Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জেগে ওঠা বালুচরে কিশোরদের দুরন্তপনা

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : শুষ্ক মৌসুমে যমুনায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীবক্ষে বালি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদ-নদীর পানি প্রবাহ না থাকায় ভ‚গর্ভস্ত পানির স্তরও আশঙ্কাজনক হারে নেমে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে এলাকায় ভ‚গর্ভস্ত পানির স্তর ২০-২৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের গ্রামাঞ্চলে কুয়া ও নলক‚প থেকে পানি খবুই কম উঠছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর শুষ্ক মৌসুমে ভ‚গর্ভস্ত পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নামছে। পানি প্রবাহ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে সবগুলো নৌরুট। নদীবক্ষে এখন ডিঙ্গি নৌকাও চলে না। বন্ধ হয়ে গেছে কয়েকটি নদী বন্দর। সেচ দেয়ার মতো পানিও এখন নদীতে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বেকার হয়ে পড়ছে কয়েক হাজার মাঝি-মাল্লা। যমুনা বক্ষজুড়ে ধু-ধু বালির চর। নদীর পানি প্রবাহ সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে গেছে। পরিবেশ বিপর্যায়ের মুখে। যমুনার অর্ধশতাধিক দুর্গম চর এখন একটি বিচ্ছিন্ন চর দ্বীপ। নৌ চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ চরবন্দি। নদীপথে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরের মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের ফসল। বালির আস্তরণে ঢাকা পড়েছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। সেখানে একদিন চাষ হয়েছে নানা জাতের সবজি, ভুট্টা, মরিচ, বাদাম, কাউন। বিশাল চরজুড়ে ছিল কাশবন। চরের বিশাল বিস্তৃত কাশবন ছিল গো-চারণ ভ‚মি। বালির আস্তরণে ঢাকা পড়েছে কাশবন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে যমুনা নদীবক্ষে তিন’শ কোটি টন পলি জমা হয়ে থাকে। এবারের বর্ষা মৌসুমে যমুনাবক্ষে দ্বিগুণ পরিমাণ পলি জমে নদীর চেহারাই বদলে দিয়েছে। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস জানান, এ দশ ইউনিয়নে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার হেক্টর ও তারও বেশি। বন্যার পর বালির আস্তরণে ঢাকা পড়েছে ৯ হাজার হেক্টর আবাদি জমি। বালির আস্তরণ পড়েছে ৮ ফুট থেকে ৯ ফুট। যেখানে আর ফসল চাষ সম্ভব নয়। কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, মনসুরনগর, মাইজবাড়ী ও শুভগাছা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মরিচের খ্যাতি ছিল সর্বত্র। গতবছর এসব চরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছিল। এ বছর মরিচ চাষ হয়েছে মাত্র তিন হাজার হেক্টর জমিতে। বালির আস্তরণে ঢেকে থাকা জমিতে মরিচ চাষ করতে পারেনি অনেক কৃষক। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীগণ জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুমে যেখানে যমুনা উত্তাল হয়ে ওঠে। নদীর দুর্বার ভাঙনে গ্রাম জনপথ গ্রাস করে। শুষ্ক মৌসুমে নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ