভ্রান্তমতবাদে আকৃষ্ট হয়ে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হচ্ছে জান্নাত পাওয়ার মিথ্যা আশায়। এ পথ থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাজী বশির মিলনায়তনে আয়োজিত ইসলামী যুব আন্দোলনের ১ম যুব কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যুব কনভেনশনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজার হাজার নেতা কর্মী অংশ নেন।
কেন্দ্রীয় আহŸায়ক কেএম আতিকুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন-এর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল-ফরিদি, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব আলহাজ আমিনুল ইসলাম, বিকল্প যুব ধারার সাধারণ সম্পাদক মির্জা আসাদুজ্জামান বাচ্চু, জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জি. আশরাফুল আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইশা ছাত্র আন্দোলন, ইসলামি শ্রমিক আন্দোলন, ইসলামি মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ, ইসলামি আইনজীবী পরিষদ, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আজো পায়নি। অথচ ইসলামকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার পূর্ণ সুযোগ রয়েছে। আর এজন্য সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি পরিহার করে যুবকদেরকে আদর্শিক রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সাথে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামের নামে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাÐ দ্বারা মানুষ হত্যা করে ইসলামকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। এসব অপকর্মের স্থান ইসলামে নেই। এগুলো প্রতিহত করে ইসলামের সঠিকরূপ তুলে ধরার জিম্মাদারি গ্রহণ করতে হবে দায়িত্বশীলদের।
পীর সাহেব চরমোনাই তার ভাষণে বলেন, ভারতের সাথে প্রস্তাবিত সামরিক চুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। ভারত যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থসংশিষ্ট পূর্বেকার চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন করতেই আন্তরিক নয় সেখানে কিভাবে একটি নতজানু চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়া হতে পারে? তিনি বলেন আজও এদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে ভিনদেশি প্রভুরা।
দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন ইসলামের আক্বীদা বিরোধী হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অন্যতম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ। এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে ইসলাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইসলামে মূর্তি কিংবা যেকোন প্রাণির ভাস্কর্য নিষিদ্ধ। কিন্তু এদেশের হাতে গোনা কয়েকটি নাস্তিকের চক্রান্তে ইসলাম ও দেশবিরোধী এই চক্রান্ত কোনোভাবেই সহ্য করা হবেনা। এখনো সময় আছে সরকারকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ করতেই হবে। যদি মূর্তি অপসারণ না করা হয় তবে সারাদেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। আর উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির নামে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে পালন করতে নির্দেশ প্রদানকরা হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের পূজার একটি অংশ। পূজা করার নির্দেশ দিয়ে সরকার আজ বাংলাদেশের মুসলমানের হৃদয়ে চরমভাবে আঘাত দিয়েছে। দিল্লির সংস্কৃতি এই বাঙলার জমিনে চলতে দেয়া হবে না। এ চুক্তি থেকে বিরত না থাকলে আগামী ২১ এপ্রিল মহাসমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
কমিটি ঘোষণা : সম্মেলন শেষে তিনি ইসলামী যুব আন্দোলনের এর চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে চলমান সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নবগঠিত কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম আতিকুর রহমান, সহ-সভাপতি প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা নেছার উদ্দিন এর নাম ঘোষণা করে শপথ বাক্য পাঠ করান।



 

Show all comments
  • হাসান আল মামুন ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৪ এএম says : 1
    ঠিক, যার প্রকৃত ইসলাম, কোরান, হাদিস জানে তারা কখন ও জংগী হতে পারেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Alam Kibria ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৭ এএম says : 0
    পীর সাহেব পৃথিবীর কোথাও বাংলাদেশের মত এত পীর মুরিদ নাই। বাংলাদেশে এত আলেম ওলামা আছে তারপরও এতসব জংগি কেন? আসলে ইসলামের প্রকৃত শিক্কা থেকে এইদেশের যুবসমাজ অনেক দুরে চলে গেছে। আর এইজন্য এইদেশের আলেমরা অনেকটা দায়ি কারন তাদের মধ্যে ঐক্য নাই
    Total Reply(0) Reply
  • Arif Billah ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৮ এএম says : 0
    100% right
    Total Reply(0) Reply
  • আরিফ মাহমুদ ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৯ এএম says : 0
    সঠিক কথা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Mutahar Bhuiyan ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৯ এএম says : 0
    একমত
    Total Reply(0) Reply
  • আরিফুর রহমান ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:২৪ এএম says : 0
    এই ধরনের নিকৃষ্ট প্রশাসনিক নির্যাতন বন্ধ করুন
    Total Reply(0) Reply
  • আবু সাঈদ ১ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:২৫ পিএম says : 0
    সঠিক নেতা পাইছি ভাই,পীর সাহেব চরমোনাই
    Total Reply(0) Reply
  • omar faruk ১ এপ্রিল, ২০১৭, ৫:৪২ পিএম says : 0
    ইসলামী শিক্ষার অভাবেই আজকে জঙ্গীবাদ। ইসলামী শাসন না থাকার কারণেই আজ সব ক্ষেত্রে দূর্নীতি, নৈরাজ্য আর অরাজকতা। সর্বক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষা থাকলে আর ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেই বাংলাদেশ একটি জঙ্গীমুক্ত, দূর্নীতি, নৈরাজ্য আর অরাজকতা মুক্ত শান্ত, সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • ৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০৫ পিএম says : 0
    পীর সাহেব চরমোনাইয়ের কথার সাথে একমত
    Total Reply(0) Reply
  • রহমত ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ৪:২৫ পিএম says : 0
    yes 1000% ঠিক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ