Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরিপূর্ণ গণতন্ত্রের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার যাত্রা কুমিল্লা থেকে শুরু হবে : সিইসি

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার মধ্যদিয়ে কুমিল্লা থেকে পরিপূর্ণ গণতন্ত্রের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার যাত্রা শুরু হবে এবং এ নির্বাচন দেশ-বিদেশে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
গতকাল শনিবার সকালে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যে সিইসি আগামী পাঁচ বছর এদেশে গণতন্ত্রের চর্চা প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে বলেন, অতীতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ পরিস্থিতি যেভাবেই হোক কখনো কখনো কোথাওনা কোথাও কিছু ত্রæটি, কিছু বিতর্কিত হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। প্রতিটি গণতন্ত্রমনা মানুষ আশা করে এদেশে পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসুক। সিইসি নূরুল হুদা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সিটি নির্বাচনে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। ভোটকেন্দ্রে থাকবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা। ভোটকেন্দ্রে কোন অন্যায়, অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান, বিজিবি কমিল্লা অঞ্চলের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গাজী মো. আহসানুজ্জামান, কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, র‌্যাব-১১ কুমিল্লা অঞ্চলের কমান্ডিং অফিসার মোস্তফা কায়জার, আনসার ভিডিপি কুমিল্লা জেলা কমান্ডার মো. শফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে নির্বাচনের সার্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর কুসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই প্রথম কুমিল্লা নগরীতে পা রাখেন একেএম নূরুল হুদা। ইতিপূর্বে ৯৫ সালের দিকে তিনি কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছিলেন। কুমিল্লার পরিবেশ, কুমিল্লার মানুষের সবকিছু সম্পর্কে তাঁর বেশ ধারণা রয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, সিটি নির্বাচনে এখানকার মানুষের সহযোগিতা চাই। কোনো অন্যায় আবদার করবেন না। কোনরকম বিশৃঙ্খলা করবেন না। কুমিল্লার সুনাম রক্ষা করুন। নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর রাখতে সচেষ্ট থাকুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসারদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনী দায়িত্ব একটি পবিত্র দায়িত্ব। সিইসি বলেন, অতীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। এবারে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আমর্ড পুলিশ, আনসারের সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারদের কয়েকজন অতীতের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা থেকে জানান, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে প্রভাবশালী প্রার্থী ও তাদের লোকজনের পেশীশক্তির কারণে ভোটকেন্দ্রে তারা অসহায় হয়ে পড়েন। প্রভাবশালীদের কারণে পুলিশও নিরব ভুমিকায় থাকে। এমন অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে প্রিজাইডিং অফিসাররা এবারের নির্বাচনে ওই অবস্থা সৃষ্টি হলে তার করণীয় বিষয়ে সিইসির কাছে দিকনির্দেশনা প্রত্যাশা করেন। প্রিজাইডিং অফিসারদের এমন প্রশ্নে আলোকে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, আজকের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসার কর্মকর্তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতর নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই কেউ কোথাও কোনো ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাৎক্ষণিক জানালে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর নির্বাচন কমিশন সচিব আপনাদেরকে একটি মোবাইল ম্যাসেজ নম্বর দেবেন, এটিতে কোনো সমস্যা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিলে তা কমিশন সচিব পরামর্শ দিকেনির্দেশনাসহ যাবতীয় পদক্ষেপ তাৎক্ষণিক গ্রহণ করবেন। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রভাবশালী ব্যক্তি হলেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। এর বাইরে এখানে কোন নেতা বা প্রভাবশালী কেউ হস্তক্ষেপ, প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রার্থী, ভোটার ও সাধারণ জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা চাই। এ নির্বাচনে কমিশনের পছন্দের কোনো প্রার্থী নেই। আমরা চাই এ নির্বাচনে জনগণের রায় প্রতিফলিত হোক। কুমিল্লা সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কমিশন সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভোটাররা নির্ভয়ে নির্বিঘেœ ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে। নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে এ নির্বাচনে। কমিশনের কাছে এ নির্বাচন অত্যন্ত অর্থবহ ও গুরুত্বপূর্ণ।



 

Show all comments
  • কাজল ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩১ এএম says : 0
    সেরকমটাই হোক সেটা আমাদের সকলের প্রত্যাশা।
    Total Reply(0) Reply
  • Sarder Akther ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪১ এএম says : 0
    হলে তো ভাল
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ