রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ না করে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ১৯১নং মধ্য আমড়াগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র শিকদার স্কুল ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়া সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভুয়া ভাউচার দাখিল করেন। অর্থ আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হলে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রমানন্দ মিস্ত্রি ও স্থানীয় অভিভাবকরা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৯১নং মধ্য আমড়াগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র শিকদার ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিদ্যালয়ের লেট্রিন সংস্কার, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি কক্ষ মেরামত বাবদ ২৫ হাজার এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ¯িøপের (বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা) ৪০ হাজার, রুটিন মেরামত বাবদ ৫ হাজার, শ্রেণি কক্ষ মেরামত বাবদ ৫ হাজার মোট ৮০ হাজার টাকা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাথে অবহিত সভা না করে ও সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হাওয়ার পূর্বেই বর্তমান কমিটির সভা ছাড়াই শিক্ষার্থী অভিভাবকদের না জানিয়ে তফসিল ঘোষণা ছাড়াই আপন চাচা শরৎ চন্দ্র শিকদারকে সভাপতি করে একটি বেআইনিভাবে পকেট কমিটি গঠন করেন। সরেজমিন গেলে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দুটি লেট্রিনের স্টিলের দরজার ৮ হাজার করে ১৬ হাজার টাকার ভাউচার সংশ্লিষ্ট অফিসে দাখিল করে সমুদয় টাকা উত্তোলন করলেও দরজা দুটি আগের মতো সংস্কারহীন পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ফলে লেট্রিন দুটির দরজা ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ওই লেট্রিন ব্যবহার করতে পারছে না। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ¯িøপের ৪০ হাজার এবং রুটিন ও শ্রেণিকক্ষ মেরামতের ১০ হাজার টাকা ভুয়া ভাউচার দাখিল করে সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেছেন বলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় অভিভাবকরা জানান। সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা হলেও সম্মুখ ভাগে এখনো রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখা রয়েছে। স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কনক প্রভাকে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিদ্যালয়ের ফলাফল হতাশাজনক ও স্কুলের শিক্ষার্থী উপস্থিতি দিন দিন কমে গেছে। যদিও এইউইও কনক প্রভা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনিয়মের সময় আমি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলাম। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সভাপতি প্রমানন্দ মিস্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, গত ৩ বছর সভাপতি থাকাকালে এই বিদ্যালয় যে সরকারি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে তা আমার জানা ছিল না। প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র শিকদার বিভিন্ন সময় আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। যা আমি স্থানীয় এমপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমিন জানান, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমপি বরাবরে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যালয়টি সরেজমিন তদন্ত করি। তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় যে, ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে প্রধান শিক্ষক সরকারি টাকা উত্তোলন করেছে। এ ছাড়া কমিটি গঠনে অনিয়ম পাওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষকের গঠন করা পকেট কমিটি বাতিল করে তফসিল দিয়ে পুনরায় কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র শিকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।