বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেছেন, বর্তমান বাংলাদেশে চলছে বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত ফ্যাসিবাদী শাসন। কুকুর-ছাগলের একটা ভাষা আছে। তারা তাদের ভাষায় কথা বলতে পারে। কিন্তু বাংলার মানুষ আজ তাদের ভাষায় কথা বলতে পারে না। পাঁচজন মানুষ একসঙ্গে হলেই গোয়েন্দা সংস্থার টিকটিকিরা খবর পৌঁছে দেয় এবং গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের লোক এসে গ্রেফতার করে। দেশে এক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে।
গতকাল শনিবার পুরানা পল্টনে মুক্তিযোদ্ধা দল কার্যালয়ে লিডারশিপ ট্রেনিং প্রজেক্টের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত লিডারশিপ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। তার রাজনৈতিক জীবনের ৩২ বছরে তিনি যখন যে কয়টি আসন থেকে নির্বাচন করেছেন সেই কয়টি আসনেই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকি বর্তমানেও তিনি যদি দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ১০টি আসনেও নির্বাচন করেন তিনিই হবেন বাংলার একমাত্র নেত্রী যিনি ১০ আসন থেকেই নির্বাচিত হবেন। কারণ তিনি মানুষের মূল্যবোধকে সম্মান করে রাজনীতি করতে জানেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে সংসদীয় রাজনীতি শেখ মুজিবের হাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জনমানুষের দাবির প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়ার হাত ধরেই আবার সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সংসদীয় গণতন্ত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কারণেই আজ বিতর্কিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত।
বিএনপির একজন নেতাকেও শেখ হাসিনা বেঈমান বানাতে পারেনি মন্তব্য করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য নেতৃত্বের জন্যই বিগত ৯ বছরে একজন বিএনপি নেতাকেও শেখ হাসিনা বেঈমান বানাতে পারেনি। তারেক রহমানই আমাদের যোগ্য নেতা। তিনি জানেন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোন গ্রামে কয়টি পুকুর আছে এবং কাকে দিয়ে কী কাজ হবে। তিনি আপামর জনতার কাছে একজন জনপ্রিয় নেতা এবং আগামীদিনের কান্ডারী। সজীব ওয়াজেদ জয় সেই গ্রহণযোগ্যতা কোনো দিনও তৈরি করতে পারেননি এবং পারবেনও না।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ৬২টি মামলা। মাসের ১৫ দিন কোর্টে হাজিরা দিতে হয়। মামলার জন্য লাইফ স্টাইলই বদল হয়ে গেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। জালেম শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই হচ্ছে উত্তম জেহাদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ আদর্শ। এই আদর্শের জন্যই বাংলার মানুষ বিএনপিকে ভালোবাসে এবং নির্ভর করে। এই আদর্শের সরকার প্রতিষ্ঠা পেলেই জনগণের বাকস্বাধীনতা থেকে শুরু করে সব স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রধান বক্তা হিসেবে দলেল যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শেখ মুজিব প্রথম বাংলায় বক্তব্য রাখেন। দ্বিতীয় বক্তব্য রাখার কথা বলা হয় শেখ হাসিনাকে। আসলে এই বক্তব্য সঠিক নয়। দ্বিতীয় বক্তব্য রাখেন ১৯৯৪ সালে বেগম খালেদা জিয়া। আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা আসলে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। তারা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে। শেখ মুজিব গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হলেও তিনি বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেন। হিটলার, লেন্দুক দর্জির মতো এভাবে পৃথিবীতে অনেক লোকই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত। কিন্তু স্বৈরাচারী আচরণের জন্য তারা আর জনমানুষের নেতা থাকেননি। স্বৈরশাসক হিসেবে তাদের পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ।
প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত লিডারশিপ কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী আবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা কুতুবউদ্দিন, প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান নান্নু, যুবদল নেতা ফিরোজ আবদুল্লাহ, শফিকুল ইসলাম সেলিম, খন্দকার জালাল রিমু প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।