রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোশাররফ হোসেন, নীলফামারী থেকে : আগাছানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে অন্তত ২০ একর জমির বোরো চারা নষ্ট হওয়ার অভিযোগ করেছেন নীলফামারীর সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের কালার বাজার এলাকার কৃষকরা। চারা রোপণের কয়েক দিনের মাথায় এসএএম এগ্রো কেমিক্যাল নামক একটি কোম্পানির জিলাস আগাছানাশক ব্যবহার করে চারার বৃদ্ধি বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি পচে গেছে চারার গোড়াও। জমি তৈরি, বীজ, সার, কীটনাশকসহ বিঘাপ্রতি জমিতে প্রায় চার হাজার টাকা খরচ করেও বোরো চারা নষ্ট হওয়ায় হতাশায় এসব কৃষক। নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের কালার বাজার এলাকার টেউরি খাওয়ার দোলা। এই দোলায় ধানের ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি বছরের মতো এবারো বোরো ধান রোপণ করেছিলেন রহিমউদ্দিন, নজরুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, মোজাফ্ফর, আলম উদ্দিন সরকারসহ অনেক কৃষক। চারা রোপণের পর নিয়মিত ক্ষেতের পরিচর্যা করে আসছেন কৃষকরা। চারা রোপণের সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আগাছা নিধনের জন্য জিলাস ব্যবহার করেন তারা। আর এই আগাছানাশক ব্যবহারের পর থেকেই ঘটেছে বিপত্তি। চড়াইখোলা ইউনিয়নের কালার বাজার এলাকার কৃষক রহিমউদ্দিন বলেন, জমি তৈরি, বীজ, সার, পানিসহ অনেক টাকা খরচ করে আমরা চারা রোপণ করেছি। চারা রোপণের কয়েক দিন পর জিলাস দেয়ার কারণে আমার পুরো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। একই এলাকার কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এবার দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। চারা রোপণের এক সপ্তাহ পর জিলাস দিয়েছিলাম। জিলাস দেয়ার পর গাছ আড় বাড়ছে না। চারা গাছগুলো লাল হয়ে গেছে। এমনকি চারার গোড়াতেও পচন ধরেছে। রোপা এসব বোরো চারা গলার কাটা হয়েছে কৃষকদের। তাই বাধ্য হয়ে গোড়া পচা এসব ধান চারা তুলে ফেলছেন অনেক কৃষক। আর অভিযুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এসব কৃষকদের। কালার বাজার গ্রামের কৃষক মোজাফ্ফর বলেন, আমি আট বিঘা জমিতে বোরো চারা লাগিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমার ৩০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আগাছানাশক জিলাস দিয়ে আমার সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। আমি এখন কি করব। বাধ্য হয়ে আমি চারা তুলে ফেলতেছি। কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, এবার তিনি সাড়ে আট বিঘা জমিতে বোরো চারা লাগিয়েছেন। আগাছানাশক জিলাস ব্যবহার করে তার অর্ধেকের বেশি জমির চারা পচে গেছে। তাই তিনিও নজরুলের মতো পচা চারাগুলো তুলে ফেলছেন। একই এলাকার কৃষক আলম উদ্দিন সরকার বলেন, আমিসহ যারাই এই ঔষধ দিয়েছে তাদের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমাদের কি হবে। তাই আমি চাই এই কোম্পানির বিরুদ্ধে যাতে সরকার ব্যবস্থা নেয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, তারা সবাই স্থানীয় কালার বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুর কাছ থেকে এই আগাছানাশক কিনে প্রতারিত হয়েছেন। এ বিষয়ে ঐ ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তিনি কৃষকদের কাছে আগাছানাশক জিলাস বিক্রির কথা অকপটে স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি জানতামনা যে, এই ঔষধের মান এত খারাপ। তিনি আরো বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমি এই ঔষধ বিক্রি বন্ধ রেখেছি। এমনকি বিষয়টি জানানোর জন্য ঐ কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে বারবার যোগাযোগ করে জানালে তিনি আর এলাকায় আসেননি। তবে এ বিষয়ে নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএম ইদ্রিস বলেন, ভেজাল ঔষধ বা অতি মাত্রায় বালাইনাশক প্রয়োগ যে কোনো কারণেই এমনটি হতে পারে। আমরা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছি। যদি ভেজাল আগাছানাশক প্রয়োগের ফলে এমনটি হয়ে থাকে তাহলে ঐ কোম্পানির বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।