Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক মূলধন হিসেবে ব্যবহার করছে : আমির খসরু

| প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জঙ্গিবাদ দমনে সরকার আন্তরিক নন- রিজভী
স্টাফ রিপোর্টার : সরকার জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক মূলধন হিসেবে ব্যবহার করছে এবং চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি। গতকাল শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায়  স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। অনির্বাচিত একটি সংসদ। তাদের সেই জায়গাটাতে থাকার জন্য অনেকগুলো গণবিরোধী কাজ করতে হচ্ছে। তাদেরকে সংবিধানবিরোধী কাজ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে আপনারা দেখছেন, সেই ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অনেকগুলো কাজের মধ্যে একটা হচ্ছে, জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকা। এই কাজটিই তারা করছে।
জঙ্গিবাদ দমনে খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাক সরকারের নাকচের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই জঙ্গিবাদকে ঠেকাতে হলে বেগম খালেদা জিয়া খোলাখুলিভাবে যে প্রস্তাব দিয়েছিল আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য চাই, জাতীয় আলোচনা চাই। কিন্তু সরকার সেই জাতীয় ঐক্যের আলোচনা বা প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
তার কারণ হচ্ছে, জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করে তারা (সরকার) রাজনৈতিক ফয়দা উসুল করছে, জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক মূলধন হিসেবে ব্যবহার করছে। সে কারণে জঙ্গিবাদের আশঙ্কার গুরুত্ব তারা হারিয়ে ফেলেছে, বিশ্বাস ও আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সামাজ কল্যাণ দলের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
আমীর খসরু চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, যখন কোনো একটা বিশেষ দেশের জনগণের ইস্যু চলে আসে, সরকারকে জবাবদিহি হতে হয়, তখন আবার জঙ্গিবাদ সামনে চলে আসে। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাবেন, তখন আমরা জঙ্গিবাদের কথা শুনছি নতুন করে। এই কয়েক দিন ধরে আপনারা শুনবেন, জঙ্গিবাদের কয়েকটি ঘটনাবলি ঘটছে। এসব ঘটনাবলির প্রতি জাতির কোনো বিশ্বাস নেই। তাই সরকারকে বলব, জঙ্গিবাদ কঠিন বিষয়, এটা নিয়ে হেলাফেলা করবেন না, এটাকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ব্যাপার আছে।
আমির খসরু বলেন, বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ হচ্ছে, এটাকে মোকাবিলা করছে, বাইরের সরকারগুলোকে বিশ্বাসযোগ্যতায় আনার জন্য আবার সরকার জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে। আমার অনুরোধ, জঙ্গিবাদ দেশের শত্রæ, জনগণের শত্রæ, দেশে আগামীদিনে উন্নয়নের শত্রæ, এটাকে মূলধন করে, রাজনৈতিকভাব ব্যবহার করে, বিরোধী দলকে দমন করার জন্য দয়া করে ব্যবহার করবেন না। বিদেশি শক্তির কাছে নিজেদের সম্পৃক্ত করার জন্য, অবৈধ সরকারের অবৈধতা আনার জন্য, জঙ্গিবাদকের বিদেশি শক্তির কাছে দয়া করে ব্যবহার করবেন না।
নিবন্ধন বাতিল নিয়ে বিএনপি ভয় পায় না উল্লেখ করে আগামীতে সবার অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবির কথাও তুলে ধরেন এই নেতা।
সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রাশেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, তথ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জঙ্গিবাদ দমনে সরকার আন্তরিক নন Ñরিজভী
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুহুল রিজভী বলেন, সরকার একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন, তারা দেশে দানবীয় শক্তির উত্থানে আন্তরিক নন। এই দানবীয় শক্তির উত্থান যারা মানুষকে মারছে, ধর্মগুরুকে মারছে, বাংলাদেশের হাজার বছরের সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির ঐতিহ্যকে উগ্রবাদী একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী, যাদের নির্মূল করার ক্ষমতা নেই, যারা করছে না।
আমরা মনে করছি, সরকার এটিকে জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছেন, টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন এবং বিরোধী দলের ওপর চাপানোর  যে হীন সে চক্রান্ত তারা করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যে সময়ে আমরা দেখছি, ভারত বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার চাপ দিচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ করে বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে, এটা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমি আবারো বলছি, সরকার এ বিষয়টি নিয়ে আন্তরিক নন। কারা জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছেন, কারা এটার জন্য দায়ী তা চিহ্নিত করে নির্মূল করার ক্ষেত্রে সরকার আন্তরিক নয়। তারা এ ব্যাপারটি জিইয়ে রাখতে চান এ জন্য এসব কিছু জিইয়ে রেখে ধোঁয়াশে সৃষ্টি করে অবৈধভাবে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে চান।
সদ্য সমাপ্ত ঢাকায় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বিষয় পুলিশ সম্মেলনে জঙ্গি উত্থান ও গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর ঘটনার বিষয়ে শ্রীলঙ্কার বিশেজ্ঞ রোহান গুনারতেœর পযবেক্ষণের সাথে পুলিশের আইপিজি কে এম শহীদুল হকের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের সমালোচনাও করেন রিজভী আহম্মেদ।



 

Show all comments
  • ১৯ মার্চ, ২০১৭, ১০:৩২ পিএম says : 0
    ঠিক বলেছেন
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২০ মার্চ, ২০১৭, ৮:১২ এএম says : 0
    বিএনপি যদি আগের অবস্থানে মানে স্বাধীনতার বিপক্ষের দলের সহায়ক দল হিসাবে প্রমানিত হবার আগে মানে দেশদ্রোহী হিসাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের ফাশী হবার আগে এধরনের মিথ্যার মালা সাজিয়ে বক্তব্য দিলে এটা আওয়ামী লীগ বিরুধিদের কাছে সমাদৃত হত। কিন্তু আজ বিএনপির এমনই দশা হয়েছে যারা আওয়ামী লীগকে ঘৃনা করে তারাও বিএনপির পাঁশে দাঁড়াতে ভয়ে শিহরিয়ে উঠে। আজ বিএনপির মাঠে কোন মূল্য নেই তারপরও তাদেরকে বলা হয় দেশের বড় একটি দল। এটাও সত্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া দেশে কোন রাজনৈতিক বড় দল নেই কাজেই যারা (ইসলামি মতাবলম্বী পাকিস্তান থেকে) কোনক্রমেই মরে গেলেও আওয়ামী লীগের হবে না এরাই ছিল বিএনপির শক্তি কিন্তু যেহেতু এখন তারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী এবং বাঙ্গালী তাই তারা তাদের প্রিয় দল বিএনপির পাঁশে দাঁড়াতে পারছেনা এটাও সত্য। আজকের বিএনপি এই যুক্তি সঙ্গত এই জোড়াল বক্তব্যও কোন কাজে লাগবেনা এটাও সত্য। তাই আমি আবারও বিএনপির অলেখিত প্রধান যিনি আবার আদাত থেকে সাজাপ্রাপ্ত নেতা (জিয়ার পুত্র) তাকে বলতে চাইঃ তিনি যদি দেশের স্বার্থে তার পরিধানের জামা বদল করে দলকে উপযুক্ত লোকের হাতে সামলাতে দেন তবে দল হয়ত এ যাত্রা বেঁচে যেতেও পারে। নয়ত বিএনপির চারিদিকে যে, শুধুই অন্ধকার আর অন্ধকারে ছেয়ে গেছে এটা পরিষ্কার হবার কোন রকম আলামতই দেখা যাচ্ছেনা। আল্লাহ্‌ দেশের মঙ্গলের জন্য অবশ্যই দেশে অন্তত দুইটা শক্তিশালী দেশ দরদী দল টিকিয়ে রখবেন এটাই আমার কামনা। আল্লাহ্‌ আমাদের দেশের সহায়ক হউন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমির খসরু

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ