Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভেঙে পড়লে যান চলাচল বন্ধ হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে

মেয়াদোত্তীর্ণ শুভপুর ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১০ এএম, ২৩ মার্চ, ২০১৭

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : প্রয়োজনীয় মেরামত না করায় যে কোনো মুহূর্তে ছাগলনাইয়ার শুভপুর ব্রিজ ভেঙে পড়বে বলে আশংকা করছে সাধারণ মানুষ। এ ব্রিজ ভেঙে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের সব ধরনের যোগাযোগ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়বে ফেনী, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি এলাকার লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। গত ১৯ মার্চ শুভপুর ব্রিজ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ফেনী নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি মূল চারটি পিলারের মধ্যে একটি পিলারের তলার মাটি সরে গেছে। ব্রিজের ওপর দিয়ে যানবাহন যাওয়ার সময় দুলতে থাকে ওই পিলার। যে কোনো মুহূর্তে ব্রিজের পশ্চিম পাশের অংশ নদীতে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ব্রিজের মাঝামাঝি অন্তত ৫০ ফুট ঢালাইয়ের কার্পেটিং ওঠে গেছে। ফুটো হয়ে গেছে কয়েকস্থান। ব্রিজের উত্তর পাশের রেলিংয়ের অন্তত শত ফুট লোহার রেলিং চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। রেলিং বেঁকে গিয়ে কাত হয়ে গেছে আরো অন্তত শতাধিক ফুট। ব্রিজের দু’পাশের রেলিংয়ের অধিকাংশ নাট-বোল্টু খুলে নিয়ে গেছে চোরের দল। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সরু এ ব্রিজটিতে একসঙ্গে যানবাহন আসা-যাওয়া করতে পারে না। একসারিতে চলতে হয় যানবাহন। ব্রিজ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরুজ মিয়া বলেন, চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে এটিই সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ব্রিজ। ফেনী জেলার সড়ক ও জনপথের অন্তর্ভুক্ত এটি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এ ব্রিজ থেকেই শত্রæপক্ষের সঙ্গে এদেশীয়রা মোকাবেলা করেন। পাক হানাদারদের ছোড়া গোলা-বারুদের দাগ এখনোও ব্রিজের গায়ে লেগে আছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এবং ‘কলমিলতা’সহ বহু বাংলা ছায়াছবির শুটিংস্পট হিসেবে শুভপুর ব্রিজ ব্যবহৃত হয়েছে। ব্রিজটি বয়সের ভারে রোগাক্রান্ত হওয়ায় কেউ এর খবর রাখে না। ফেনী সড়ক ও জনপথ অফিস সূত্র জানায়, ১৯৫১ সালে স্থাপিত ১২শ’ ফুট দীর্ঘ সরু ব্রিজটি ইস্পাতের পাতের উপর নির্মাণ করা হয়। ব্রিজের দু’পাশের বালি উত্তোলনের ড্রেজার মেশিনের কারণে পিলারের তলায় মাটি সরে গেছে। ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে ব্রিজ। দফায় দফায় মেরামত করার পর ব্রিজটি এখন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। এজন্য নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার জানিয়েছি ব্রিজটি মেরামতের জন্য। ব্রিজের এখন যে অবস্থা যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে নদীতে পড়বে। কিন্তু কেউ উদ্যোগ নিচ্ছেন না। ফেনী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ করিম বলেন, আমরা ইতোমধ্যে এই ব্রিজ এলাকার সয়েল টেস্ট করে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এ ব্রিজের মেরামত করার সুযোগ নেই। তবুও আমরা এটিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে পার্শ্বে আর একটি ব্রিজের উদ্যোগ নিতে চাচ্ছি। এই ব্রিজটি নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার নিজের মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতিও রয়েছে এই ব্রিজে আমি চেষ্টা করছি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত শুভপুর ব্রিজটি পুনঃনির্মাণ নয়তো সংরক্ষণ করে বিকল্প সেতু নির্মাণ করার কথা ভাবছি। আমি মন্ত্রণালয়কে এর প্রস্তাবনাও দিয়েছি। আশা করছি আমরা শিগগিরই এর কাজ শুরু করতে পারব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ