রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে : মাগুরার শালিখা উপজেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ঘেঁষে রাঘব দাইড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ২২ বছর যাবৎ শিক্ষার মান উন্নয়নে ব্যাপক ভ‚মিকা রেখে চলেছে। গ্রাম-বাংলার এক অবহেলিত পল্লীর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অবকাঠামোগতভাবে চোখে পড়ার মতো না হলেও দারিদ্র্যপীড়িত বঞ্চিত পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষামুখী করতে এলাকার এই প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ ভ‚মিকা রেখে যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি শিক্ষার আলো বিস্তারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। স্বপ্ন বাস্তবায়নে এলাকার অবহেলিত পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষামুখী করার পরিকল্পনা নেন তাঁরা। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও এলাকার আরো কিছু যুবক-যুবতীদের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এখানে শতকরা প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী অতিদরিদ্র পরিবারের বলে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানের নিজ অর্থায়নে গড়ে তোলেন দুটি টিনশেড। বর্তমানে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। প্রধান শিক্ষক এসকেএম জহির উদ্দীনসহ প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ ও ম্যানেজিং কমিটির একান্ত প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি ২০০২ সালে জুনিয়র এমপিও ও ২০০৪ সালে সিনিয়র এমপিও লাভ করে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও এসএসসি শাখারও অনুমতি লাভ করে। প্রতি বছর বিদ্যালয়টি থেকে অনেক শিক্ষার্থী এসএসসি পেরিয়ে কলেজ জীবনে প্রবেশ করছে। বিগত ২০ বছরে জেএসসিতে শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ ও এসএসসির ফলাফলও খুবই সন্তোষজনক। অন্যান্য বিদ্যালয় থেকে অনেকটা স্বতন্ত্রভাবে এখানে শিক্ষাদান করা হয়ে থাকে। নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমও চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকগণ বিশেষভাবে ভ‚মিকা রাখেন। শালিখা উপজেলা থেকে ১৫ কি.মি. ও মাগুরা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিদ্যালয়টি মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে প্রায় ১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংখ্যা ১৬, কর্মচারী সংখ্যা ৩ জন রয়েছে। কিন্তু শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর জন্য দুঃখের বিষয় এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার ভবন নির্মাণ হয়নি। এমনকি ২০০৯ সালে মাগুরাÑ১ আসনের সাবেক এমপি মরহুম প্রফেসর ডা. এসএম আকবর, ২০১১ সালে সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসের বাবলু, ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সহকারী সচিব অ্যাড. সাইফুজ্জামান শিখর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পংকজ কুমার কুÐু এবং ২০০১৭ সালে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রোস্তম আলী বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানে এসে সভা- সমাবেশে প্রতিশ্রæতি দেন বিদ্যালয়টিতে সরকারিভাবে একটি নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আজো কোনো প্রকার ভবন নির্মাণ হয়নি বলে এলাকাবাসীরা জানান। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক এসকেএম জহির উদ্দীন বলেনÑ বিদ্যালয়টিতে সরকারিভাবে ভবনের জন্য বার বার চেষ্টা করেও কোনো ফল হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে দুইটি ঘর নির্মাণ করে নানান সমস্যার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। শ্রেণীকক্ষ কম থাকায় অনেক সময় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের খেলার মাঠেও ক্লাস নিতে হচ্ছে। ১০ম শ্রেণির মারুফা খাতুন, রুমিনা খাতুন, সৌমিক বিশ্বাস, ৯ম শ্রেণীর আফরোজা খাতুন, ফারিয়া সুলতানাসহ অনেক শিক্ষার্থী জানান, স্কুলে প্রয়োজনীয় ক্লাস রুম না থাকা এবং সরকারিভাবে ভবন নির্মাণ না করায় তাদের অনেকেই অবহেলার চোখে দেখে। তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে অনেকটা বঞ্চিত রয়েছি বলেও জানায়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ না থাকায় কখনো একই কক্ষে, কখনো বা বিদ্যালয়ের মাঠে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। ঘরগুলো টিনের ছাউনী হওয়ায় শীতের সময় যেমন প্রচুর ঠাÐা তেমনই গরমেও অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এসব সমস্যার সমাধানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি মাগুরার সদর উপজেলার মধ্যে হলেও শালিখা উপজেলার দিঘোলগ্রাম, সর্বসাংধা, গজদূর্বাসহ প্রায় ১১টি ও সদর উপজেলার প্রায় ৭টি গ্রামের ছেলেমেয়েরা এখানে লেখাপড়া করে আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।