Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাঙ্গুনিয়ায় নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে ৮ গ্রাম

বাস্তবায়ন হয়নি ভাঙনরোধ প্রকল্প

| প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে : বংশের পূর্ব পুরুষরা কৃষি জমিতে চাষ করে বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদন করে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটিয়েছেন। গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ ও সবুজ মাঠে বহুজাতিক সবজি চাষের বিপ্লব হতো। এখন সেই কৃষি জমির ওপর পানি থৈ থৈ করছে। কৃষকের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে কর্ণফুলী নদী। কোদালার ৮টি গ্রামের একাধিক কৃষকের শত শত একর জমি কালক্রমে খর¯্রােতা নদীগর্ভে চলে গেছে। কর্ণফুলী নদীর তীরে অবাক দৃষ্টিতে থাকিয়ে ‘ভাঙনরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন’ না হওয়ায় আক্ষেপ করে বলেন, রাঙ্গুনিয়া সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার অদূরে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার কোদালা সেনপাড়ার ৬৫ বছরের কৃষক পরিমল সেন। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৫ বছর। বিগত দিনগুলোতে অনেক সরকার পরিবর্তন হয়েছে। ভোট আসলে অনেক রাজনৈতিক নেতা আমাদের আশ্বস্ত করেন। নির্বাচিত হলে নদী ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেবেন। কই কেউ তো কথা রাখেননি। ভাঙনরোধ না হওয়ায় বাড়িভিটাসহ ৮০ শতক কৃষি জমি রাক্ষুসে নদী গিলে খেয়েছে। ধোপাঘাট নদীর পাড়ে কথা হয় ৫৫ বছরের কৃষক মো. নাজিম উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, প্রায়ই এক একর জমি কেড়ে নিয়েছে নদী, আর আছে মাত্র দুই শতক। সেই জমিতে মরিচ চাষ হচ্ছে। এই জমি চলে গেলে একেবারে নিঃস্ব হয়ে যাব। আমরা কি সরকার থেকে নাগরিক হিসেবে ন্যায্য সুবিধা পেতে পারি না। আমাদের (কৃষকের) বুকফাটা কান্না সরকারের কানে পৌঁছাবে না। ভাঙনরোধ করা গেলে একাধিক কৃষকের জমি রক্ষা হবে। কৃষক মো. হামিদুর রহমান জানান, কয়েক বছর ধরে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক বছরে তার এক একর কৃষি জমি নদীর গর্ভে হারিয়ে গেছে। তালুকদার বাড়ির নির্মল কান্তি দের বসতঘর যে কোনো মুহূর্তে নদীর পেটে চলে যাবে। কোদালা ধোপাঘাটের এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে সাতঘর পাড়া, শীলপাড়া, তালুকদার বাড়ি, সেন বাড়ি, বল বাড়ি, ব্রাহ্মণ বাড়ি, মুসলিম বাড়ি ও পূর্ব পাড়ার হিন্দু বাড়িসহ প্রায় ৩০০ পরিবার ভাঙনের মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানা গেছে। সেনপাড়া গ্রামের অশোক কুমার শীল জানান, সেনপাড়ার একমাত্র শ্মশানহোলা ভাঙনের মুখে পড়েছে। ৮/১০ ফুট মাটি সরে গেলে নদীর তলদেশে চিরতরে হারিয়ে যাবে শ্মশান ও সেনপাড়া পুকুর। পুকুর নদীর সাথে মিছে গেলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে দক্ষিণ ধোপাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোদালা পুলিশ ফাঁড়ি ও সেনপাড়া গ্রাম। কোদালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম মাস্টার জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমে ভাঙনরোধ করা না গেলে কোদালার একাধিক গ্রাম কর্ণফুলী নদী বিলীনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২ সে.মি. এলাকা প্রতিরোধ ও ১২ সে.মি. অনুমোদন হয়েছে। বরাদ্দের অভাবে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে বদিউল আলম মাস্টার জানিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ ২টি সরকারি স্থাপনা ও ৮টি গ্রাম রক্ষায় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ