Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান, আতিয়া মহল থেকে নারী ও শিশুসহ ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে

সিলেট থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৯ এএম | আপডেট : ১:০০ পিএম, ২৫ মার্চ, ২০১৭

সিলেট থেকে স্টাফ রিপোর্টার : ঝড়বৃষ্টির মধ্যে সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চলছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার একটু পরই সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এই অভিযান শুরু হয়। সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা এ কথা জানান।

আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকাল ১০টার দিকে আতিয়া মহলে আটকে পড়া লোকজনের মধ্যে প্রথমে চার নারীকে বের করে আনা হয়।

তারা জানান, এরপর শিশুসহ ৯ জনকে বের করে আনা হয়। পরে দুই শিশুসহ আরও ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে পৌনে ১১টার দিকে ১৪ জন এবং ১১টার পর আরও ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়।

কর্মকর্তারা জানান, বেলা পৌনে ১২টার দিকে দুই শিশু ও দুই নারীকে বের করে আনা হয় ওই ভবন থেকে। এরপর আরও একজনে বের করে আনা হয়। পরে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আরও ১২ জনকে উদ্ধঅর করা হয়। ওই ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া সবাইকে পাশের একটি বাড়িতে রাখা হয়েছে।
নারী ও শিশুসহ ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে

সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে পরপর দুটি গুলির শব্দ শোনা গেছে। এরপর আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি। সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকার ‘আতিয়া মহল’ থেকে নারী-শিশুসহ ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিলো। শনিবার সকাল ৯টার দিকে দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি উস্তার মিয়ার মালিকানাধীন ভবন ‘আতিয়া মহলে’ এ অভিযান শুরু হয়।


এদিকে, সকাল পৌনে ৮টার দিকে আতিয়া মহলের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আতিয়া মহলের এক কিলোমিটারের মধ্যে সাংবাদিকসহ কাউকে অবস্থান করতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আশপাশে রাখা হয়েছে সাজোয়া যান, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি।


সেনাবাহিনীর আর্মি ইনটেলিজেন্সের ওই কর্মকর্তা সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিকদের জানান, ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে এই অভিযান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে হচ্ছে। পুলিশ ও সোয়াট সহায়তা করছে। সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা মূল অভিযান চালাচ্ছেন। ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

ঝড়ের সময় ওই এলাকার আশপাশ কিছুক্ষণের জন্য অন্ধকার হয়ে যায়। সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে সে সময় আশপাশের বাড়িতে টর্চলাইট খুঁজতে দেখা যায়।

এলাকার জনসাধারণ ও সংবাদকর্মীকে ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সরে যেতে বলা হয়েছে। এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে সকাল আটটার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ফোর্স। সকাল নয়টার দিকে জানা যায়, তারা সেখানে অভিযান চালানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের সাঁজোয়া যান ও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।

গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় চালানো অভিযানেও অংশ নিয়েছিল সিলেটের জালালাবাদ থেকে যাওয়া সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল।

জঙ্গিরা অবস্থান করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পাঁচতলা বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিনভর বারবার মাইকে আহ্বান জানিয়েও ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করাতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ভেতর থেকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। অভিযান চালাতে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটের একটি দল গতকাল বিকেলে সিলেটে পৌঁছায়। রাতভর বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। গতকাল সন্ধ্যার পর সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশের ধারণা, আতিয়া মহল নামের বাড়িটির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অবস্থান করছে। ভেতরে একজন নারী থাকার কথা নিশ্চিত হলেও মোট কতজন আছে, সেটা জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, ভেতরে নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাইনুল ওরফে মুসা রয়েছেন।

আতিয়া মহল নামের পাঁচতলা ওই বাড়িতে মোট ২৯টি ফ্ল্যাট রয়েছে।



 

Show all comments
  • Nazim Mahamud ২৫ মার্চ, ২০১৭, ১:৫০ পিএম says : 0
    ইসলামের শত্রুরাই এই জংগীদের গটফাদার,এরা কখনই মুসলিম হতে পারেনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ