Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর দুর্নীতি ও অনিয়মে ৫০ হাজার পরিবার নিঃস্ব

কোম্পানীগঞ্জে ছোট ফেনী নদীর ভাঙন

প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ২৩ মার্চ, ২০১৭

আনোয়ার তোহা, কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) থেকে : বর্ষার পর এবার শুষ্ক মৌসুমে কোম্পানীগঞ্জে ছোট ফেনী নদী ও বামনী নদীর ডানতীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদীর পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। ফলে ছোট ফেনী নদী ও বামনী নদীর তীরবর্তী উপজেলার পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার ২০ কিলোমিটার জুড়ে চরপার্বতী, চরহাজারী, মাসুয়াদনা, জেলে পাড়া, মুুছাপুর, গুচ্ছগ্রাম, চর লেংটা ও চর এলাহীর ৫০ হাজার মানুষ ভাঙনের কবলে পড়েছে। স্রোতের তোড়ে ২০ কিলোমিটার এলাকার ৫০ হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। হারিয়েছে হাজার হাজার একর ফসলী জমি, বাড়ীঘর, দোকানপাট, হাটবাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা, কিল্লা, সাইক্লোন সেন্টার, আবাদি জমি ও রাস্তা। ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ছোট নদী ফেনী ও বামনী নদীর ভাঙন অব্যাহতভাবে চললেও তার রোধের কোন কার্যকর উদ্যোগ নেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে কেউ প্রতিবেশী বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বা রাস্তার পার্শ্বে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেকেই। এই মানবেতর জীবন দেখার কেউ নেই। গুচ্ছগ্রামের জ্যাম মাঝির কাছে নদী ভাঙনের ভয়াবহতা জানতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাপ-দাদার সামান্য কিছু জমি ছিল সেই জমিটিও সর্বনাশা নদী গিলেছে। এখন রাস্তার পার্শ্বে থাকতে হয়। চরফকিরা ইউনিয়য়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটন জানান, এই বছর যদি গুচ্ছগ্রাম ও আশপাশের এলাকা ভাঙনের কাজ না করে তাহলে ইউনিয়নের বেশি ভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হবে। তিনি আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা নদীর খবর নেয়ার জন্য আসেন না।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জহিরুল ইসলাম মাসের ২২ দিন ঢাকাতে অবস্থান করে শুধুমাত্র নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার বা ভাঙনকবলিত এলাকা বিভিন্ন কাজের টেন্ডারের সময় নোয়াখালীতে অফিস করেন এবং তার ব্যক্তিগত অনুসারী ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়। তাদের কাছ থেকে ৪% টাকা নগদ ক্যাশ নিয়ে ঢাকা চলে যায়। তার অনুপস্থিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাঙনকৃত ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন নির্বাহী প্রকৌশলীর কাজে এসে তাকে না পেয়ে চলে যায়। নোয়াখালীর একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী থাকা সত্তে¡ও নির্বাহী প্রকৌশলী তার সহযোগিতা না নিয়ে নিজের মত চলছে। বর্তমান অর্থবছরের কোম্পানীগঞ্জে নদী ভাঙন রোধে কোন কাজকর্ম দেখা যাচ্ছে না। নিবাহী প্রকৌশলীকে তার মুঠো ফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমান অর্থবছরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী নির্বাচনী এলাকা ভাঙন রোধে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কোন বরাদ্দ না থাকায় জনমতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলামের খাম-খেয়ালীপনা, উদাসীনতা ও অযোগ্যতা কোম্পানীগঞ্জের ৫০ হাজার মানুষ আজ সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।



 

Show all comments
  • মুহাম্মদ মুছা ২৩ মার্চ, ২০১৭, ৯:১৬ এএম says : 0
    দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হউক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ