Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচন : দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট

| প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা উত্তর থেকে : বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুমিল্লা-২ আসনের তিতাস উপজেলা। এই উপজেলার রাজনীতিতে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন। আগামী ১৬ এপ্রিল জিয়ারকান্দি ইউনিয়নে উপনির্বাচন অনুষ্ঠান হবে। গেল বছরে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে এখান থেকে নৌকা মার্কা নিয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মনির হোসাইন সরকার বীনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। একই বছরের ৮ নভেম্বর সকালে একদল সন্ত্রাসী কুপিয়ে ও গুলি করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মনির হোসাইন সরকার ও তার শ্যালককে নির্মমভাবে খুন করে। ফলে জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শূন্য হয়ে যায়। আলোচিত জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন উপনির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হাক-ডাক দিয়ে মাঠে নেমেছে। প্রার্থীরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে গভীর রাত পর্যন্ত গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সাথে উঠান বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনের ভোটের মাঠের দৃশ্যপট ততই বদলে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে ভোটের হিসাব-নিকাশও। ভোটাররা প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন এবং প্রার্থীদের বিগত দিনের কর্মকা- নিয়ে হিসেব কষছেন। পাশাপাশি এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা এমন শঙ্কাও প্রকাশ করছেন ভোটাররা। সবমিলে এখানে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীরা হলো- উপজেলা আ.লীগের কোষাধ্যক্ষ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলী আশরাফ (আওয়ামী লীগ), দুই মেয়াদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ এমদাদ হোসেন আখন (বিএনপি), মোঃ কবির হোসেন সওদাগর (জাতীয় পার্টি), গোলাম সারোয়ার সরকার (স্বতন্ত্র) ও আনোয়ার হোসেন (স্বতন্ত্র)। গোলাম সারোয়ার আওয়ামী লীগের মনোনয়র প্রত্যাশী ছিল। দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এদিকে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে এক প্রার্থীর সমর্থকরা তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে অব্যাহত নানাভাবে চাপ দিয়ে বেড়াচ্ছে। এমনকি বিএনপি দলীয় প্রার্থীর পরিবারের লোকজন ভীতিকর অবস্থায় দিন-যাপন করছে বলেও অভিযোগ করেছে পরিবারের পক্ষ থেকে। এতে করে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। প্রার্থী এমদাদও এলাকায় নেই, তার ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মোটকথা এই উপনির্বাচনকে ঘিরে এক অজানা অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে তিতাসে। ফলে এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে কিনা তা নিয়ে সান্দিহান তিতাসের রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল। গত নির্বাচনেও এখানে কাউকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। তিতাসবাসী সকল প্রার্থীকে সমান সুযোগ দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। এদিকে আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। তবে কথা থাকে যে, বিএনপি দলীয় প্রার্থী যদি কোন কারণে  মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয় তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আ.লীগের আলী আশরাফ ও জাতীয় পার্টির কবির হোসেন সওদাগরের মধ্যে। কেননা এখানকার বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির আলহাজ আমির হোসেন ভূইয়া। তিনি এলাকায় চোখে পড়ার মত উন্নয়ন করেছেন। ফলে এর একটি প্রভাব পড়তে পারে নির্বাচনে। জানা যায়, জিয়ারকান্দি গ্রামে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন কবির হোসেন, গোলাম সারোয়ার ও আনোয়ার হোসেন। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে রেখে বাকি দুইজনের একটা সমঝোতার চেষ্টা চলছে। ওই দুই প্রার্থী যদি নির্বাচন থেকে সরে যায় সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ভোটের দিক থেকে অনেক এগিয়ে থাকবেন বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ