Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিন উপজেলার সহস্রাধিক কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে একটি হিমাগার

| প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : গোপালগঞ্জে বিএডিসির আলুবীজ হিমাগার ৩ উপজেলা সহস্রাধিক কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। এ জেলায় বিএডিসি আলুবীজ হিমাগার স্থাপন করার পর গত ৩ বছর ধরে বিএনডিসির বীজ উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় আলুবীজ আবাদ করে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া ও বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার সহস্রাধিক চাষি ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। বিএডিসি কৃষককে ফাউন্ডেশন আলু বীজ, সার ও ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে কৃষককে দিয়ে আলু বীজের চাষ করায়। তারপর বিএডিসি কৃষকের কাছ থেকে বাজারে আলুর মূল্যের তুলনায় ৩০% বেশি মূল্য দিয়ে আলুবীজ কিনে নেয়। এ বীজ পরবর্তী বছরের বীজ হিসেবে হিমাগারে সংরক্ষণ করে। খাবার আলুর তুলনায় বীজ আলু আবাদে কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছেন। এ কারণে প্রতি বছরই লাভজনক আলু বীজ আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোপালগঞ্জের মাঠ থেকে কৃষকের আলু সংগ্রহের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন তারা হিমাগারে আলুবীজ সরবরাহ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গোপালগঞ্জ বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে গোপালগঞ্জে ২ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন আলুবীজ হিমাগার স্থাপন করে বিএডিসি। প্রথম বছর গোপালগঞ্জ অঞ্চলে ২৫ একর জমিতে বীজ আলুর আবাদ করে কৃষক। উৎপাদন করে ১৩৮ মেঃ টন আলুবীজ। দ্বিতীয় বছর আলু বীজ আবাদ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৬০ হেক্টরে। উৎপাদিত হয় ৩৩৮ মেঃ টন। এবছর ১৫০ একর জমিতে আলুবীজের আবাদ করা হয়। উৎপাদিত হয়েছে ৭৫০ মেঃ টন। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া সিকিপাড়া গ্রামের কৃষক মন্টু মোল্লা বলেন, বিএডিসি আলুবীজ, সার ও ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে। তারপর তাদের পরামর্শে বীজআলু চাষ করি। আগে এ জমিতে খাবার আলু চাষ করতাম। খাবার আলুর তুলনায় বীজ আলু চাষে একরে ৪০ হাজার টাকা বেশি লাভ হয়। তাই প্রতিবছর লাভজনক বীজ আলুর চাষ আমরা বাড়িয়ে দিচ্ছি। গত বছর এ গ্রেডের আলু বীজের দাম পেয়েছি প্রতি কেজিতে ১৯ টাকা। আর বি গ্রেডের দাম পেয়েছি ১৮ টাকা। আশা করছি এ বছর আরো বেশি দাম পবো। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব নিজড়া গ্রামের নজরচল ইসলাম সরদার (৫০) বলেন, ৩ বছর ধরে বীজ আলু চাষ করে ভালোই লাভ হচ্ছে। এ বছর ১ একর জমিতে বীজ আলু চাষ করেছি। আবাদে খরচ হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। বিক্রি হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হবে ৬৫ হাজার টাকা। এ কারণে আমাদের এলাকার কৃষক আলুবীজ আবাদে ঝুঁকছেন। আলু চাষি অনাদী বাছাড় ও পরিমল বিশ্বাস বলেন, বিএডিসি আমাদের দিয়ে আলু বীজ উৎপাদন করায়। তারপর তারা কিনে নেয়। আলুবীজ আমাদের এলাকার একটি নতুন ও লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। গোপালগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক দিপংকর রায় বলেন, গোপালগঞ্জ বিএডিসি হিমাগারে ২ হাজার মেঃ টন আলুবীজ ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। এ বছর এখানে সাড়ে ৭শ’ মেঃ টন আলুবীজ উৎপাদিত হয়েছে। বাদ বাকী আলুবীজ অন্য জেলা থেকে এনে সংরক্ষণ করা হবে। এ জেলায় কৃষকের আলুবীজ উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে কৃষক আলুবীজ আবাদ সম্প্রসারিত করে আরো লাভবান হতে পারবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ