রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : শিবগঞ্জে হাত বাড়ালেই কম খরচে মিলছে হেরোইন। উপজেলার প্রত্যন্তাঞ্চলে প্রায় একশ’ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে এ হেরোইনের ব্যবসা। মাদকাসক্ত হচ্ছে উঠতি বয়সের কিশোর-যুবকেরা। উদ্বিগ্ন হচ্ছে অভিভাবকরা। তবে প্রশাসনের দাবি, অভিযানের কারণে হেরোইনের ব্যবসা ও সেবীদের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তথ্য অনুসন্ধানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন হেরোইন ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এক ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় একশ’ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে উপজেলার প্রায় শতাধিক বাজারে হেরোইনের রমরমা ব্যবসা চলছে। আর এসমস্ত সিন্ডিকেটের আড়ালে রয়েছে বড় বড় রাঘব-বোয়াল। যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে সহায়তা করে। প্রতি ইউনিয়নেই তৈরি হয়েছে হেরোইনের শক্ত সিন্ডিকেট। হেরোইন বহন করা সহজসাধ্য হওয়ায় সহজে ধরা পড়ছে না হেরোইন ব্যবসায়ীরা। দু-চারজন ছোট ব্যবসায়ী ধরা পড়লেও বড় ব্যবসায়ীরা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আবার তারাও কিছুদিন জেল খেটে বের হয়ে আবারো এ ব্যবসাতে মেতে উঠছে। সূত্রগুলো জানায়, উন্নতমানের ১শ’ গ্রাম হেরোইন ভারতীয় ৭০ হাজার রুপিতে ক্রয় করে তাতে একই রংয়ের আরো কয়েকগুণ বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের নেশার ট্যাবলেট গুঁড়া করে মিশিয়ে প্রতি এক গ্রামে একটি করে প্যাকেট তৈরি করে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করছে। সে মোতাবেক প্রতি প্যাকেটে লাভ হচ্ছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টাকা করে। আর হেরোইন বিক্রির নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে উপজেলার ছোট বড় প্রায় শতাধিক হাট বাজার। তারমধ্যে মনাকষা বাজার সবার ঊর্ধেŸ। যারা বড় ধরনের ব্যবসায়ী তারা ভারতীয় ৭০ হাজার রুপিতে একশ’ গ্রাম হেরোইন ক্রয় করে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ হয়। তারা আবার পাইকারি হারে বিক্রি করে দুই লাখ টাকায়। আর যারা খুচরা বিক্রি করছে তারা পাচ্ছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। তবে ৫ লাখ টাকা হেরোইন খুচরা বিক্রি করতে সময় বেশি লাগে। কোনো খুচরা বিক্রেতাই দিনে অতিরিক্ত ২০ থেকে ২৫ প্যাকেটের ঊর্ধেŸ বিক্রি করতে পারে না। সূত্রটি আরো জানায়, যদিও শিবগঞ্জ মাদকের জন্য খ্যাত তবুও বিশেষ করে হেরোইন উপজেলার কোনো সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে না। প্রবেশ করে রাজশাহী শহরের উত্তরে ভারতের কৃষ্ণনা জেলার পালশা থানা থেকে প্রথমে চোরাইভাবে রাজশাহীতে এবং সেখান থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী সেজে এক ধরনের কামলারা বহন করে শিবগঞ্জে নিয়ে আসে। বহনকারীদের যাতায়াত ও খাওয়া খরচ বাদে এক হাজার টাকা করে দেয়া হয়। যদি কেউ প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে প্রকৃত মালিকের নাম গোপন রাখতে পারে। তাহলে ধরাপড়া ব্যক্তির মামলা ও পারিবারিক খরচের অর্ধেক বহন করে এবং ছাড়া পাওয়ার পর বাকি অর্ধেক খরচ কমিশন আকারে ছাড় দেয়। ফলে হেরোইন ব্যবসায়ীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, হেরোইন ব্যবসায়ীরা নিজে নেশা করেন না। কারণ হেরোইন নেশা করলে শরীর দিন দিন দুর্বল হয়ে যায়। পুরুষত্ব হারিয়ে যায় এবং জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। আর একবার হেরোইনের নেশা হলে মৃত্যুর আগে ছাড়তে পারে না। প্রয়োজন মতো নেশা করতে না পেরে নিজের শরীর নিজেই কামড়াবে। সূত্রটি জানান, প্রকৃত হেরোইন উৎপাদন হয় আফগানিস্তানে। সেখানে থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশ আসতে এক কেজি হেরোইনের মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা হবে। ভারতে এর মূল্য ৩০ লাখ রুপি এবং ওই হেরোইন অতিরিক্ত দাম হওয়ায় কেউ ক্রয় করে না। তাই নকল হেরোইন আমদানি হয়ে থাকে। এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রমজান আলী গত এক বছরে আটককৃত হেরোইন ব্যবসায়ী ও সেবীর সংখ্যা এবং কি পরিমাণ হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে তা জানাতে না পারলেও সা¤প্রতিককালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অনেক নেশাগ্রস্তদের জেলে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকার কারণে হেরোইনের ব্যবসা দিন দিন কমছে। সেই সঙ্গে কমছে নেশাগ্রস্তদের সংখ্যাও। অল্পদিনের মধ্যেই শিবগঞ্জ মাদকমুক্ত উপজেলা হিসাবে পরিচিতি লাভ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।