Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দশ কোটি টাকার কাজ ভাগভাটোয়ার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা : বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার যখন জনপ্রিয়তা অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তখন পঞ্চগড়ে কতিপয় সরকার দলীয় লোকজন জেলায় বিভিন্ন দপ্তরে টেন্ডারে নেগোসিয়েট করার কাজে ব্যস্ত। ই-টেন্ডার হোক আর ওপেন টেন্ডার হোক তাদের কাছে কোন ছাড় নেই। ছলে-বলে কৌশলে তাদের টাকা চাই। এমন অবস্থা চলতে থাকায় দলের ভাবমূর্তিসহ স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মীর সক্রিয়তা ও স্বত্বা নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। জনমনে বাড়ছে ক্ষোভ আর হতাশা। সরকার টেন্ডারকে ইজিপিতে নিলেও পঞ্চগড়ে যে কাজ পায় তাকে এসব কতিপয় দলীয় ব্যক্তিদের কমিশন দিতে হয়। কম অথবা বেশি। সব মিলিয়ে দলের ঐতিহ্য যেন ¤øান করে দিতে ব্যস্ত তারা। টাকা নিয়ে ভাগবাটোয়ারা কাজ নিয়ে বিভিন্ন নামে কাজ দখলে রাখাই এখন তাদের মূল রাজনীতি। এনিয়ে দলের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দের কমতি নেই। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে দলীয় কোন্দল ও দলীয় মুখ বদল করার দাবি। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে দলের অফিস চত্বরে দেখা যায় নানা ভাষায় ব্যানার লিখন। সম্প্রতি পঞ্চগড় গণপূর্ত বিভাগে ১০ কেটি টেন্ডারে নেগোসিয়েট করা হয়। গণপূর্ত বিভাগে এসব ওপেন টেন্ডারের সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন দাঁপিয়ে দাঁপিয়ে বেড়াতে থাকে ওই দলীয় চিহ্নিত নেতা-কর্র্মীরা। টেন্ডার হয় পঞ্চগড় এনএস আই ভবনের দু‘দুবার। দুই কোটি টাকার উপরে এই ভবনের কাজটি তদবিরে তদবিরে ঝুলছিল ঢাকা অফিসে। জানা যায়, অবশেষে দ্বিতীয় দফা টেন্ডারেই কাজটি দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদরকে। এরপর প্রায় ৩ কোটি টাকার উপরে টেন্ডার ছিলো তেতুঁলিয়া উপজেলার পুলিশ ম্যাসের। আরো ছিলো জেলায় নতুন ৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের টেন্ডার। যার প্রতিটির দর ৪৭ লাখ টাকা। সূত্র মতে, ইতিমধ্যে সব কাজের টেন্ডারের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। কার্যাদেশ পাওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত ছিলো এসব দলীয় লোকের দৌড়ঝাঁপ। অবশেষে ২/৩ দিন আগে নির্দিষ্ট কমিশনের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়া হয়। এনিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে, পঞ্চগড়-১ ও ২ সংসদীয় আসনের গ্রæপিং। এছাড়া রয়েছে, শাখা-প্রশাখা গ্রæপিং। তাদের অভ্যন্তরীণ লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে চরম কোন্দল। জানা যায়, পঞ্চগড় শহরের নদীর এপার-ওপার নিয়ে দলীয় বিভাজন রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কাউকে মানতে চায় না। পঞ্চগড়ের দলীয় কোন্দলে অনেকের মধ্যে চলছে, চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা। কোন রকম দলীয় প্রেক্ষাপট বদলে গেলে তাদরে নিজেদের মধ্যে ঘটে যেতে পারে রক্তক্ষরণ। বর্তমানে দলীয় পদ-পদবী ও ক্ষমতার দাপট এবং টাকার প্রভাবের কারণে বিষয়টি নীরবে চাপা পড়ে আছে। তবে বাড়ছে ক্ষোভ ও উত্তেজনা। এদিকে পঞ্চগড় গণপূর্ত বিভাগে দিনের পর দিন টেন্ডার ছাড়া চুপিসারে কাজ ভাগবাটোয়া করে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উচ্চ পর্যায়ে তার সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করলে সহজে বের হয়ে আসবে দুর্নীতির সব বড় বড় চিত্র। অপরদিকে কাজ নেয়ার ক্ষেত্রে লাইসেন্সের যোগ্যতা যাচাই ছাড়াও কাজ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেমন, ইউনিয়ন অফিসসহ জেলার অভ্যন্তরে চলমান লাখ লাখ টাকার কাজ। সম্প্রতি এখানে বাইরের ঠিকাদার লাইসেন্স-এর যোগ্যতায় কাজ পেলে তাদের দলীয় প্রভাবে কাজ দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীদের সাথে কথা বললে, তারা কোন কিছুকে আমলে নিতে চান না। সূত্র জানায়, চীফ জুডিশিয়াল আদালত, টিটিসি, পুলিশ ফাঁড়ি সম্প্রসারনসহ জেলার অফিস পাড়ায় অনেক কাজ এরই মধ্যে নামে বেনামে টেন্ডার না করে কাজ সম্পন্ন করা হয়ে গেছে। বিষয়টি তদন্ত জরুরি মনে করছেন এলাকাবাসী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ